দেহঘড়ি

নতুন ভ্যারিয়েন্ট কোভিড-২২!

কোভিড-১৯ এর আগ্রাসন এখনো চলছে। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চলছে টিকা দেওয়ার প্রতিযোগিতা। মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে। টিকা নিয়ে গবেষণা অব্যাহত থাকলেও আমরা পুরোপুরি নিরাপদ নই কোভিড-১৯ এর কবল থেকে। ভাইরাসটির মিউট্যান্ট ভ্যারিয়েন্টের কাছে বার বার অসহায় হয়ে পড়ছে মানুষ।

এ মুহূর্তে ভাইরাসটির ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রামক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টই নয়, সামনে আরো বেশি সংক্রামক করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট আগ্রাসন চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কোভিড-২২ ভ্যারিয়েন্ট আরো বেশি আতঙ্কের কারণ হতে পারে বলছেন এক গবেষক। আর এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক চলছে অনেক। 

এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে

এক সুইডিশ গবেষক কোভিড-২২ নিয়ে সতর্ক করে দেওয়ার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে আলোচনা বেড়েই চলেছে। একটি জার্মান পত্রিকায় ছাপা হওয়া গবেষক সাই রেড্ডির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘আমরা এখন এমন এক পরিস্থিতিতে আছি যে সামনে কোভিড-২২ ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ এখন অনেকটাই বাস্তবতা।’

তার মতে, কোভিড-২২ ভ্যারিয়েন্টটি করোনার ডেল্টা, বিটা ও গামা ভ্যারিয়েন্টের সমন্বয়ে নতুন ভ্যারিয়েন্ট হতে পারে। তাই সম্ভাব্য এই ভ্যারিয়েন্ট প্রতিরোধে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন তিনি। টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে এ ব্যাপারে সতর্ক থেকে টিকা উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন এই গবেষক। তার এই রিপোর্ট সোশাল মিডিয়ায় বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। 

কোভিড-২২ কি সত্যি হুমকি হয়ে উঠবে?

কেউ কেউ বলছেন কোভিড-২২ আসলে ডা. রেড্ডির একটি কল্পিত ভ্যারিয়েন্ট। তাদের মতে, করোনার ডেল্টা ও ডেল্টা প্লাস ভ্যারিয়েন্ট এরই মাঝে অনেক বড় হুমকি মানবজাতির জন্য। এসব ভ্যারিয়েন্টের জন্য জটিল অবস্থা তৈরি হতে পারে। এই ভ্যারিয়েন্টগুলো খুব দ্রুত সংক্রমিতও হয়। এসব প্রেক্ষিতে একদল গবেষকের মতে, কোভিড-২২ মারাত্মক ক্ষতিকর নাও হতে পারে। এ বিষয়ে সময়ই উত্তর দেবে।

তবে নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়া মানে করোনার সঙ্গে মানুষের যুদ্ধটা চলমানই থাকবে,সে কথা বলছেন গবেষকরা। বর্তমানের মহামারি শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে কোভিড-২২ হয়তো হুমকির কারণ হতে পারে, তবে তা এখনো কল্পনাতেই সীমাবদ্ধ। সেক্ষেত্রে নতুন টিকা উদ্ভাবনের বিকল্প নেই। মানুষ যখন করোনার সঙ্গে খাপ খেয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আছে, তখন এ ধরনের রিপোর্টে বিশ্বজুড়ে আবারো আতঙ্ক ছড়িয়ে পারতে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অন্য গবেষকরা। 

করোনা ভাইরাস কি রূপান্তর হতেই থাকবে?

গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাস থেকে বিশ্ববাসী সহজেই পরিত্রাণ পাচ্ছে না। কারণ এই ভাইরাসটি একের পর এক মিউট্যান্ট বা রূপ পাল্টে আরো সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। সেক্ষেত্রে গবেষকদের আশার কথা হলো, নিয়মিত টিকা দেওয়া হলে বিশ্বজুড়ে হয়তো ভয়াবহ মহামারি সৃষ্টি করতে পারবে না করোনাভাইরাস। তবে টিকা কার্যক্রমে বিলম্ব বা ঘাটতি দেখা দিলে কোভিড-২২ না হলেও নতুন ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। আর সেই ভ্যারিয়েন্ট কতোটা মারাত্মক হতে পারে তা এখনো  অজানা। 

কোভিড-১৯ এর টিকা কতোটা আশা জাগিয়েছে?

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ এর যেসব টিকা দেওয়া হয়েছে বা হচ্ছে, তাতে করোনা সম্পূর্ণ প্রতিরোধ করা না গেলেও করোনা প্রতিরোধে গবেষকদের মনে আশা জাগিয়েছে, তা বলা যায়। টিকা নেওয়ার কারণে করোনা আক্রান্তদের মারাত্মক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, মৃত্যু হওয়া ছাড়াও সংক্রমণ বাড়ার মতো ঘটনা কমেছে। তাই এসব বিবেচনায় বলতেই হয় করোনার বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধে টিকাগুলো বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখছে।