গত কয়েকদিনের তাপদাহের পর রাজধানীতে হয়ে গেল স্বস্তির বৃষ্টি। সে সঙ্গে রয়েছে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাত।
বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) বিকেল ৪টা নাগাদ রাজধানীর ধানমন্ডি, মীরপুর, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বৃষ্টির খবর পাওয়া যায়। তবে বৃষ্টির চেয়ে বাতাসের আধিক্য ছিল বেশি।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে সাধারণ ছুটি। এর মধ্যেই একপশলা বৃষ্টি ভিজিয়েছে মাঠ, ঘাট, সড়ক, আঙিনা। আবার বৃষ্টিতে অনেককে ভিজতে দেখা গেছে। সামাজিক দূরত্ব না মেনে অনেকে বৃষ্টিতে ভিজেছেন।
একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে ওই সময় মানুষের হুড়মুড় করে রাস্তায় নেমে পড়ে দুরত্ব লঙ্ঘনের কারণে করোনার ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, নতুন হওয়ায় এখনো করোনাভাইরাস সম্পর্কে কারোরই গভীর ধারণা নেই। গবেষণারও সুযোগ হয়নি। ফলে বৃষ্টিতে এটি টিকে থাকবে না ধ্বংস হবে—সে বিষয়ে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই।
ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞের মতে, এটি বাতাস থেকে মাটিতে পড়ার ফলে ধ্বংস অথবা আরো বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে এটি তার জিন পরিবর্তন করে রূপ বদলাতে পারে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ভাইরলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুলতানা শাহানা বানু রাইজিংবিডেকে বলেন, এতদিন ভাইরাসটি বাতাসে ছিল। বৃষ্টির ফলে এটি মাটিতে ড্রপ করবে। এতদিন গরম ছিল, এখন বৃষ্টি হলো। ফলে ভাইরাসটি পরিবেশগত পরিবর্তন দেখেছে। করোনাভাইরাস তার রূপ পরিবর্তন বা জিনগত পরিবর্তন করে পরিবেশের সঙ্গে অ্যাডপ্ট করতে পারে। যেহেতু ভাইরাসটি নতুন এক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, বৃষ্টির কারণে এটি মারা যাতে পারে অথবা জিন পরিবর্তন করে আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে।
তিনি বলেন, যেহেতু ভাইরাসটি মাটিতে ড্রপ করবে সেহেতু বৃষ্টিতে ভেজা জায়গাগুলোতে যারা চলাচল করবে তাদের পায়ের সঙ্গে লেগে এটি ঘরে আসতে পারে। আবার বৃষ্টির কারণে অনেকে সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। ফলে আগে থেকে যদি কারো শরীরে ভাইরাসটি থাকে তাহলে অন্যের কাছে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়। এজন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
প্রিভেন্টিভ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাস এলো মাত্র তিন মাস হলো। ফলে আমরা এখনো তার চরিত্র বুঝা উঠতে পারিনি। তাই বৈজ্ঞানিকভাবে বৃষ্টির কারণে কী প্রভাব পড়বে তা বুঝা যাচ্ছে না। তবে বৃষ্টির কারণে যারা সামাজিক দূরত্ব মানছেন না তারা ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনছেন। কারণ, করোনাভাইরাস প্রিভেনশনের মূলে হলো একা থাকা। বের হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। লক্ষণ উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করা। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের সব জায়গার মানুষ বিষয়টিকে মানতে পারছেন না।
তিনি বলেন, এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আগামী ১০ থেকে ১৫ দিন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় ভাইরাসটি ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে।
সহায়তার নামে যারা জন সমাগম করছেন তাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে এক প্যাকেট খাবার দেওয়ার জন্য দশ জন জড়ো হয়েছেন। ভিড় করছেন। এতে কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়াতে সহায়তাও করা হচ্ছে। নূর/সাইফ