রাইজিংবিডি স্পেশাল

বধ্যভূমি সংরক্ষণে অনিয়ম, নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব

হাসান মাহামুদ : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে হারে গণহত্যা চালায়, তার অন্যতম সাক্ষী মুক্তিযুদ্ধের বধ্যভূমিগুলো। বধ্যভূমি সংরক্ষণে বর্তমানে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে এটি অনুমোদনের অপেক্ষায়। সব মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন বধ্যভূমি অরক্ষিত হয়ে আছে ৪৬ বছর ধরে। ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর হাতে নিহত ৩০ লাখ শহীদের অধিকাংশেরই তখন আলাদা কবরের ভাগ্য জুটেনি। একসঙ্গে একই স্থানে অনেকজনকে হত্যা করে সমাহিত করা হয়েছে। দেশের স্বাধীনতার জন্য বলি হওয়া অসংখ্য শহীদের স্মৃতি ধারণ করে আছে এদেশের অসংখ্য গণকবর এবং বধ্যভূমি। বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের এসব স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, দেশে কতগুলো বধ্যভূমি রয়েছে এর সঠিক হিসাব পাওয়া কঠিন। এখনো অনেক বধ্যভূমি অবহেলিত, পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। অনেক বধ্যভূমি সংরক্ষণের বিষয়ে সরকারের কাছে চিঠি আসে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রতায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায় না। প্রথম পর্যায়ের প্রকল্পের অধীনে দেশের ৩৫টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ক্ষেত্রে গুণগতমান নিশ্চিত করা হয়নি বলে সরকারের তদারকি সংস্থা অভিযোগ করেছে। এজন্য নতুন প্রকল্প অনুমোদনেও বিলম্ব হচ্ছে। সব মিলিয়ে স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও সংরক্ষণ হয়নি দেশের সব বধ্যভূমি। মুক্তিযুদ্ধের গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী, সংরক্ষণের অভাবে খোদ রাজধানী ঢাকা এবং এর আশপাশের ৭০টিরও বেশি বধ্যভূমি নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। ইতিহাসবিদরা সংশয় প্রকাশ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা ইতিহাস রক্ষণাবেক্ষণ না করলে একদিন জাতির ইতিহাস থেকে বিজয়ের গৌরব অধ্যায় ধূসর হয়ে যাবে। ইতিহাসবিদ ড. মুনতাসীর মামুন রাইজিংবিডিকে বলেন, ১৯৭১ সালে গোটা বাংলাদেশই ছিল একটা বধ্যভূমি। মানুষকে ধরে নিয়ে যেসব জায়গায় বর্বর নির্যাতন চালানো হয়েছে, তা স্মরণ করার জন্যই এগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। উদ্যোগই নেওয়া হয় ২৫ বছর পর : মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মুক্তিকামী মানুষদের হত্যা করে গণকবর দিয়ে দিত। সেসব স্থান চিহ্নিত করার জন্য জাতীয়ভাবে উদ্যোগই নেওয়া হয় স্বাধীনতার ২৫ বছর পর, ১৯৯৬ সালে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭১ সালের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো চিহ্নিত করে রাখার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করার লক্ষ্যে বধ্যভূমিগুলো সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাসহ এ দেশের অগণিত মানুষকে হত্যা করে গণকবর দেয়। ১৯৯৬ সালে একাত্তরের বধ্যভূমি চিহ্নিতকরণ ও সংরক্ষণ কমিটি দেশব্যাপী নিবিড় জরিপ চালিয়ে বিভিন্ন জেলায় অসংখ্য বধ্যভূমি চিহ্নিত করে। ১৯৯৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর কমিটি প্রদত্ত রিপোর্টে বধ্যভূমিগুলোতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের সুপারিশ করে। কিন্তু এখনো দেশের অধিকাংশ জেলা এবং বেশির ভাগ উপজেলা ও থানায় বধ্যভূমি চিহ্নিত করা হলেও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিছু জেলায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হলেও সেগুলো পড়ে আছে নিদারুণ অবহেলায়। অভিযোগ রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর যোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং