রাইজিংবিডি স্পেশাল

অপারেশন থান্ডারবোল্টে যবনিকা

ঢাকার অভিজাত গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে ভয়ংকর হামলার ঘটনা ঘটে ২০১৬ সালের ১ জুলাই। সেদিন যেন রক্তের হলি খেলায় মেতে উঠেছিল জঙ্গিরা। কূটনৈতিক এলাকায় এরকম একটি হামলা হবে তা কেউ কল্পনাও করেনি। সে দিনের সেই ভয়ংকর হামলার চিত্র ফুটে ওঠে পুলিশের দেয়া চার্জশিটে। ওই চার্জশিটের আলোকে ঘটনার বিশদ রাইজিংবিডি পাঠকদের জন্য তুলে ধরেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক মামুন খান। ধারাবাহিক বর্ণনার আজ নবম ও শেষ পর্ব।

ঢাকায় সাধারণত রাত সাড়ে ৮টায় তারাবির নামাজ শুরু হয়। জঙ্গিরা সেই সময়টিকে হলি আর্টিজানে প্রবেশের জন্য বেছে নেয়। অন্যদিকে রমজান মাস হওয়ায় সন্ধ্যার পর থেকেই বিদেশি নাগরিকরাও হোটেলে ভিড় জমায়। জঙ্গিদের মূল টার্গেট ছিল বিদেশি নাগরিক, তাই তারা ওই সময় বেছে নেয়।

মামলার চার্জশিট থেকে জানা যায়, ১ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবুল হাসনাত রেজা করিম মেয়ের জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে বেকারিতে এসেছিলেন স্ত্রী শারমিনা পারভীন, ছেলে রায়ান করিম ও মেয়ে সাফা করিমকে নিয়ে। রাত ৮টা ১০ মিনিটে তাহমিদ হাসিব খান তার বান্ধবী ফাইরুজ মালিহা ও তাহানা তাসমীয়াকে নিয়ে হলি আর্টিজানে এসেছিলেন। ভারতীয় নাগরিক ডা. সত্য প্রকাশ রাত সাড়ে ৮টায় হলি আর্টিজানে এসে পাস্তার অর্ডার দিয়ে কমপ্লিন্টারি কমলার জুস খেতে খেতে অপেক্ষা করছিলেন বন্ধু তন্ময়ের জন্য।

ফারাজ আয়াজ হোসেন, তারিশি জৈন ও অবিন্তা কবির ঈদ উদযাপন উপলক্ষে আমেরিকা থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। পরদিন সকাল ৯টায় জেট এয়ারওয়েজে এ করে দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল তারিশি জৈনের। ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তারিশি বন্ধু ফায়াজ আইয়াজ ও অবিন্তা কবির ওই দিন রাত পৌনে ৮টায় হলি আর্টিজানে এসেছিলেন। ইতালির নয় নাগরিক বিকেল সাড়ে ৫টায় গাড়িতে করে হলি আর্টিজানে আসেন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশের তৈরি পোষাক শিল্প ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। সাত জাপানি নাগরিকের অধিকাংশই বনানী জাইকা অফিস থেকে রওনা দিয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের হলি আর্টিজানে পৌঁছান। তারা সবাই নীচ তলায় হল রুমের একেবারের পেছনের টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছিলেন। ঢাকার ইশরাত আখন্দ বেকারিতে ঢুকছিলেন তার শ্রীলঙ্কান বন্ধু হরিকেশের সাথে। কিছুক্ষণ পর হরিকেশের স্ত্রীসহ আরো কয়েকজন এদিক-সেদিক পায়চারি ও আড্ডা দিচ্ছিলেন।

রাত ৮টার পর থেকে হলি আর্টিজানের কিচেন শেফ, ওয়েটার ও অন্যান্য কর্মচারী সবাই ব্যস্ত ছিলেন খাবার তৈরি ও পরিবেশনের জন্য। হলি আর্টিজান ও লেক ভিউ ক্লিনিকে প্রবেশ করার প্রধান গেটে নিরাপত্তা রক্ষীর দায়িত্ব পালন করছিলেন মো. হোসেন ও নূর আলম। মো. হোসেন তারাবীর নামাজ পড়তে গেলে নূর আলম একাই গেট পাহারায় ছিলেন।

