বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্যানসার প্রতিরোধক ডিম পাড়বে মুরগি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ার ভয়ে অনেকেই বেশি পরিমাণে ডিম খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকেন। কিন্তু বিষয়টি কেমন হবে যদি ডিমে ক্যানসার, হিপাটাইসিস এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধের স্বাস্থ্যগত সুবিধা থাকে? জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এআইএসটি) গবেষকরা সম্প্রতি সফলভাবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং মুরগি তৈরি করেছেন (জীববিজ্ঞানের কেবলমাত্র এ শাখাটিতেই নিজের ইচ্ছামতো ডিজাইন করে উন্নত বৈশিষ্ট্যধারী উদ্ভিদ ও প্রাণী সৃষ্টি করা যায়), যা বিশেষ ফার্মাসিটিক্যাল এজেন্ট সমৃদ্ধ ডিম পাড়বে। জাপান নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এআইএসটির গবেষকরা মুরগির শুক্রাণুর প্রিকারসর সেল জেনেটিক্যালি সংশোধন করেছেন, যা ইন্টারফেরন বেটা নামক ইমিউন সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত বিশেষ প্রোটিন তৈরি করে। এই প্রোটিন ত্বকের মারাত্মক ক্যানসার এবং হেপাটাইসিস চিকিৎসায় কার্যকরী হিসেবে পরিচিত। পরিবর্তিত কোষগুলো ডিমের উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা ছেলে মুরগির বাচ্চা জন্ম দেয়। ছেলে মুরগির বাচ্চাগুলোর কয়েক ধাপের ক্রস প্রজননের মাধ্যমে মেয়ে মুরগিতে প্রবেশ করে, যা জিনগত উত্তরাধিকার ভাবে ইন্টারফেরন বেটা প্রাপ্ত হয়। এআইএসটি এবং ন্যাশনাল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড রিসার্স অর্গানাইজেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই মেথডটি ডেভেলপ করেছে টোকিওর রিগেন্ট ইমপোর্ট অ্যান্ড সেলস ফার্ম কসমো বায়ো কোম্পানি। বর্তমানে এ ধরনের ৩টি মুরগি সৃষ্টি করা হয়েছে, মুরগিগুলো প্রতি এক দিন বা দুইদিনে ডিম পাড়ে। কেন এ ধরনের একটি প্রক্রিয়া তৈরি করতে হলো? প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল সম্ভাব্য এসব রোগের ওষুধ তৈরির খরচ কমানো। জাপান নিউজকে ওসাকা ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক হিরনবু ওজো বলেন, ‘এটি এমন একটি ফলাফল, যা আমাদেরকে দেখাচ্ছে যে আমরা স্বল্প ব্যয়ে ওষুধ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে, ডিমগুলোতে থাকা এজেন্টদের বৈশিষ্ট্যগুলো ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ফার্মাসিটিক্যাল পণ্য হিসেবে নিরাপত্তা নির্ধারণ করতে হবে।’ এটি একটি উদাহারণ মাত্র যে, কিভাবে জিন এডিটিং মেথডগুলো পুনর্নির্মাণ করতে পারে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য সেবায়। অন্য গবেষকরা জিন এডিটিং যেমন সিআরআইএসপি সরাসরি ক্যানসার কোষে অথবা রোগের ওপর প্রয়োগে কাজ করছেন। তবে মুরগির ডিমকে স্বল্প ব্যায়ের ওষুধ হিসেবে উৎপাদন করাটা এক্ষেত্রে আরো একটি সম্ভাবনা। অর্থাৎ ক্যানসারের ব্যয়বহুল ওষুধ সেবনের পরিবর্তে যদি ক্যানসার প্রতিরোধক ডিম খাওয়াতেই সে কাজ হয়, তাহলে চিকিৎসা ব্যয় কমবে। ভবিষ্যতে এআইএসটির গবেষকরা ডিমের মধ্যে ইন্টারফেরন বেটা স্থায়ী ভাবে বিদ্যামান রাখার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন, যাতে একটি ডিমের মধ্যেই কয়েক ডজন মিলিগ্রাম থেকে ১০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ইন্টারফেরন বেটা উৎপাদন হতে পারে। তথ্যসূত্র : ফিউচারিজম রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ অক্টোবর ২০১৭/ফিরোজ