রাইজিংবিডি স্পেশাল

বৈশাখের রঙে রঙিন বিপণিবিতান

হাসিবুল ইসলাম মিথুন : আর মাত্র ছয় দিন পর বাঙালিদের প্রাণের উৎসব পয়লা বৈশাখ। নতুন বছরকে বরণ করতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন দেশবাসী। পছন্দের পোশাক কিনতে বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় করছেন তারা। পোশাকের দোকানগুলোতে এখন কেনাকাটার ধুম পড়েছে। রাজধানীর নামিদামি ফ্যাশন হাউস, বিভিন্ন মার্কেট, শপিং মল ও বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতে বৈশাখী পণ্যের সমাহার। বিক্রি বাড়াতে বিভিন্ন পণ্যের মূল্যছাড়সহ চলছে আকর্ষণীয় অফারের প্রচার। রাজধানীর অভিজাত মার্কেটগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজগুলো নানা ধরনের পোশাক প্রদর্শন ও বিক্রি করছে। তরুণ-তরুণীদের মূল ক্রেতা হিসেবে মাথায় রেখে তাদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। তবে শিশু-কিশোর ও বয়স্করাও বাদ পড়ছেন না। সকাল থেকেই দেখা গেছে সালোয়ার-কামিজ, পাঞ্জাবি-ফতুয়া, শাড়ি-চুড়ি, গহনা, মাটির তৈজসপত্রসহ নানা পণ্য বিক্রির ধুম। রাজধানীর গাউছিয়া, নিউ মার্কেট, চাঁদনীচক, বসুন্ধরা শপিং মল, ইস্টার্ন মল্লিকাসহ অধিকাংশ মার্কেটে দেশ, ভারতীয়সহ নানা দেশের নানা নামের পোশাকে সয়লাব। তবে দাম নিয়ে ক্রেতাদের রয়েছে অভিযোগ। ক্রেতারা বলছেন, ডিজাইন এবং পোশাকের মান নিয়ে তাদের মনে প্রশ্ন আছে। বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে পোশাক কিনতে আসা সাথী আক্তার বলেন, সামনে পয়লা বৈশাখ। তাই শাড়ি ও পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি আমার বরের জন্য। পয়লা বৈশাখে ঘুরতে বের হব। তাই দুজনে একই রঙের পোশাক কিনব। তিনি বলেন, এখানে স্মারটেক্স শোরুমে দেখলাম শাড়ি ও পাঞ্জাবিতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে বৈশাখ উপলক্ষে। এছাড়া এই শোরুমের কাপড়ের মান ভালো। তবে বৈশাখের কাপড় অনুযায়ী দামটা একটু বেমি নিচ্ছে। বসুন্ধরা সিটিতে জেন্টেল পার্কে গিয়ে দেখা যায়, লাল-সাদা পোশাকের সংগ্রহ সবচেয়ে বেশি। এখানে লিলেন, জর্জেট বা সুতি কাপড়ে তৈরি পোশাক রয়েছে। সেখানে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া রিয়াদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সামনে পয়লা বৈশাখ, তাই পাঞ্জাবি কিনব। পরিকল্পনা আছে বৈশাখের দিন বন্ধুরা মিলে একই ধরনের পাঞ্জাবি পরে বের হবো। লাল আর হলুদ রঙই প্রাধান্য দিচ্ছি।’ গাউছিয়া মার্কেটে কথা হয় আজিমপুরের সাবিনা রহমানের সঙ্গে। ছোট বোনকে নিয়ে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ছোটদের আনন্দকে প্রথমে দেখতে হয়। তাই ছোট বোনকে নিয়ে এসেছি। বাসার সকলের জন্য নতুন পোশাক কিনেছি।’ সরেজমিনে রাজধানীর ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, শ্যামলীসহ বিভিন্ন এলাকার বিপণিবিতানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ নামিদামি ব্র্যান্ডের শোরুমে ক্রেতাদের ভিড়। বিশেষ করে আড়ং, দেশীদশ, নবরূপা, জেন্টলপার্ক, ইনফিনিটি, ক্যাটস আইসহ সব শীর্ষ ব্র্যান্ডের দোকানে আনাগোনা বেশি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড়ে জমজমাট থাকে দোকানগুলো। প্রত্যেকটি শোরুমে কেনাকাটার ওপর ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ ছাড়ের অফার চলছে। এছাড়া, বিকাশে পেমেন্ট করলেই পাচ্ছে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক। রাজধানীর মিরপুর আড়ং ফ্যাশন হাউসে বৈশাখ উপলক্ষে মেয়েদের জন্য রঙ-বেরঙের থ্রিপিস, কুর্তি, টপস, শাড়ি ও ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবি, ফতুয়া প্রদর্শন করা হচ্ছে। শিশুদের জন্য রয়েছে দারুণ সংগ্রহ। মিরপুর আড়ংয়ের বিক্রয়কর্মী মোহাম্মদ সাইমন হোসেন বলেন, ‘ক্রেতাদের পছন্দের কথা মাথায় রেখে আমরা পোশাক ও অন্যান্য পণ্য তুলেছি।’ দামের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাপড়ের মানের ওপর নির্ভর করে মূলত দাম নির্ধারণ করা হয়। আমাদের এখানে দেড় হাজার টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকার অধিক দামের পোশাক বিক্রি হচ্ছে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ এপ্রিল ২০১৯/হাসিবুল/রফিক