গুলশান-২ এর ৭৯ নং রোডে ডিএমপি কর্তৃক স্থাপিত সিসিটিভিতে ধারণকৃত ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাত ৮টা ৪২ মিনিটে প্রথমে নিবরাস ও মোবাশ্বের এবং একটু পর রোহান, পায়েল ও শফিকুল কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে হলি আর্টিজান বেকারির মেইন গেটের দিকে পায়ে হেঁটে অগ্রসর হচ্ছে। রাত পৌনে ৯টার দিকে ওই পাঁচজন হলি আর্টিজান ও লেক ভিউ ক্লিনিকের মেইন গেটে এসে উপস্থিত হয়। এরপর তারা ভিতরে প্রবেশ করতে গেলে নূর আলম তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করে। কোন উত্তর না দিয়ে নিবরাস নূর আলমের ডান চোখের নিচে ঘুষি মারে। নূর আলম কিছু বুঝে ওঠার আগেই জঙ্গিরা আল্লাহ্ আকবর ধ্বনি দিয়ে হলি আর্টিজানের মূল গেটের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। নূর আলম তখন লেক ভিউ ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে চিৎকার করতে থাকে।

এদিকে হোটেলের অতিথিরা ওই পাঁচজনকে প্রথমে তাদের মত অতিথি মনে করেছিল। জঙ্গিরা ভেতরে ঢুকেই গুলি বর্ষণ করতে শুরু করে। তারা আল্লাহ আকবর ধ্বনি দিয়ে বলতে থাকে, তোমাদের ভয় নাই, আমরা মুসলমানদের মারবো না, তোমরা টেবিলের নীচে মাথা নিচু করে থাকো। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রেস্তোরাঁর সবাই হতবিহ্বল। সবাই এদিক-সেদিক ছুঁটে পালানোর চেষ্টা করে।

হামলায় বেঁচে যাওয়া হোটেলের কর্মচারী ও অতিথিদের কথোকথন থেকে জানা যায়, পাঁচ জঙ্গির ভয়াবহ কর্মকান্ড সম্পর্কে। তারা আলো-আঁধারে একজনের সামনে অন্যজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জঙ্গিরা সেখানে অবস্থানরত প্রায় অর্ধশতাধিক দেশি/বিদেশি নারী-পুরুষকে জিম্মি করার পর বেকারির বাথরুম, টয়লেট, ছাদ, বাথরুম, কিচেন, চিলাররুম প্রভৃতি স্থানে লুকিয়ে থাকা বিদেশিদের খুঁজে খুঁজে বের করে সর্বমোট ২০ জনকে গুলি ও ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

নিহতের মধ্যে নয় জন ইতালিয়ান, সাত জন জাপানি, একজন ভারতীয়, একজন দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ-আমেরিকা) এবং দুজন বাংলাদেশি। এছাড়া ৭৯ নং রোডে হলি আর্টিজান গেটের কাছে দায়িত্ব পালনকালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (বিডি-পশ্চিম) মো. রবিউল করিম এবং বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক সালাউদ্দিন আহম্মেদ খানকে গ্রেনেড ছুঁড়ে জঙ্গিরা হত্যা করে। বেকারির কিচেন হেলপার জাকির হোসেন শাওন হামলার সময় স্টাফদের অনেকের মত বিল্ডিংয়ের ছাদ থেকে পালানোর চেষ্টাকালে স্প্লিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হন।

লাশের সামনে জিম্মিদের খাবার খেতে বাধ্য করে জঙ্গিরা

জঙ্গিদের আকস্মিক হামলায় হোটেলে আগত অতিথি ও কর্মচারীরা কফিরুম, বাথরুম, চিলাররুম (হিমঘর), চেবিলের নীচে, বেকারির দোকানসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়। শ্রীলঙ্কান দম্পতি হরিকেশা ও সায়েমা রেস্টুরেন্টের পিজা ওভেনের মধ্যের ফাঁকে আশ্রয় নেয়। ডা. সত্য প্রকাশও সেখানে আশ্রয় নেন। টালিঘরে থাকা তাহমিদ হাসিব খান ও তার দুই বান্ধবী ফাইরুজ মালিহা, তাহানা তাসমিয়াদের জঙ্গি নিবরাস টালিঘর থেকে এবং ডা. সত প্রকাশকে পিজা ওভেনের পিছন থেকে নিয়ে এসে হল রুমে বসায়। সেখানে আগে থেকেই বসা ছিলেন হাসনাত করিম, তার স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে। জঙ্গিরা অস্ত্রের মুখে তাদের জিম্মি করে হাসনাত করিমকে দিয়ে হলি আর্টিজান বেকারির গেটের তালা বন্ধ করায়।

