রাইজিংবিডি স্পেশাল

করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু কমলেও অস্বস্তি কমেনি

কয়েকদিন ধরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিম্নমুখী হলেও এতে স্বস্তির কারণ দেখছেন না স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ভাইরাস কিংবা মানুষের আচরণে পরিবর্তনের কারণে আবার যেকোনো সময় দেখা দিতে পারে সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি। তাই, স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলা জরুরি।

সপ্তাহখানেক হলো দেশের করোনার সংক্রমণের হার কিছুটা নিম্নমুখী। কমছে মৃত‌্যুও। ভ‌্যাকসিনেশন কার্যক্রম জোরদার হচ্ছে। তবু, স্বাস্থ্য বিভাগ বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে।

তবে, এ ধারাকে স্থায়ী সমাধান বলতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, বেশিরভাগ মানুষকে টিকার আওতায় এনেও পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ইউরোপ-আমেরিকার অনেক দেশ। তাই, ভাইরাসের আচরণ পরিবর্তনের ফলে বাড়তে পারে সংক্রমণ। এছাড়া, মানুষের আচরণ সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। তাই, জীবনধারায় পরিবর্তন আনা দরকার। তা না হলে আবারও বদলে যেতে পারে গোটা বিশ্বসহ আমাদের দেশের দৃশ্যপট।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেছেন, ‘দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন, তাদের অধিকাংশই আসলে পুনঃসংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি মোকাবিলা করছেন। মনে করি না, সব মিলিয়ে আসলে আমরা পরিপূর্ণ স্বস্তিতে থাকার মতো অবস্থায় আছি। অনেকেই মনে করছেন, এই ভাইরাসটি কখনোই নির্মূল করা যাবে না। এটা ঠিক। তাই, এর সঙ্গে সহাবস্থানে যেতে হবে। জীবনাচারে আমাদের কৌশলগত পরিবর্তন আনতে হবে।’    

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেছেন, ‘টিকা নিতে হবে সবাইকে। তারপরও মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। যারা টিকা নেননি বা টিকা নেওয়ার উদ্যোগ নেননি বা বয়স হয়নি বা অপেক্ষমান আছেন, তাদেরকেও মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। এটি চলমান প্রক্রিয়া। এ ব্যাপারে কোনোভাবেই শিথিলতা দেখানো যাবে না। সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।'

স্বাস্থ‌্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি সংক্রমণ ও প্রাণহানি কমাতে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে আরও গতি বাড়ানোর কথা বলছে উভয় পক্ষ। এদিকে, মহামারি করোনার ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সারা বিশ্ব। করোনার নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের কাছে বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর স্বাস্থ‌্যব‌্যবস্থাও ধরাশায়ী হয়ে পড়ছে ক্রমশ।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মারা গেছেন আরও ৭ হাজার ৪২৫ জন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৪ লাখ ৫১ হাজার ৪৭৪ জন। এ নিয়ে বিশ্বে এখন পর্যন্ত মোট করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৪৫ লাখ ১৪ হাজার ৩২৮ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ২১ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৫৬ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ কোটি ৪০ লাখ ৬৩ হাজার ৪৪০ জন।