রাইজিংবিডি স্পেশাল

মশা মারতে ‘বিশেষ নৌকা’

দীর্ঘদিন জলাশয় মশামুক্ত করতে ম্যালেরিয়া অয়েল ব্যবহার করলেও ভরা কচুরিপানার কারণে ওষুধ কাজ করছিল না। ফলে দিন দিন মশার প্রজনন বাড়ছিল। এজন্য জলাশয়ের খুব কাছে গিয়ে মশার প্রজনন স্থান কচুরিপানা পরিষ্কার করা হবে। পাশাপাশি, মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ এক ধরনের ফাইবার গ্লাসের তৈরি ৩০টি নৌকা কিনেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। প্রতিটি নৌকার দাম পড়েছে ১৮ হাজার টাকা। এই নৌকায় করে বদ্ধ জলাশয়ের মাঝে গিয়ে কচুরিপানা বিনাশ করা হচ্ছে।  

রাজধানীতে প্রতিদিন মশার কামড়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। ইতোমধ্যে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ২০ জন। সারাদেশের আক্রান্তের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ রোগীই ঢাকার। এ শহরেই রয়েছে অসংখ্য খাল-বিল-জলাশয়। চারপাশ দখল, নদী শাসনসহ নানাবিধ কারণে এসব জলাশয়ে পানিপ্রবাহ নেই বললেই চলে। যার কারণে স্বাভাবিক নিয়মে এসব খাল-বিল আর জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা জন্মাচ্ছে। একসময় এসব কচুরিপানায় জন্মবিস্তার করে মশা। 

ঢাকার অনেক খাল দখল হয়ে গেলেও পুরোপুরি হয়নি এরকম অনেক রয়েছে। যার বেশিরভাগই ডিএনসিসি’র এলাকায়। সেসব খাল-বিলসহ জলাশয়গুলো উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে ডিএনসিসি। দীর্ঘদিন এসব জলাশয়ে মশার প্রজনন বাড়ায় আশপাশে বসবাসরত নাগরিকরা প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছিল মশাবাহিত বিভিন্ন রোগে, বিশেষ করে ডেঙ্গুতে।

খাল-বিল-জলাশয়ে থাকা কচুরিপানা ধ্বংস এবং এর মধ্যে জন্ম নেওয়া মশা মারার বিষয়ে ডিএনসিরি প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, ডিএনসিসি এলাকায় অনেক খাল-বিল ও জলাশয় রয়েছে। এ ছাড়া বেশকিছু পরিত্যক্ত জায়গাও রয়েছে। যেখানে বছরের প্রায় পুরোটা সময় পানি আটকে থাকে। এসব পানি চলাচলের কোনও ব্যবস্থা না থাকার কারণে এসব জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা জন্মায়। এসব নিয়মিত আমরা পরিষ্কার করলেও জন্মায়। এবার নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ৩০টি নৌকা কেনা হয়েছে। ডিএনসিসি ১০টি অঞ্চলের প্রতিটিতে তিনটি করে নৌকা দেওয়া হয়েছে। যাতে চড়ে জলাশয়ের গভীরে গিয়ে পরিষ্কার ও মশার ওষুধ ছিটাতে পারে। 

ডিএনসিসির এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, ডিএনসিসি এলাকায় এমন অনেকগুলো জলাশয় বা জায়গা রয়েছে- যেখানে জলাবদ্ধতা রয়েছে। সে পানির পরিমাণও আবার কম। যে পানিতে নৌকা চলারও অবস্থা নেই। এরকম স্থানগুলো খুঁজে আমরা সেসব জায়গায় হার্বিসাইড নামে এক ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করছি। প্রতি দশ লিটার পানিতে ১২ থেকে ১৫ মিলিলিটার হার্বিসাইড মিশিয়ে স্প্রের মাধ্যমে ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাতে কচুরিপানা মরে যাচ্ছে। ডিএনসিসির আওতাধীন মোট জলাশয়ের প্রায় ২০ শতাংশ জায়গায় ইতোমধ্যে এ কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে। যার মধ্যে বাড্ডা খাল, সাঁতারকুল খাল ও বসিলার রামচন্দ্রপুর খাল রয়েছে।