মোঃ মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : এখন জ্যৈষ্ঠ মাস। চারদিকে পাকা ফলের ঘ্রাণ। পাহাড় আর বনাঞ্চল ও হাওর অধ্যুষিত হবিগঞ্জে এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে জাতীয় ফল কাঁঠালের। আনন্দে ভাসছে পাহাড়িরা। পাহাড়ি টিলা আর সমতল থেকে কাঁঠাল আসছে পাইকারি বাজারে। চলছে কাঁঠাল বেঁচা-কেনার ধূম। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সুস্বাদু এ কাঁঠাল ক্রয়ের জন্য ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন ফলের বাজারে। সৌদিআবরসহ ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েটি দেশে রফতানি হচ্ছে হবিগঞ্জের পাহাড়ে উৎপাদিত এই কাঁঠাল।
হবিগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে অনেক কাঁঠালের বাগান। কেবল তাই নয়, বাড়ির আঙিনা আর রাস্তার পাশেও কাঁঠাল গাছের ছড়াছড়ি। নবীগঞ্জ, চুনারুঘাট, মাধবপুর ও বাহুবলের পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার আসছে এখানের সবচেয়ে বড় পাইকারী বাজার বাহুবলের মুছাই ও চুনারুঘাটের চন্ডিছড়ার বাজারে। এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি আড়ত। আড়তে প্রতিটি কাঁঠাল ৫০ থেকে শুরু করে ২০০ টাকা হিসেবে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি হয়। ছোট আকারের কাঁঠাল প্রতি শ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০টাকা করে।
পাইকাররা এসব বাজার থেকে ট্রাক ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যান। আর এরমধ্য থেকে কিছু পরিমাণে বাছাই করা কাঁঠাল যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে বলে স্থানীয় আড়ৎদার, কৃষক ও কৃষিবিভাগ জানিয়েছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর হবিগঞ্জে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার প্রায় ১৪ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল উৎপাদন করা হয়েছে। উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৯২৮৯ হাজার মেট্রিক টন।
মুছাই’র ফলের আড়ত এর মালিক সফিকুর রহমান জানান, এ বছর কাঁঠালের ভাল ফলন হয়েছে। দামও ভাল। এতে করে কৃষকদের মাঝে উৎসাহ দেখা দিয়েছে।
হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ শাহ আলম জানান, সরকারিভাবে কাঁঠালের ফলন বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কৃষকদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর। কাঁঠাল উৎপাদন করলে একই সঙ্গে ফসল এবং কাঠ পাওয়া যায়। কাঁঠাল গাছের পাতা থেকে শুরু করে কাঁঠালের প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায় বলে অন্যান্য ফলের তুলনায় এটি লাভজনক। এছাড়া তেমন যত্নের প্রয়োজন হয় না। একটি গাছ বহু বছর পর্যন্ত ফলন দেয়। তবে বন্যা মুক্ত এলাকায় কাঁঠালের বাগান করা উচিত। কারণ দীর্ঘদিন এই গাছ পানি সহ্য করতে পারে না।
রাইজিংবিডি/ হবিগঞ্জ/২৮ মে ২০১৫/মামুন/টিপু