বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মঙ্গলে যাচ্ছে নাসার উচ্চ প্রযুক্তির নভোযান

মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির মার্স টুয়েন্টি টুয়েন্টি রোভার মঙ্গল গ্রহে যাচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এক লেজার যন্ত্র নিয়ে। এই নভোযানটিতে ‘সুপার ক্যাম’ নামের প্রযুক্তি জুড়ে দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলে আগে পাঠানো কিউরিসিটি রোভারের চেমক্যামের আধুনিক সংস্করণ সুপার ক্যাম। মঙ্গল গ্রহের মাটিতে কোনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, সেই গবেষণায় এই লেজার যন্ত্রটি ২০ ফুট দূরের পাথর গলিয়ে ফেলতে পারবে। লেজার যন্ত্রটি তার লক্ষ্যবস্তুর উপর ১৮ হাজার ফারেনহাইট ডিগ্রির উত্তপ্ত রশ্মি ছুঁড়তে পারবে। প্রচন্ড এই উত্তাপে কঠিন পাথরও গলে প্লাজমায় পরিণত হবে, যা পরে একটি ক্যামেরার মাধ্যমে পরীক্ষা করা হবে।

এই রোবটযানের মাধ্যমে মঙ্গল গ্রহের দুর্গম এলাকায় কোন কোন মিনারেল আছে, তা জানার সুযোগ হবে। নাসা চলতি বছরের জুলাইয়ে মঙ্গল গ্রহে এই নভোযান পাঠাতে যাচ্ছে। মঙ্গলে প্রাচীন অণুজীব খুঁজে বের করাই এই মিশনের লক্ষ্য।

মঙ্গলের জেজেরো ক্রেটার এলাকায়, যেখানে ৩.৫ বিলিয়ন বছর আগে একটি হ্রদ ছিল বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, সেখানে প্রাণের প্রাচীন অস্তিত্ব খুঁজতে চান তারা। সেখানে থাকা কার্বোনেট ও হাইড্রেটেড সিলিকায় জাবীশ্ম থাকতে পারে বলেও বিশ্বাস করেন বিজ্ঞানীরা।

মার্স টুয়েন্টি টুয়েন্টি রোভারে যুক্ত সুপার ক্যামে একটি মাইক্রোফোনও সংযুক্ত আছে। এ কারণে প্রতিবার লেজার বিমটি তার টার্গেটে আঘাত করার সময় বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে তা শুনতে পাবেন। শব্দ শুনে বিজ্ঞানীরা আঁচ করতে পারবেন, কোন ধরনের পাথরে আঘাত করছে নভোযানের লেজাররশ্মি।

ফ্রান্সের ইনস্টিটিউট ফর রিসার্চ ইন অ্যাস্ট্রো ফিজিকস অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্সের গবেষক সিলভেসট্রি মরিস বলেছেন, ‘মাইক্রোফোনটি মঙ্গলে টার্গেট করা পাথর খণ্ড সম্পর্কে বিশেষ একটা ধারণা দেবে আমাদের। এছাড়া মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের গঠন কেমন হতে পারে, তার একটা রেকর্ডও আমরা ধারণ করতে পারি এই মাইক্রোফোনের শব্দ রেকর্ডের মাধ্যমে।’

আগামী বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গল গ্রহের জেজেরো ক্রেটারে অবতরণ করবে মার্স টুয়েন্টি টুয়েন্টি রোভার। এর মাধ্যমে এই নভোযানটি ইতিহাসের প্রথম নভোযান হতে যাচ্ছে, যা তার অবতরণ স্থলকে নির্ভুলভাবে পর্যবেক্ষণ করেই অবতরণ করবে।

 

ঢাকা/ফিরোজ