দেহঘড়ি

জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

কপালে হাত দিয়ে শরীর পুড়ে যাচ্ছে মনে হলে জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খেতে পারেন। কিন্তু জ্বর ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বা এর নিচে হলে এখনই ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই এবং এটা নিয়ে ভয় পাওয়ারও কিছু নেই। এর পরিবর্তে শরীরের তাপমাত্রা কমাতে কিছু ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করতে পারেন।

* কুসুম গরম পানিতে গোসল করুন। কুসুম গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা কমে যাবে। কিন্তু ঠান্ডা পানিতে গোসল করে শরীরকে শীতল করার চেষ্টা করবেন না। কারণ জ্বর নিয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গে রক্ত ছুটে যাবে ও মূল তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। অন্যদিকে ত্বক শীতল হয়ে পড়বে ও কাঁপুনি শুরু হবে।

* স্পঞ্জ বাথও নিতে পারেন। বগল ও কুঁচকির মতো উচ্চ তাপমাত্রার অংশে ঠান্ডা পানিতে ভেজা স্পঞ্জ বা নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিলে জ্বর কমে আসবে।

* গোসল করতে না চাইলে কপাল ও ঘাড়ের ওপর ঠান্ডা পানিতে ভেজা নরম কাপড় রাখলেও জ্বর কমবে।

* শরীরকে শীতল করার একটি প্রক্রিয়া হচ্ছে ঘাম নিঃসরণ। তাই শরীর থেকে ঘাম ঝরিয়ে জ্বর কমানোর প্রত্যাশা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ঘাম নিঃসরণকে উদ্দীপ্ত করতে আদা চা পান করতে পারেন। এক মগ পানিতে আধ চা চামচ আদা কুচি ঢেলে ফুটিয়ে নিন। এরপর এই পানীয়কে ছেঁকে কুসুম গরম অবস্থায় পান করুন।

* জ্বর আসলে খাবারে বেশি করে ঝাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করুন। ঝাল মরিচের একটি প্রধান উপাদান হলো ক্যাপসাইসিন।এটি শরীর থেকে ঘাম ঝরিয়ে জ্বর কমাতে পারে।

* জ্বরের একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া টোটকা হলো ওয়েট-শক ট্রিটমেন্ট। বিছানায় যাওয়ার পূর্বে প্রথমে গরম পানিতে পা ভিজিয়ে নিন। তারপর এক জোড়া কটনের মোজাকে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে পরে নিন। এর ওপর পশমের একজোড়া শুকনো মোজা পরুন। এই প্রক্রিয়াতে পায়ের দিকে রক্ত ছুটে আসবে ও জ্বর কমবে।

* পায়ের দিকে রক্ত টেনে আনার আরেকটি উপায় হচ্ছে মাস্টার্ড ফুটবাথ। চার মগ কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ সরিষা গুঁড়া মিশিয়ে পা দুটিকে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এতেও জ্বর কমে আসে।

* একটি প্রাচীন জ্বরের টোটকা হচ্ছে চাদরকে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে শরীরে মুড়ে নেয়া। কিন্তু আজকের চিকিৎসকেরা শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমানোর বিপক্ষ বলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। চাদরটি শরীরে মুড়িয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে খুলে ফেলুন।

* জ্বরে শরীর সহজেই পানিশূন্য হতে পারে। তাই প্রতিদিন ৮-১২ গ্লাস পানি পান করুন।

* জ্বরে কমলার রস ও অন্যান্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের রস খেলে উপকার পাওয়া যায়। ভিটামিন সি ইমিউন সিস্টেমকে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে।