দেহঘড়ি

বেঁকে যাওয়া ক্যানের খাবার যে কারণে বিপজ্জনক

এস এম গল্প ইকবাল : কোনোকিছুর চাপ পড়ে বেঁকে যাওয়া ক্যানকে ইংরেজিতে বলে ডেন্টেড ক্যান। গবেষণায় পাওয়া গেছে, ডেন্টেড ক্যানের খাবার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু কিভাবে? আপনি মনে করতে পারেন যে খাবার থেকে কিভাবে অসুস্থতা ছড়ায় তা আপনার সম্পূর্ণরূপে জানা আছে। আপনি এটাও জানেন যে মাটি বা মেঝেতে পড়ে যাওয়া খাবার পুনরায় গরম না করে খেলে শরীরের মধ্যে জীবাণু প্রবেশ করে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু আপনার হয়তো এটা জানা নেই যে, ডেন্টেড ক্যানের খাবারও আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। ডেন্টেড ক্যানের খাবার শরীরকে ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকিতে রাখে। যখন খাবারকে ক্যানে আবদ্ধ করা হয়, তখন বিপজ্জনক ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক ধ্বংস করতে এবং সময় পরিক্রমায় খাবারের পুষ্টি ভেঙে ফেলতে পারে এমন এনজাইমকে নিষ্ক্রিয় করতে তাপ প্রয়োগ করা হয়, ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির উপাত্ত অনুসারে। এভাবে ক্যানে আবদ্ধ খাবার নষ্ট হওয়া কিংবা ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত হওয়া থেকে রক্ষা পায়। অনেক সময় দেখা যায় যে, ডেন্টেড ক্যানের খাবারে মূল্যছাড় দেওয়া হচ্ছে। আপনি কি এ ধরনের লোভনীয় প্রস্তাবকে এড়িয়ে যাবেন? এটা আসলে নির্ভর করছে ক্যানের বেঁকে যাওয়ার মাত্রার ওপর, বলেন কুলিনারি ইনস্টিটিউট অব আমেরিকার পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সুকি হার্টজ। সামান্য বক্রতা ক্যানের ধাতবের সিমের ওপর না হলে ঠিক আছে, কিন্তু সিমের ওপর কোনো বক্রতা হলে তা বর্জন করাই ভালো। হার্টজ বলেন, ‘ক্যানের অন্য কোথাও ছোটখাট বক্রতা ভেতরের খাবারকে প্রভাবিত করে না। আমি আপনাকে আতঙ্কিত করছি না, আমার প্রচেষ্টা হলো সত্যটা জানানো। সিমের ওপর কোনো বক্রতা থাকলে ক্যানটির অ্যানারোবিক কন্ডিশন ভেঙে পড়ে। এর ফলে ভেতরে প্যাথোজেন প্রবেশ করে। এটি খাদ্যবাহিত অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে।’ সিমের ওপর বক্রতা ক্যানের ধাতবকে ভেঙে ফেলে এবং ভেতরের খাবারে বাইরের প্যাথোজেনের বিস্তার ঘটায়, কিন্তু গভীর বক্রতা আরো বেশি উদ্বেগের। ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অব অ্যাগ্রিকালচার (ইউএসডিএ) সেসব বক্রতাকে গভীর বক্রতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে, যেখানে আঙুল প্রবেশ করানো যায়। প্রায়ক্ষেত্রে এসব বক্রতার তীক্ষ্ণ পয়েন্ট থাকে। ইউএসডিএ’র ওয়েবসাইটে উল্লেখ আছে, বিরল হলেও ডেন্টেড ক্যান বটুলিজম সৃষ্টি করতে পারে, এটি হলো ফুড পয়জনিংয়ের একটি মারাত্মক ধরন যা স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। বটুলিজমের উপসর্গের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ডাবল ভিশন বা একটি বস্তুকে দুটি দেখা, চোখের পাতা নেতিয়ে পড়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়া, গিলতে অসুবিধা ও শ্বাসকার্যে সমস্যা। ফুলে গেছে ও লিক করছে এমন ক্যানের খাবার থেকেও দূরে থাকুন, কারণ এসব খাবারও দূষিত হতে পারে। বটুলিজম বিরল হলেও কিছু খাবার শিল্প এ বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখে- তারা বাজারে চালানের পূর্বে ক্যানগুলোকে ভালোভাবে তদন্ত করে। ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে খাবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ডেন্টেড ক্যান বর্জনের পরামর্শ দিচ্ছে। তাই এখন থেকে খাবার কিনতে গেলে ক্যান চেক করে নেওয়ার কথা ভুলবেন না। তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট  

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ এপ্রিল ২০১৯/ফিরোজ