রাইজিংবিডি স্পেশাল

রাতে উদ্যান সাজে মায়াবী রূপে

মুজিববর্ষকে সামনে রেখে অপেক্ষাকৃত সাদামাটাভাবে আয়োজনের প্রস্তুতি নেয়া আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। রাতে এই রূপ হয়ে ওঠে আরো মোহনীয় আরো আকর্ষণীয়। রং-বেরঙের আলোকছটায় উদ্যান জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মায়াবী রূপ, অন্যরকম এক আবহ।

সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নানা বর্ণিল আলোর ঝলকানিতে হয়ে ওঠে আলোকিত। এলইডির ডিসপ্লেতে ভেসে ওঠে জাতীয় পতাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। আওয়ামী লীগের নেতাদের সংবাদপত্রে প্রকাশিত পুরনো ছবি সংবলিত ব্যানারও শোভা পাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়েছিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং সরকার ঘোষিত মুজিববর্ষের কাউন্ট ডাউন শুরু হওয়ায় এবার সম্মেলনের সাজসজ্জায় খুব বেশি জাঁকজমকপূর্ণ হবে না। এজন্য এই সম্মেলন সাদামাটাভাবে আয়োজন করা হবে। সম্মেলনের আগে পুরো ঢাকাকে যেভাবে সাজানো হয় সেটিও চোখে পড়েনি এবার। এমনকি বিদেশি অতিথিদেরও দাওয়াত দেয়া হচ্ছে না সম্মেলনে। কারণ মুজিব বর্ষ ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে অনেক বিদেশি অতিথি আসবেন।

আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলন উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। দায়িত্বশীল নেতারা সম্মেলনস্থলের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মঞ্চ এবং সাজসজ্জা উপ-কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক রাইজিংবিডিকে জানান, জাতীয় সম্মেলনে সাজসজ্জা থেকে শুরু করে সবকিছু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ থাকছে। তবে অন্যবারের তুলনায় সম্মেলনস্থলের পরিধি এবার বড় হচ্ছে।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে, মঞ্চ এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, দেখে মনে হবে পদ্মা নদীর মাঝে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর পাশে ভাসমান পাল তোলা নৌকায় বসে সম্মেলন হচ্ছে।

নিচের জলরাশিতে ভাসমান বিশাল পাল তোলা নৌকা। সেই নৌকায় লেখা ২১তম জাতীয় সম্মেলন-২০১৯। এর ঠিক পেছনেই আছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল ছবি। আরো আছে জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ছবি। আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের মূল মঞ্চ এভাবেই তৈরি করা হয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ২১তম সম্মেলনের জন্য ইভেন্ট খোলা হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পরদিন ২১ ডিসেম্বর সকালে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে কাউন্সিল অধিবেশন।

‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে গড়তে সোনার দেশ, এগিয়ে চলেছি দুর্বার, আমরাই তো বাংলাদেশ’স্লোগান দিয়ে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন স্থানে পোস্টার টানানো হয়েছে। প্রস্তুতি নিতে নিয়মিত কাজ করছে ১১টি উপকমিটি। সারা দেশ থেকে সাড়ে সাত হাজার কাউন্সিলর এবং ১৫ হাজার ডেলিগেটসহ প্রায় ৫০ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত থাকবেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির সদস্য এবং দলের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, “সম্মেলনে আগত ২৫ হাজার অতিথিকে পাটের ব্যাগ উপহার দেবে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি।

‘এতে আওয়ামী লীগের ইতিহাস সম্বলিত স্মরণিকা, শোক প্রস্তাব, নেত্রীর ও সাধারণ সম্পাদকের ভাষণ থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন চিত্রের একটি পকেট বুক, আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও বিএনপি জামায়েতের অপপাচার জ্বালাও পোড়াওয়ের দুটি ডিভিডি, দুটি চকলেট, একটি পানির বোতল ও নেত্রীর ছবির অ্যালবাম থাকবে।”

এছাড়া সারা দেশ থেকে আগত নেতা-কর্মীদের জন্য থাকছে ৪৫ হাজার মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা।

এ প্রসঙ্গে খাদ্য উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও দলের কেন্দ্রীয় সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে ৪৫ হাজার দলীয় নেতা-কর্মীকে আপ্যায়ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। খাবারে ব্যাগে মোরগ পোলাও দেওয়া হবে, একটি করে ডিম, ফিরনি ও একটি পানির বোতল থাকবে।’

আট বিভাগের জন্য মোট ১০টি বুথ রাখা হবে বলে জানিয়ে মায়া বলেন, ‘এর বাইরে আমাদের একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং বুথ থাকবে। বিভাগভিত্তিক খাদ্যের স্লিপ বিতরণ করা হবে সেখান থেকে।’

 

ঢাকা/পারভেজ/সনি