দেহঘড়ি

গর্ভাবস্থায় করোনা আক্রান্ত হলে করণীয় 

গর্ভাবস্থায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে নানা ধরনের তথ্য শোনা যায়, যার বেশিরভাগই অতিরঞ্জিত এবং বিজ্ঞানসম্মত নয়। গর্ভাবস্থায় করোনা পজিটিভ হলে আপনার যা জানা প্রয়োজন এবং আপনি যা করতে পারেন, তা এখানে তুলে ধরা হলো।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত গর্ভবতী নারী এবং নবজাতকের জটিলতার ঝুঁকি বেশি। যদিও এটি সব গর্ভবতী নারীর বেলায় প্রযোজ্য নয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাটি ছোট পরিসরে করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন গবেষকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বড় কোনো জটিলতা দেখা না দিলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হালকা সংক্রমণে উপযুক্ত ডায়েট, বিশ্রাম এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে খুব সহজেই বাড়িতে থেকেই করোনা নিরাময় করা যায়। তবে গর্ভবতী নারীদের এ সময় হাসপাতালে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় গর্ভবতী নারীদের আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কম ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যারা ইতোমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি একাধিক রোগে ভুগছেন, তাদের ঝুঁকি বেশি। তবে সুসংবাদ হলো কোভিডের কারণে কোনো জন্মগত জটিলতা নেই। এটি রোগের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে। যদি অক্সিজেনের মাত্রা ভালো থাকে এবং কোনো কোমরবিডিটি (দীর্ঘমেয়াদি একাধিক রোগ) না থাকে, তবে এতে কোনো ঝুঁকি নেই বললেই চলে। 

আক্রান্ত হলে করণীয়

* চিকিৎসা করার চেয়ে রোগ যেন না হয়, সে চেষ্টা করা ভালো। অর্থাৎ রোগ নিরাময়ের চেয়ে রোগ প্রতিরোধ শ্রেয়। তাই আগে থেকেই করোনা প্রতিরোধে সমস্ত সুরক্ষা অনুসরণ করছেন কিনা নিশ্চিত হোন। অপ্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নেবেন না।

* স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং বিশ্রামের পাশাপাশি ভিটামিন এবং জিঙ্ক খান। মাঝারি ব্যায়াম এ সময় অব্যাহত রাখুন।

* করোনা পজিটিভ হলে আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে যাবেন না। বেশিরভাগ কোভিড কেসগুলো ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে পরামর্শ নিয়ে বাড়িতেই পরিচালনা করা যায়।

* নিজে কোনো ওষুধ সেবন করবেন না। সাপ্লিমেন্ট সেবনের আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিন।

কখন তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন

চার দিন ধরে প্যারাসিটামল সেবনের পরও জ্বর না কমলে এবং যে কোনো সময় অক্সিজেনের স্যাচুরেশেন ৯৪ এর নিচে নেমে গেলে, আপনাকে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে হবে। যদি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, নখে নীলচে ভাব আসে তবে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।

সাধারণত করোনা আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের কাছ থেকে গর্ভের সন্তানের সংক্রমিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। যদিও এটি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সঠিক স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া মেনে মাস্ক পরে বুকের দুধ পান করানো উচিত। বুকের দুধ বোতলে নিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য অন্য কাউকে দিতে পারেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় শেষ তিন মাস শ্বাস-প্রশ্বাসে জটিলতা এবং ইমিউনিটি কম থাকায় সতর্ক থাকা জরুরি।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া