বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অ্যাপিকটায় ১৫ অ্যাওয়ার্ড জিতল বাংলাদেশ

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : এশিয় প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের আইসিটি ‘অস্কার’ খ্যাত অ্যাপিকটায় বাংলাদেশ ১টি উইনার অ্যাওয়ার্ড এবং ১৪টি মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। রোববার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডসের সমাপনী অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। ই-লার্নিং ক্যাটাগরিতে উইনার অর্থাৎ শীর্ষ অ্যাওয়ার্ড জিতেছে বাংলাদেশের টেন মিনিট স্কুল প্রকল্প। এছাড়া ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম, ব্লাইন্ড আই অ্যাপ, ট্রেনলাইনের ত্রুটি খোঁজার সিস্টেম, বায়োস্কোপ, রিটজ ব্রাউজার, স্মার্টসেলস, প্রিজম ইপিআর, রিভ অ্যান্টিভাইরাস, সিকিউওয়াল, বলতে চাই, অগমেডিক্স, বিনো, অটিজম বার্তা মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। শীর্ষ অ্যাওয়ার্ডের প্রাপ্তের খুব কাছাকাছি নম্বর হলে সে প্রকল্পকে মেরিট পুরস্কার দেওয়া হয়। এবারে সবচেয়ে বেশি উইনার পুরস্কার পেয়েছে হংকং। ৪টি উইনার পুরস্কার ও ৫টি মেরিট পুরস্কার পেয়েছে দেশটি। এরপর শ্রীলঙ্কা, ৩টি উইনার অ্যাওয়ার্ড ও ৬টি মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। ১৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস অনুষ্ঠিত হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর যৌথ উদ্যোগে ৭-১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বসে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডের ১৭তম আসর। এতে অংশ নেয় অ্যাপিকটাভুক্ত ১৬টি দেশ- অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনেই দারুসসালাম, চীন, চীনা তাইপে, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বৃহত্তম সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক আইসিটি অ্যালায়েন্স (অ্যাপিকটা), এই অঞ্চলের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি সম্ভাবনাময় ও সফল উদ্যোগ, সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সেবার স্বীকৃতি দিতে প্রতিবছর অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডসের আয়োজন করে থাকে। ২০১৫ সালে বেসিস অ্যাপিকটার সদস্যপদ লাভ করে। সদস্য পদ লাভের দুই বছরের মাথায় বাংলাদেশ এবার এই অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজক হতে পেরেছে। বাংলাদেশ নবীনতম সদস্য হিসেবে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস আয়োজন অ্যাপিকটার ইতিহাসে প্রথম। এবারের ‘১৭তম অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ঢাকা ২০১৭’ আসরে ৩৬৬ জন বিদেশি প্রতিযোগী ১৭টি ক্যাটাগরিতে ১৪১টি প্রকল্প জমা দেন। বাংলাদেশ থেকে ১৬৬ জন প্রতিযোগী ৪৭টি প্রকল্প নিয়ে অংশ নেন। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১৭টি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের হাতে উইনার অ্যাওয়ার্ড তুলে দেয়া হয়। এছাড়া ৪৯টি মেরিট অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বনমালী ভৌমিক, বেসিস সভাপতি মোস্তাফা জব্বার এবং বেসিসের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও ১৭তম অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস ঢাকা ২০১৭ এর আহবায়ক রাসেল টি আহমেদ। অ্যাপিকটা সদস্য হওয়ার মাত্র দুই বছরের মধ্যে অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস সফলভাবে আয়োজন করায় অর্থমন্ত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ আইসিটি খাতে সমগ্র বিশ্বে উদীয়মান শক্তি হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। অ্যাপিকটাভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ও আগামীতে রাখবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, অ্যাপিকটা অ্যাওয়ার্ডস আয়োজনের মাধ্যমে সদস্যদেশগুলোর সঙ্গে আইসিটি খাতে বাণিজ্যের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ  হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাতে পেরেছেন। তাদের মনে আশার সঞ্চার করেছেন। যে কারণে মাত্র ১৩ বছরের মধ্যে দেশকে একটি প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির দিকে নিতে সক্ষম স্বপ্ন দেখেছি আমরা। ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও অধিক রপ্তানি আয় করতে সক্ষম হয়েছি। ২০১৮ সাল নাগাদ বেসিসের ওয়ান বাংলাদেশ ভিশনের অন্যতম লক্ষ্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয় করতে চাই। অ্যাপিকটাভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ ডিসেম্বর ২০১৭/ফিরোজ