আগামী প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে উৎসাহী করার লক্ষ্যে এসব স্মৃতিচিহ্ন নির্মাণ করা হলেও অযত্ন অবহেলায় এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। জাতীয় দিবসগুলো ছাড়া অন্য সময়ে কেউ এগুলোর কথা স্মরণ করে না। ফলে মার্চ-ডিসেম্বর এলেই কেবল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম এবং বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, এই প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালে ‘১৯৭১-এ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধকালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ’ নামে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। দেশে কতটি বধ্যভূমি তার পরিসংখ্যান নেই : স্বাধীনতার ৪৬ বছরে দেশে তৈরি হয়নি নির্ভরযোগ্য একটি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা। সংখ্যা নির্ণয় করা যায়নি যুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা। তেমনি এত বছরে দেশে কতটি বধ্যভূমি রয়েছে, সে পরিসংখ্যানও তৈরি করা যায়নি। যদিও এ সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যানের কথা বলা হয়। কিন্তু ওসব ভিন্ন ভিন্ন অংকের। ফলে নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি কোনো তালিকা। সরকারি হিসাবে বলা হয়, ২০৯টি বধ্যভূমি ও গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ শনাক্ত করেছে ১৯৩টি। বেসরকারি সংস্থা ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং-এর মতে সারা দেশে পাঁচ হাজার বধ্যভূমি রয়েছে। এর মধ্যে ৯২০টি বধ্যভূমি শনাক্ত করা গেছে। প্রণয়ন করা হয়েছে একটি মানচিত্র। জানা গেছে, সরকারি উদ্যোগে প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় প্রথমে দেশের ১৭৬টি বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে পরে ১২৯টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ এবং সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর ব্যয় ধরা হয় ৫১ কোটি টাকা। প্রাথমিকভাবে মাত্র ৩৩টি বধ্যভূমিতে স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হয়। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির মাঠ পর্যায়ের গবেষণা ও জরিপ থেকে জানা যায়, দেখভাল ও নজরদারির অভাবে ইতিমধ্যে ২৮টি বধ্যভূমি ও গণকবর দখল হয়ে গেছে। এমনটি গত বছর বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) বলেছিল, সুষ্ঠু পদক্ষেপ না নিতে পারলে কিছু বধ্যভূমি নিশ্চিহ্নই হয়ে যেতে পারে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ : বধ্যভূমি সংরক্ষণের নামে প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। সংস্থাটি গত বছর প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ পরিদর্শন ও অনুসন্ধান করে বলে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদস্মৃতি রক্ষায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে অব্যবস্থাপনা, গাফিলতি ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৩৫টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে যেনতেনভাবে। ফলে প্রকল্প গ্রহণের উদ্দেশ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পূরণ হয়নি। এমনকি নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রীর ব্যবহার, বধ্যভূমির উপযুক্ত স্থান নির্বাচন না করা এবং ঠিকাদারদের অনিয়মসহ নানা অসঙ্গতি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ খুঁজে পায় সংস্থাটি। সংস্থাটি আরো বলে, নতুন বধ্যভূমি তৈরির ক্ষেত্রে জাতীয়ভাবে দরপত্র আহ্বান করার মাধ্যমে যোগ্য কমিটির নেতৃত্বে কাজ করা যেতে পারে। কোনোভাবেই স্থানীয় প্রশাসন কিংবা দলীয় বিবেচনায় নিয়োগকৃত কোনো ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানো ঠিক হবে না। আইএমইডি’র পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, দেশের ৩৫টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ক্ষেত্রে গুণগতমান নিশ্চিত করা হয়নি। প্রকল্প কাজের পর্যাপ্ত তদারকি ও নজরদারির অভাব ছিল। অনেক স্থানে বধ্যভূমির স্থান নির্বাচন সঠিক ছিল না। প্রকল্প-পরবর্তী সময়ে স্মৃতিস্তম্ভগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্পটি বুঝিয়েও দেওয়া হয়নি। বেশিরভাগ বধ্যভূমিতে কোনো নামফলক নেই। প্রকল্প এলাকাগুলোকে পর্যটন এলাকার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়নি। প্রকল্প এলাকায় কোনো ধরনের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক পাঠাগার, জাদুঘর কিংবা কোনো নান্দনিক ম্যুরাল বা স্থাপনা তৈরি করা হয়নি। এছাড়া স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়নি। আরও বলা হয়েছে, ক্রয় প্রক্রিয়া সঙ্গতিপূর্ণ থাকলেও স্থানীয় পর্যায়ে ঠিকাদারদের অসহযোগিতা এবং অনিয়মের কারণে প্রকল্পটির আশাব্যঞ্জক ফল অর্জিত হয়নি। সামগ্রিক বিবেচনায় প্রকল্পটি সমাজে তেমন কোনো প্রভাব রাখতে পারেনি। যেসব উদ্দেশ্যে এটি গ্রহণ করা হয়েছিল, অব্যবস্থাপনার কারণে তার অধিকাংশই সফল হয়নি। ফলে দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজ শুরুর আগে প্রথম পর্যায়ের সব ব্যর্থতা নিয়ে ব্যাপক ও বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং সমীক্ষার প্রয়োজন বলেও জানায় সংস্থাটি। প্রসঙ্গত, ২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে ৫ কোটি ৭৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু পরে চার বছর সময় বাড়িয়ে ২০০৮ সালে এটি সমাপ্ত করা হয়। দেশে মোট ১৯৩টি বধ্যভূমি থাকলেও প্রথম পর্যায় ৩৫টি বধ্যভূমি প্রকল্পভুক্ত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। নতুন প্রকল্প অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রতা : বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (দ্বিতীয় পর্যায়) পরিকল্পনা করা হয় ২০১৫ সাল থেকেই। কিন্তু দু’বছরেও প্রকল্পই অনুমোদিত হয়নি। চলছে ফাইল চালাচালি। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, বধ্যভূমি সংরক্ষণসংক্রান্ত প্রস্তাবিত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হলে সেখান থেকে তা দুদফায় কিছু বিষয় জানতে চেয়ে ফেরত পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি মাসে চাহিদা অনুযায়ী তথ্য দিয়ে সেটি আবারও পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রকল্পটি অনুমোদন পাইনি। এ অবস্থায় বর্তমান সরকারের আমলে এই কাজ শেষ করা যাবে কিনা, তা নিয়ে খোদ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়েরই কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা অনিশ্চয়তায় রয়েছেন। কারণ প্রকল্পের মেয়াদই ধরা হয়েছে আগামী বছরের জুন পর্যন্ত। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, আগামী কিছুদিনের মধ্যে প্রকল্পটি অনুমোদন করা না গেলে এই সরকারের বাকি সময়ে কাজটি করা যাবে না। তার অর্থ এটির বাস্তবায়ন প্রত্যাশিত সময়ের চেয়ে আরও পিছিয়ে যেতে পারে। যদিও আশার কথা শুনিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব অপরূপ চৌধুরী। তিনি বলেন, প্রকল্পটি  অনুমোদন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আমরা আশাবাদী। এখন এটি পরিকল্পনা কমিশনে আছে। প্রকল্পটির বিষয়ে কমিশনের পক্ষ থেকে কিছু বিষয় জানতে চাওয়া হয়, সে চাহিদা পূরণ করা হয়েছে। এখন অপেক্ষা অনুমোদনের। প্রকল্পের প্রস্তাবনা (ডিপিপি) থেকে জানা যায়, প্রকল্পের আওতায় রয়েছে সারাদেশে ২৭৯টি বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ। ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৫০ কোটি টাকা।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ ডিসেম্বর ২০১৭/হাসান/মুশফিক