নিবরাস জিম্মি সবাইকে বলে, আপনারা মোবাইলে পরিচিত জনদের বলে দেন, আপনার বেঁচে আছেন, পুলিশ যেন গুলি না চালায়। রাত ৯টা ২০ মিনিটের দিকে রোহান হলি আর্টিজান বেকারির ওয়েটার ইমাম হোসেন সবুজকে দিয়ে বেকারির দোকান থেকে কেক ও পানি এনে জিম্মিদের খাওয়ায়। তখন রোহান সবুজের কাছে জানতে চায়, সেখান থেকে পালানোর কোন পথ আছে কি না? সবুজ জানায়, দ্বিতীয় তলার পেছন দিকের জানালা অথবা স্টাফদের খাবার ঘরের ফাঁক দিয়ে দেয়াল টপকিয়ে পালানো যেতে পারে।

রাত ১২টার পর জঙ্গিরা দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে হলি আর্টিজান বেকারির নীচ তলার হল রুম ও দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নেয়। নিবরাস ও পায়েল হল রুমে এবং মোবাশ্বের ও শফিকুল আইসক্রিম স্টোর রুমসহ অন্যান্য রুম তল্লাশি করে। তারা হোটেল কর্মচারী মিরাজকে জিম্মি করে বেকারির আশ-পাশ এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করে। জঙ্গিরা রাতে মহিলা ও পুরুষদের আলাদা করে রাখে। এর একটু পর জঙ্গিদের কাছে মৃত্যু নিশ্চিত করার ম্যাসেজ আসে।

রাত সাড়ে ১২ টার দিকে জঙ্গিরা হল রুমের লাইট অফ করে ফ্লোরে পড়ে থাকা দেশি-বিদেশিদের ধারালো চাপাতি/ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এক জাপানি নাগরিক হেল্প হেল্প বলে শিশির সরকারদের সাথে চিলার রুমে এসে আশ্রয় নেয়। ঠান্ডায় জমে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল তাদের। রাত একটার দিকে সেখানে লুকিয়ে থাকা শিশির সরকার ও জাপানিজ মাকোটা ওকামুরাকে রোহান বের করে নিয়ে আসে। শিশিরকে হলরুমে বসিয়ে রোহান জিম্মিদের সকলকে কানে হাত দিতে বলে। মাকোটা ওকামুরাকে পরপর দুটি গুলি করে হত্যা করে রোহান।

এর প্রায় আধা/এক ঘন্টা পর জঙ্গিরা কর্মচারীদের কাছে বেকারির পাসওয়ার্ড চায়। শাহরিয়ার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ড দেয়। তখন তারা হাসনাত করিমের ফোনে ওয়াইফাই কানেক্ট করে জিম্মিদের সবাইকে সিরিয়ার মানুষের ওপর অত্যাচারের ভিডিও দেখায়। রাত ২টার দিকে জঙ্গিরা অতিথিদের ফোন দিয়ে নিহতদের ছবি ওঠায় এবং তামিম চৌধুরী ও মারজানের কাছে পাঠায়।

তামিম চৌধুরী ও মারজান মিরপুর-১ এর শেওড়াপাড়া ৪৪১/৭ এর বাসার কথিত কন্ট্রোল রুমে অবস্থান করে এসব ছবি ও ভিডিও চিত্র দেখে। পরদিন সকালের দিকে মারজান ম্যাসেজ পাঠিয়ে রাজীব গান্ধী, র‌্যাশ, বাশারুজ্জামান চকলেট, তানভীর কাদেরীদের জানায়, প্যারা কমান্ডো বাহিনী প্রস্তুত, কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের ভাইয়েরা শহীদ হবে।

রাত আড়াইটার দিকে রোহান বেকারির বাবুর্চি শিশিরকে দিয়ে কোরাল ও চিংড়ি মাছ রান্না করিয়ে সবাইকে সেহরি করায়। লাশের সামনেই তাদের থেতে বাধ্য করে জঙ্গিরা। ভোর পৌনে ৬টা থেকে ৬টার মধ্যে রোহান অস্ত্রের মুখে হাসনাত করিম ও তাহমিদ হাসিবকে বেকারির ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান লক্ষ্য করে নীচে নেমে আসে।

