সালতামামি ২০১৬

রোমেনার শেল্টার-এ নারীর অগ্রগতি

ফয়সাল আহমেদ, ঝিনাইদহ : ২০০৪ সালে মাত্র ২০ গজ কাপড়, একটি সেলাই মেশিন আর একজন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু। আজ শতাধিক নারী নিয়মিত কাজ করছে সেখানে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের গৃহবধূ রোমেনা বেগমের ‘শেল্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থা’ এখন অনেক নারীর অগ্রগতির ঠিকানা।

 

গৃহবধূ রোমেনা তার ‘শেল্টার’ এর শুরুটা মাত্র ২০ গজ কাপড় দিয়ে শুরু করলেও ২০১০ সালে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তাদের কাজ দেখে ১০ হাজার টাকা অনুদানও দেয়। এই অনুদানে উদ্যোগ ও মনোবল দুই-ই দ্বিগুণ বেড়ে যায় তার। বিভিন্ন বাজার ঘুরে নিজের চেষ্টায় শুরু করেন ডিজাইন সংগ্রহ। তৈরি করেন থ্রিপিচ, শাড়ি, নকশীকাঁথা, বেডশিট, বাচ্চাদের পোশাক, কাঁথা ও সোফার কুশন।

 

এভাবেই ক্ষুদ্র পরিসর থেকে শুরু করে আজ শতাধিক নারী নিয়মিত কাজ করছে সেখানে। তাদের সাথে জড়িত হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েক’শ বেকার নারী। এখান থেকে ১০০ জন নারীকে দেওয়া হয়েছে দর্জিবিজ্ঞানে প্রশিক্ষণ, যারা আজ স্বাবলম্বী।

 

ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মিম্মা খাতুন জানান, তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি অবসর সময়ে কাজ করে সংসারেও কিছু অর্থনৈতিক সহযোগীতা করছেন।

 

আরিফুুন্নেছা নামের আরেক কর্মী জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করে  সন্তানের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন।

   

এ ছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানের প্রথম কর্মী সখিনা খাতুন জানান, তিনি দশ বছর আগে এখানে এসেছেন। তার কাজের আয় থেকে সঞ্চয়ে শহরের লক্ষীকোল এলাকায় দুই শতক জমি কিনে বাড়ি করেছেন।

 

সুলতানা  পারভিন নামের এক ক্রেতা জানান, শহরের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সকল মালামালের মান ভাল, দামও কম, ফলে বেচাকেনাও হয় বেশি, ভিড় লেগেই থাকে।

 

শেল্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার স্বত্বাধিকারী রোমেনা বেগম বলেন, ‘সরকার নারীদের উন্নয়নে কাজ করে গেলেও যতদিন বেসরকারী উদ্যোগে কাজ করা হবে না ততদিন নারীরা অবহেলিতই রয়ে যাবে।’ তাই সরকারের সাহায্যে পেলে এই প্রতিষ্ঠানটি আরও বড় করে এলাকার বেকার নারীদের আরো বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

 

‘সমাজে নিজের পরিচয়ে আত্মসম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাক নারীরা’- এই স্লোগানে বিশ্বাসী তিনি।

   

রাইজিংবিডি/ ঝিনাইদহ/২৮ নভেম্বর ২০১৫/ফয়সাল/ টিপু