রাইজিংবিডি স্পেশাল

‘ইউনিক পেশার কারণেই পুলিশ আক্রান্ত’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যেসব পেশার মানুষ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী তাদের মধ্যে অন্যতম। এই বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের হার বেশি।  সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১ হাজার ৪২৯ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।

পুলিশ সদস্য বেশি আক্রান্ত হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে পুলিশের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘পুলিশের পেশাটাই হলো সাধারণ জনগণের সঙ্গে মিশে কাজ করা।  যা অন্য কোনও পেশার মানুষকে করতে হয় না।  মানুষকে বাসায় রাখা, তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে দেওয়া এসবই করতে হচ্ছে মানুষের সংস্পর্শে গিয়ে।  মূলত ইউনিক পেশা হওয়ায় তাদের এসব কাজ করতে হচ্ছে।  এ কারণেই তারা আক্রান্ত বেশি হচ্ছে।’

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার প্রথম থেকেই পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আক্রান্তদের সহযোগিতা,  মানুষকে খাবার পৌঁছে দিচ্ছে পুলিশ।  এসব কাজ করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা অসাবধনতাবশত আক্রান্ত হচ্ছেন।  তবে আমাদের পক্ষ থেকে তারা যেন আক্রান্ত না হন এবং আক্রান্ত হলে দ্রুত যেন সেরে উঠতে পারেন সেজন্য সব ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।  একই সঙ্গে আক্রান্তদের জন্য পুষ্টিকর খাবারও দেওয়া হচ্ছে।’

জানা গেছে, ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ভাইরাসটির প্রার্দুভাবরোধে যানবাহন চলাচল থেকে সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়।  যানবাহনের সংকটের কারণে পুলিশের গাড়িতে করে রোগীদের পৌঁছে দিতে হচ্ছে।  চিকিৎসাও নিশ্চিত করছে।  আসামি গ্রেপ্তারে খুব কাছ থেকে তাকে স্পর্শ করতে হয়।  করোনায় কেউ মারা গেলে তার সৎকার, জানাজা, দাফনে পুলিশই করছে।  পাশপাশি করোনা আক্রান্ত বাড়ি লকডাউন করা, বাড়ির লোকজনকে ঘরে রাখা, রাস্তায় জীবণুনাশক ছিটানো, মোবাইল বা ফেসবুকে কল করলেই তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা।  এছাড়া দ্রব্যমূল্য, কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ, ধর্মীয় কোনো অনুষ্ঠানে ব্যাপক মানুষের সমাগম, গার্মেন্টস কিংবা অন্য পেশার মানুষ যখন বিক্ষোভ করছে তার মাঝে পুলিশকে যেতে হচ্ছে।  এ কারণে তাৎক্ষণিক নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।  আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন অনেকেই।

সবশেষ (৮ মে) তথ্য অনুযায়ী করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যে ১৪২৯ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।  মারা গেছেন ৫ জন।  দেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে।  এর মধ্যে ১০ শতাংশের বেশিই পুলিশ সদস্য।

 

মাকসুদ/সাইফ