বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্ব জলবায়ুর জন্য হুমকি এয়ার কন্ডিশনার

বাসা-বাড়ি ছাড়াও এয়ার কন্ডিশনার ব্যতীত কোনো উন্নত কর্মস্থল কল্পনাও করা যায় না এখন। বিশ্বের সব দেশেই প্রতিদিন অসংখ্য এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে বিশ্ব জলবায়ুর ওপর এই যন্ত্রটি কতোটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে ভাবা হয়নি কারো।

এবার জাতিসংঘ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যাতে এয়ার কন্ডিশনারের ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু আমেরিকাতেই প্রতি বছর বাসা-বাড়ি ও প্রতিষ্ঠান থেকে এয়ার কন্ডিশনারগুলো ১০০ টনের মতো কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে দেয়। অন্য সব দেশের এয়ার কন্ডিশনার আরো ভয়াবহ সামষ্টিক প্রভাব ফেলছে, এতে করে বিশ্ব জলবায়ু মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে।

জাতিসংঘ তাই বিশ্বের সব দেশকে জলবায়ুবান্ধব ডিভাইস ব্যবহার করার আবেদন জানিয়েছে। দুই বছর ধরে এই গবেষণার ফল হিসেবে জানা গেছে, পরিবেশবান্ধব ডিভাইস ব্যবহার করা হলে আগামী ৪০ বছরে ৪৬০ বিলিয়ন টন গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমবে।

এয়ার কন্ডিশনারের ক্ষতিকর কেমিক্যাল যা বাতাসে গ্রিনহাউস গ্যাস ছাড়ে, তা ব্যবহার বন্ধে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই রাজি হয়েছে। তবে দুঃখর বিষয় হলো এক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্ষতি করা তিনটি দেশ আমেরিকা, চীন ও ভারত এখনো এ বিষয়ে রাজি হয়নি। জাতিসংঘ বলছে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব ডিভাইস ব্যবহার করা হলে পরিবেশে ক্ষতিকর গ্যাস যেমন নিঃসরণ বন্ধ হবে, তেমনি বিশ্বজুড়ে ২০৫০ সালের মধ্যে ২.৯ ট্রিলিয়ন ডলারও সাশ্রয় হবে।

গবেষকরা বলছেন, গ্রিনহাউস গ্যাস পরিবেশে অতিরিক্ত নিঃসরণের কারণে গত বছর ছিল ইতিহাসের দ্বিতীয় উষ্ণ বছর। চলতি বছরও অনেকটা সে পথেই এগুচ্ছে। তাই যেহেতু বিশ্বজুড়ে উষ্ণতা বাড়ছে, সে হিসেবে কুলিং সিস্টেমও আরো উন্নত করা জরুরি।

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ফেতিহ বিরোল বলেন, ‘কুলিং সিস্টেম উন্নত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলো নতুন পাওয়ার প্লান্ট তৈরি বন্ধ করতে পারে। এতে করে পরিবেশে গ্রিনহাউস গ্যাস কম নিঃসরণ হবে, বিদ্যুৎ গ্রাহকদের খরচও কমবে।’ জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে বিশ্বজুড়ে এয়ারকন্ডিশনারের সংখ্যা চলতি শতকের মাঝামাঝি সময়ে ৩.৬ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১৪ বিলিয়ন হয়ে যেতে পারে। 

   

ঢাকা/ফিরোজ