বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লকডাউন পর্বে প্রবেশ করেছে সূর্য! (ভিডিও)

পৃথিবীর দুর্যোগ যেন কাটছেই না! বিশ্ব এখন মহামারির কবলে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চলছে লকডাউন। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন বিশ্ববাসীর মতো সূর্যেও লকডাউন পিরিয়ড শুরু হয়েছে!

বিষয়টি তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কেননা সূর্য লকডাউনে যাওয়া অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত শীতল হওয়া মানে পৃথিবীতে ঠাণ্ডা আবহাওয়া বইবে। এতে পরিবেশ ভীষণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। দেখা দেবে দুর্ভিক্ষ। এমনকি বজ্রপাত বেড়ে যাওয়া এবং ভয়াবহ ভূমিকম্প হতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন।

যুক্তরাজ্যের ‘ডেইলি সান’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সূর্য বর্তমানে ‘সোলার মিনিমাম’ নামক একটি সময়ের মধ্যে রয়েছে। যার অর্থ এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা এবং কার্যকলাপ নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাচ্ছে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. টনি ফিলিপস বলেন, ‘সূর্যের সোলার মিনিমাম অত্যন্ত গভীর। সানস্পট গণনা থেকে বোঝা যাচ্ছে এটি বিগত শতাব্দীর অন্যতম গভীরতম অবস্থার একটি। সূর্যের চৌম্বকীয় শক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা সৌরজগতে অতিরিক্ত মহাজাগতিক রশ্মি প্রবেশের আভাস দিচ্ছে।’

সৌরজগতে এই রশ্মি প্রবেশ করলে নভোচারী এবং মেরু অঞ্চলে ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হবে। এছাড়া এটি পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলের বৈদ্যুতিক-রসায়নকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি বজ্রপাতও বাড়াতে পারে।

নাসার বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, সূর্যের এই লকডাউনে যাওয়ার ঘটনায় ‘ডাল্টন মিনিমাম’ এর পুনরাবৃত্তি হতে পারে। অর্থাৎ ১৮১৬ সালে পৃথিবীর বহু দেশে হঠাৎ করেই বরফ পড়তে শুরু করেছিল। বিজ্ঞানীদের কাছে এই ঘটনা ‘ডাল্টন মিনিমাম’ বলে পরিচিত। এছাড়াও ১৭৯০ থেকে ১৮৩০ এর মধ্যে সূর্যের সোলার মিনিমাম ঠিক এই পর্যায়ে ছিলো। এ কারণে তখন পৃথিবীর শীতপ্রধান দেশে তীব্র শীত, ফসলের ভয়াবহ ক্ষতি, দুর্ভিক্ষ এবং আগ্নেয়গিরির ভয়াবহ অগ্নুৎপাতের ঘটনা ঘটেছিল। তখন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাত্র দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পৃথিবী ডুবেছিল। বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিল খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা।

বিজ্ঞানীরা জানান, গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে তেমনভাবে এর প্রভাব বোঝা না গেলেও শীতপ্রধান অঞ্চলে এই তাপমাত্রা কমে যাওয়া পরিবেশগত সমস্যা তৈরি করবে। করোনা মহামারি সংকটের পাশাপাশি সূর্যের এই লকডাউন সংকট মানবজাতির ক্ষতি বৃদ্ধি করবে। বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন এতে ফিরে আসতে পারে সেই ভয়াবহ ‘ডাল্টন মিনিমাম’।

ঢাকা/ফিরোজ/তারা