রাইজিংবিডি স্পেশাল

হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে আইনের কঠোর প্রয়োগের পরামর্শ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সব অফিস-আদালত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। নাগরিকদের হোম কোয়ারেন্টাইন বা ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে ঘোষণা করা হয়েছে সাধারণ ছুটি। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনী রাস্তায় নিয়মিত টহল দিচ্ছেন, মানুষকে সচেতন করছেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গণমাধ্যমে সব সময় নাগরিকদের ঘরে থাকতে উদ্ধুদ্ধ করা হচ্ছে।

এতকিছুর পরও অনেকেই স্বাস্থ্য বিধি না মেনে নানান অযুহাতে ঘোরাফেরা করছেন। রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে, চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছেন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখারও তোয়াক্কা করছেন না তারা। ঘর থেকে বের হওয়ার যুক্তিসংগত কারণও দেখাতে পারছেন না অধিকাংশ মানুষ।

এ অবস্থায় নাগরিকদের ঘরে থাকা নিশ্চিত করতে করতে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন-২০১৮ এর কঠোর প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন সংশ্লিষ্টরা আইনজীবীরা। এছাড়া করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন করা ও বোঝানোর পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসকে সরকার ইতিমধ্যেই মহামারি সংক্রামক রোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাই এক্ষেত্রে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন-২০১৮ প্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। এ আইন প্রয়োগ করে কোন নাগরিক যেন সংক্রামক ছড়াতে না পারে তার জন্য তাকে বিছিন্ন রাখা যাবে বা ঘরে থাকতে বাধ্য করা যাবে।

আইনের ১৬(গ) ধারা অনুযায়ী সন্দেহজনক স্থান জীবাণুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট স্থানে জনসাধারণের প্রবেশ ও ব্যবহার নিষিদ্ধ বা সীমিতকরণ করা যাবে।

কোন ব্যক্তি হোম কোয়ারেন্টাইন বা ঘরে না থাকে কোন ব্যক্তি সংক্রামক রোগের বিস্তার ঘটান বা বিস্তারে সহায়তা করেন বা সংক্রমনের ঝুঁকি গোপন করেন তাহলে ২৪ ও ২৫ ধারা অনুযায়ী দণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। আইন অমান্য করলে তাকে ৩ মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে।’

আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন আরো বলেন, যেহেতু মোবাইল কোর্ট আইনের তফসিলে সংক্রামক ব্যাধি আইনে সংযুক্ত করা হয়েছে সুতরাং মোবাইল কোর্ট সংক্রামক ব্যাধি আইন লঙ্ঘন করলে শাস্তি দিতে পারবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর মাহফুজা খানম এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘অজ্ঞতার কারণেই কিছু মানুষ হোম কোয়ারেন্টাইন মানছেন না বা ঘরে থাকছেন না। আসলে তারা করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা বুঝতে পারছেন না। তাদেরকে বোঝাতে হবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য এই সময়টুকু কষ্ট হলেও ঘরে থাকতে হবে। একমাত্র যে ঘরে থাকাই করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে আমাদেরকে রক্ষা করতে পারে এটা বোঝাতে হবে।’ ঢাকা/মেহেদী/সাজেদ