সালতামামি ২০১৬

কেঁচো সারে ভাগ্যবদল

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি গ্রামের বাসিন্দা শাহ আলম এবং তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের দুঃখ ঘুচিয়েছে তাদের তৈরি ভার্মি কমপোস্ট বা কেঁচো সার।শনিবার রাজধানীর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ব্যাংকিং মেলার শেষ দিনে তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

 

শাহ আলম বলেন, এই সার উৎপাদন করে আমরা জীবনের খারাপ দিনগুলোকে পেছনে ফেলে এসেছি।এই সার উৎপাদন এবং বাজারজাত করে আমরা এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।

 

মমতাজ বেগম জানান, তারা ভার্মি কমপোস্ট সার সম্পর্কে প্রথমে সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন। পরে মানিকগঞ্জ কৃষি অফিসে এই সার উৎপাদন সম্পর্কে প্রশিক্ষণ নেন।তারপর তারা এই সার উৎপাদন শুরু করেন।

 

এই সার উৎপাদনে প্রয়োজন- গোবর এবং কেঁচো। এই সার পরিবেশবান্ধব। মাটির উর্বরতা রক্ষায় এটি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে বলে জানান মমতাজ বেগম।

 

ওই দম্পতি জানায়, তারা গত বছর নভেম্বর মাসে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে ৫৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই সার উৎপাদন শুরু করেন। পরবর্তীতে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে  ব্যাংক আরো আর্থিক সহযোগিতা করে।

 

তারা জানান, কেঁচো উৎপাদনের জন্য মাত্র ১৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেও এখন তারা পাঁচ লাখ টাকার মালিক।আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিনিয়োগ ও মূলধন হবে ২৫ লাখ টাকা। বর্তমানে তাদের খামারে চারজন লোক কাজ করছেন।তাদের মাসে ৬ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়।

 

শাহ আলম আশা প্রকাশ করেন, আগামী মাসের মধ্যে প্রতিদিন চার মণ করে সার উৎপাদন করা সম্ভব। সরকারি সহযোগিতা পেলে তারা দৈনিক ৪০০ মণ সার উৎপাদন করতে পারবেন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অনেক লোক প্রতিদিন তাদের এই খামার পরিদর্শন করতে আসেন বলে জানান শাহ আলম ও মমতাজ।

 

শাহ আলম আরো জানান, তারা রাজশাহী জেলার প্রতিটি গ্রামে ১০ জন নারীকে এই সার উৎপাদন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন।

 

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আয়োজনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী ব্যাংকিং মেলার আজকেই (২৮ নভেম্বর) শেষ দিন। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলে। এটা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত।

 

মেলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ছাড়াও দেশি-বিদেশি ৫৬টি ব্যাংক, ৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ৭টি আর্থিক সেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।দর্শণার্থীদের জন্য মেলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক শিক্ষা, টাকা জাদুঘর, বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস (টাকা তৈরির মেশিন), বিভিন্ন প্রকাশনা, স্মারক মুদ্রা ও নোট ক্রয়, জনসাধারণের জন্য সেবা ও অভিযোগ কেন্দ্র খোলা রয়েছে।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ নভেম্বর ২০১৫/মামুন/রফিক