বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় থারমাল সোলার প্লান্ট

ইবনে মিজান : সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন এর কথা সবাই জানে। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও সৌরশক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুাৎ অর্থাৎ সোলার প্যানেলের ব্যবহার বেড়েছে। বিশেষ করে যেসব জায়গায় বিদ্যুৎ সুবিধা নেই সেসব জায়গায় সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ সুবিধা পাওয়া যায়।

 

সম্প্রতি মরক্কো’র ধু ধু মরুর বুকে বানানো হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক অংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্রিয় করে উদ্বোধন করেছেন মরক্কোর রাজা। আশা করা হচ্ছে, এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিজস্ব চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ইউরোপে রপ্তানিও করা যাবে। নবায়নযোগ্য শক্তিকে ব্যবহার করে উৎপাদন করা হচ্ছে বিদ্যুৎ।

 

সবাই আশাবাদী সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক অংশই সক্রিয়ভাবে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। মরক্কো মধ্যবর্তী ঔঅর্জাজাতে শহরের কাছেই এই সোলার প্লান্টটি স্থাপন করা হয়েছে। প্রচলিত ফটো ভোল্টাইক সোলার প্যানেল ব্যবাহার না করে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে আধুনিক সোলার থারমাল প্রযুক্তি।

 

সোলার থারমাল প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ধরনের আয়না, যা সবসময় সূর্যের আলোর দিকে স্বয়ংক্রিয় মুখ করে থাকে। সূর্যের আলোকে কেঁদ্রীভূত করে এর ওপরে থাকা পাইপের ভিতরের তরলকে উত্তপ্ত করে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করার জন্য এই উত্তপ্ত তরল দিয়ে বানানো বাষ্প টার্বাইনকে শক্তি যোগায়।

 

এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা হল এই তরল সল্ট গলানোর কাজে লাগানো হয় এবং শক্তিকে ধরে রাখা, এছাড়াও সূর্যের আলোর অনুপস্থিতেও শক্তি উৎপাদন করতে পারে।

 

৩০ বর্গ কিলোমিটারের এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যে অংশে থেকে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে সেই অংশের নাম নুর-১। আশা করা হচ্ছে এই অংশের উৎপাদিত বিদ্যুৎ ১০ লক্ষাধিক ঘরে পৌঁছানো যাবে। এবং সূর্যের আলো না থাকলেও ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে।

 

২০১৮ সালের মধ্যে যখন এই সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র পুরোপুরি সক্রিয় থাকবে তখন ৫৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে সক্ষম হবে। আর সেই অবস্থায় দিনে ২০ ঘণ্টা একটানা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারবে। সূর্যের আলোকে কাজে লাগিয়েই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে তেলকে প্রচণ্ড উত্তপ্ত করতে পারে, আর ৫০০° সেলসিয়াসে সল্ট গলাতে সক্ষম। যা পরবর্তীতে বড় বড় টাংকিতে সংরক্ষণ করা হয়।

 

মরক্কোর পরিকল্পনা ২০২০ সালের মধ্যে মধ্যে তারা ৪২ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করবে। যার এক তৃতীয় অংশ আসে সৌর, বাতাস ও জলবিদ্যুৎ থেকে। মরক্কো আশা করে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা ৫২ শতাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করবে।

 

এই সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্তমান তহবিল ৩.৯ বিলিয়ন ডলার। এই অর্থের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে জার্মান বিনিয়োগ ব্যাংক এবং ৪০০ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/ফিরোজ