বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এআই ভীতি দূর করতে সিলিকন ভ্যালি-চীন

মোখলেছুর রহমান : প্রথম চীনা কোম্পানি হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) সম্পর্কিত মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদান করল বাইদু। সিলিকন ভ্যালির বড় বড় সকল প্রযুক্তি কোম্পানিই এই জোটের সদস্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উন্নয়ন ও ব্যবহারের বিষয়ে উদ্বেগ কমাতে ২০১৬ সালে এই জোট গঠিত হয়েছিল। শিক্ষাবিদ ও নীতিশাস্ত্র বিশেষজ্ঞদেরকে সঙ্গে নিয়ে মার্কিন শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফেসবুক, অ্যামাজন, গুগল, মাইক্রোসফট এবং আইবিএম এই জোটের গোড়াপত্তন করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারকে নিশ্চিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সম্পর্কিত যে ভয়টি সবচেয়ে বেশি মানুষের মনে কাজ করছে তা হলো, ভবিষ্যতে হয়তো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত মেশিনগুলো মানুষের চেয়ে বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যেই সতর্ক করে দিয়েছেন যে দুর্বৃত্তরা, অপরাধী ও সন্ত্রাসীরা ড্রোন ও অন্যান্য স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারে যা বিশ্বজুড়ে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তারপরও এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে দ্রুত জড়িয়ে পড়ছে। আমরা বিভিন্ন কাজে এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। এটি ইতোমধ্যে গুদাম শ্রমিকদের কাজ দখল করে নিয়েছে, চালকহীন গাড়ির সূচনা করেছে এবং অসুস্থতার নির্ণয় করতে সহায়তা করছে। আর এক্ষেত্রে চীন অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে, যা পশ্চিমা বিশ্ব উপেক্ষা করতে পারছে না। জোটটির নির্বাহী পরিচালক তেরাহ লিয়ন্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের জোটে প্রথম চীনা সদস্য হিসেবে বাইদুর এই যোগদান বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ চীনের সর্ববৃহৎ সার্চ ইঞ্জিন ‘বাইদু’ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেক্টরে নিজেদের একটি দৃঢ় অবস্থান তৈরি করতে কাজ করছে। গত বছর সিএনএন-এর সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে বাইডু সিইও রবিন লি জানান, ২০১২ সাল থেকে কোম্পানিটি আধুনিক প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ শুরু করে। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির এক নতুন সম্ভাবনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এটি বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন করতে যাচ্ছে এবং আমরা তার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে চাই।’ বাইদুর চালকবিহীন গাড়ির প্রজেক্টি আংশিকভাবে সিলিকন ভ্যালির প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইতিমধ্যেই এই প্রজেক্ট ফোর্ড এবং বিএমডাব্লিউ এর মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোকে আকৃষ্ট করেছে। চীনা সরকারও চীনকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। বেইজিং গত বছর প্রায় ১৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিল্প গড়ে তোলার প্রকল্প হাতে নেয়। তথ্যসূত্র: সিএনএন রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ অক্টোবর ২০১৮/ফিরোজ