রাইজিংবিডি স্পেশাল

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসি’র সহায়তা চাইলো বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এ রোহিঙ্গা-গণহত্যার মামলা পরিচালনা সভায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) বিষয়টি উপস্থাপন করেন।

সৌদি আরবের রিয়াদে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা সম্পর্কিত ওআইসি’র অ্যাডহক মন্ত্রিসভা কমিটির ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এক পরামর্শমূলক সভায় রাষ্ট্রদূত এ আহ্বান জানান। আদালতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা পরিচালনার জন্য ওআইসি এবং এর সদস্য দেশগুলোর কাছে তহবিল গঠনে সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

এতে বাংলাদেশ, তুরস্ক, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান ও জিবুতির স্থায়ী প্রতিনিধি এবং ওআইসির মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রদূত ওআইসির মহাসচিবকে আইসিজে মামলায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে সবার সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের এ সমস্যা অনির্দিষ্টকালের জন্য চলতে পারে না এবং গণহত্যার দায়ে দোষীরা শাস্তি এড়াতে পারে না।

ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন রোহিঙ্গাদের দুর্দশার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবহিত করেন। ওআইসি মহাসচিব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া ও তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।

মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন আইসিজেতে মামলা পরিচালনা করার ব্যয়ভার বহন করার জন্য যারা ইতিমধ্যে তহবিলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাদের প্রশংসা করেন।

তিনি অন্য সদস্য দেশগুলোকে মানবাধিকার রক্ষায় এ মামলায় সহায়তা করার আহ্বান জানান। সভায় অংশগ্রহণকারীরা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সমর্থনের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন।

এর আগে ওআইসি মহাসচিবের কাছে ক্রেডেনশিয়াল পেশ করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। সৌদি আরবে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী গত ২৮ সেপ্টেম্বর ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিনের কাছে তার ক্রেডেনশিয়াল পেশ করেন। রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ওআইসি’র বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

বাংলাদেশকে ওআইসি’র সক্রিয় সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে মহাসচিব বাংলাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ করেন, যা সংস্থাটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সাহায্য করবে।

এ ছাড়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ওআইসি’র সদস্যভুক্ত নাগরিকদের বৃত্তির তথ্য প্রদানের অনুরোধ করা হয়, যা ওআইসি’র ডাটাবেজে প্রকাশ করা হবে।

বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেল হিসেবে প্রশংসা করে মহাসচিব বলেন, এ সফলতা অর্জনে বাংলাদেশের জন্য ওআইসি গর্বিত।

বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্মভূমিতে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন ও আইসিজেতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ওআইসি সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন মহাসচিব।