কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া : কয়লা সংকট আর আধুনিকায়নের ফলে বিলুপ্তির পথে যেতে চলেছে কুষ্টিয়ার কামার শিল্প। লোহার তৈরি ছুরি, কাঁচি, কুড়াল, দা-বটির পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি বিদেশি আধুনিক গৃহসামগ্রী বাজার দখল করেছে। ফলে এ শিল্প এখন হুমকির মুখে।
বড় বড় শিল্পকারখানাগুলো বিদেশ থেকে এলসির মাধ্যমে কয়লা আমদানী করে থাকে। কিন্তু সে কয়লা কামাররা পান না। ফলে আবাসিক বাড়ির খড়ির কয়লা দিয়ে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে তাদের জন্য। কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে কামারদের মাঝে খনিজ কয়লার সরবরাহ নিশ্চিত করা হলে একে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব বলে দাবি করছেন কুষ্টিয়ার কামার শিল্পীদের।
একই পল্লীর সাজু কামার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এ অঞ্চলে আমাকে সবাই এক নামে চেনে। তবে গত এক বছর হলো আমি এ পেশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছি। নিজের প্রয়োজনেই শুধু অল্প কাজ করি। মাসে ১৫-২০দিন ইট ভাটায় কাজ করি। বাকী কয়েক দিন শহরে রিক্সা চালাই।’
প্রায় একই অবস্থা দেখা গেলো সদরপুর গ্রামের কামার পল্লীতেও। সাজু কামারের মতো এখানেও পেশা ছেড়ে দিয়েছেন আব্দুল্লাহ কামার, শংকর কামার ও অনিল কামার।
শংকর কামার রাইজিংবিডিকে জানান, বর্তমানে কামারের কাজ করে আর সংসার চলে না। আগে কাজ ভালো হতো। সবাই কামারের তৈরি ঘর গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত জিনিস পত্র কিনত। এখন সে চাহিদা আর নেই বললেই চলে। তা ছাড়া কয়লা এবং লোহার দামও কম ছিল। কিন্তু এখন যে অবস্থা হয়েছে তাতে এ কাজ করে দুবেলা খাবার জোটানোই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই এ কাজ ছেড়ে বর্তমানে তিনি মাঠে হাল চাষ করছেন বলে জানান।
রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/৩০ জুলাই ২০১৫/কাঞ্চন/সনি