সকাল ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে রোহান হাসনাত করিমের পরিবারসহ জিম্মি আটজনকে খোলা গেট দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যেতে বলে। বের হওয়ার মুহূর্তে তাদের উদ্দেশ্যে বলে, তোমাদের সাথে আমাদের জান্নাতে দেখা হবে। সকাল ৭টা ৩১ মিনিটের দিকে ৮ জন বেকারি থেকে বের হয়ে ৭৯ নং রোডে চলে আসে। ইতিমধ্যে রোহানের নির্দেশে কর্মচারী ইমাম হোসেন বেকারির বাথরুমে আটকে থাকা অন্য স্টাফদের হলরুমে নিয়ে আসে। সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে জঙ্গিরা স্টাফদের সবাইকে হল রুমে একত্রে দাঁড় করিয়ে বলে, একটু পর তোমরাও আমাদের লাশ দেখতে পাবে, তোমরা নামাজ আদায় ও বাংলা অনুবাদসহ কোরআন শরিফ পড়। মেঝেতে পড়ে থাকা লাশ দেখিয়ে তারা বলে, তোমরা যে লাশগুলি দেখছো, কিছুক্ষণ পর আমাদেরও একই অবস্থা হবে। তোমরা আল্লাহর পথে থেকো, রোজা-নামাজ পড়ো, শিরক করো না, ইসলামের পথে থেকো। সবশেষে জঙ্গিরা এও বলে, আমরা এখন জান্নাতবাসী। স্টাফদের সবাইকে নিরাপদে চলে যেতে বলে।

এরার মোবাশ্বের, রোহান, নিবরাস, খায়রুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম হল রুম থেকে বেরিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় সারিবদ্ধভাবে লনের দিকে অগ্রসর হয়।

অপারেশন থান্ডারবোল্ট

হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবেলায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী উদ্যোগ নেয়। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব সহযোগে সম্মিলিত অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়। সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। প্যারা কমান্ডো সদস্যরা ক্রলিং করতে করতে সামনের দিকে এগোতে থাকে এবং গুলি ছুঁড়তে থাকে পদাতিক ডিভিশন ও স্নাইপার টিম।

হলি আর্টিজান প্রাঙ্গন থেকে জঙ্গিরাও গুলি ছুড়তে থাকে। ১২-১৩ মিনিটের মধ্যে সব সন্ত্রাসীকে নির্মুল করে প্যারা কমান্ডোরা পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযানের সমাপ্তি ঘটে। তিন বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন তারা। অভিযানে সাত সন্ত্রাসীর ৬ জন নিহত এবং একজন সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হয়।

ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। যাদের অধিকাংশই রাতে ধারালো অস্ত্রের মাধ্যমে নৃশংসভাবে হত্যা করে জঙ্গিরা। পাঁচ জঙ্গি মোবাশ্বের, রোহান, নিবরাস, পায়েল, উজ্জ্বল এবং হলি আর্টিজানের শেফ সাইফুল চৌকিদারও বেকারি ও লেক ভিউ ক্লিনিকের মাঝামাঝি হলি আর্টিজানের মাঝামাঝি গ্রিন প্যাসেজে গুলি বিনিময়ে নিহত হয়।

চার্জশিটে বলা হয়, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনা হৃদয় বিদারক। জেএমবি নেতৃত্বের একটি অতি উগ্র গ্রুপ তথাকথিত নব্য জেএমবি গঠনের প্রক্রিয়ায় ব্যাপৃত থেকে তাদের ইশতিহাদি সদস্যদের হলি আর্টিজানে প্রবেশ করিয়ে সেখানে অবস্থানরত অর্ধশতাধিক দেশি-বিদেশি নারী-পুরুষকে জিম্মি করে। যাদের মধ্যে সাত জন জাপানী, ৯ জন ইতালী, একজন ভারতীয়, একজন দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশ-আমেরিকা), দু’জন বাংলাদেশি অর্থাৎ ২০ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। তারা আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর দু’জন কর্মকর্তাকে গ্রেনেড ছুঁড়ে হত্যা করে। জঙ্গিদের ছোঁড়া স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত কিচেন হেলপার জাকির হোসেন শাওন  চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ জুলাই মারা যান। অর্থাৎ হলি আর্টিজানের ঘটনায় জঙ্গিসহ নিহত হয় ২৯ জন।

 

ঢাকা/এনএ