বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৫০ বছর পর পৃথিবী দেখতে যেমন হবে

আহমেদ শরীফ : কল্পনা করুন তো- ৫০ বছর পর ২০৬৯ সালে প্রযুক্তির মাধ্যমে কতোটা উন্নত হবে পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো। প্রযুক্তির অগ্রগতিতে পাল্টে যেতে পারে পৃথিবীর চিত্র। মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এর পক্ষ থেকে এক রিপোর্টে তেমনটাই জানিয়েছেন গবেষকরা।

পানির নিচে হাইওয়ে গড়ে তোলা, উড়ন্ত বোর্ডে চড়ে বিভিন্ন ধরনের খেলা, মহাকাশে অবকাশ যাপন- আগামী ৫০ বছর পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এমন দৃশ্যই দেখা যাবে। রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, মানুষের শরীর নিয়ে গবেষণায় ব্যাপক হারে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ থ্রিডি প্রিন্ট করা হবে, ইমপ্লান্ট করা হবে। এছাড়া আমাদের বাড়ি ঘরগুলো নিজেরাই নিজেদের পরিষ্কার করতে পারবে।

ভবিষ্যত নিয়ে গবেষণা করা একদল গবেষক এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। তাদের মধ্যে আছেন টেক ইউকে, ইনস্টিটিউট অব কোডিং জ্যাকুলিন ডি রোজাস, রয়াল একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিং এর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান স্যামসাং এর পৃষ্ঠপোষকতায় লন্ডনে এই গবেষণা রিপোর্টটি প্রকাশ হয়।

‘স্যামসাং কেএক্স ফিফটি: দ্য ফিউচার ইন ফোকাস’ নামের এই রিপোর্টে বলা হয়, ২০৬৯ সালের মধ্যে বিশ্বে যাতায়াত ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। বৃটেন, ইউরোপের কিছু দেশ ও পৃথিবীর আরো কয়েকটি দেশে আন্ডারওয়াটার টিউব ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা চালু হবে। সেখানে হাই স্পিড পডে করে ভ্রমণকারীরা এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাবে এক ঘণ্টারও কম সময়ে। যানজটের সমস্যা এড়াতে বিশ্বের বড় সব সিটিতে উড়ন্ত ট্যাক্সি ও বাস দেখা যাবে। আর বিশ্বের দূরবর্তী এলাকাগুলোতে যোগাযোগের জন্য পুনরায় ব্যবহারযোগ্য রকেট ব্যবহার করা হবে। এতে লন্ডন থেকে নিউইয়র্কে যাওয়া যাবে ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে। চিকিৎসায় ভার্চুয়াল সেবা সহজলভ্য হয়ে যাবে। মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যাপক হারে থ্রিডি প্রিন্ট করা হবে, যা জরুরি ভিত্তিতে প্রতিস্থাপন করা যাবে।

রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রোটিনের অন্যতম উৎস হবে পোকামাকড়। ভবিষ্যতের কিচেনগুলোতে পোকামাকড় সংরক্ষণের ব্যবস্থাও থাকবে। ভবিষ্যতে বহুতল ভবনের নিচের অংশ মাটির অনেক নিচেও বিস্তৃত হবে। অর্থাৎ মাটির উপরে যতো উঁচু ভবন থাকবে, অনেকটা ততো দীর্ঘই থাকবে মাটির নিচে। সেই ভূগর্ভস্থ অংশ ভূমিকম্প সহনশীল হবে।

ভবিষ্যতে কোন প্রযুক্তির বাস্তবায়ন দেখতে চান, এই রিপোর্টের সঙ্গে জড়িতরা বৃটিশদের মাঝে তারও একটি জরিপ চালিয়েছে। এতে ৬৩ শতাংশ বৃটিশ জানিয়েছেন, রোবট প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার বিষয়টি তারা চান সবার আগে। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি ঘটাতে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দ্রুত প্রতিস্থাপন করা আর উড়ন্ত ট্যাক্সি ও বাসের ব্যাপারেও আগ্রহী বৃটিশরা।

স্যামসাং শো কেস কে এক্সের পরিচালক তানিয়া ওয়েলার বলেন, ‘আমরা এখন প্রযুক্তির সহায়তায় যেভাবে জীবনযাপন করছি, ভ্রমণ করছি, ৫০ বছর আগে তা চিন্তাও করতে পারিনি। স্যামসাং সব সময় ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করা এক কোম্পানি। ব্র্যান্ড হিসেবে ভবিষ্যতের মানুষের জন্য প্রডাক্টটই তৈরি করি না আমরা, বরং ভবিষ্যতে কিভাবে মানুষ প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে আরো অগ্রসর হবে, সে লক্ষ্যেও কাজ করছি আমরা।’

তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ সেপ্টেম্বর ২০১৯/ফিরোজ