বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মঙ্গল গ্রহে পারসিভারেন্সের নতুন সাফল্য

মঙ্গল গ্রহে পাথর থেকে সফলভাবে নমুনা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে নাসার পারসিভারেন্স রোভার। গ্রহটির ‘শিলা টুকরো’ সংগ্রহ করার ঘটনা এটিই প্রথম। তাই বিষয়টিকে ঐতিহাসিক সাফল্য হিসেবে অভিহিত করেছে নাসা।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি জানিয়েছে, রোচেট নামে একটি মোটা শিলাখণ্ডে ড্রিল বা খনন করে নমুনা সংগ্রহে সফল হয়েছে পারসিভারেন্স। রোভারের কালেকশন টিউবে নমুনা দেখা গেছে। যে টিউবে নমুনা রাখা হয়েছে সেটি একটি পেনসিলের থেকে সামান্য মোটা।

গত সপ্তাহেই এই কৃতিত্ব অর্জন করে পারসিভারেন্স। কিন্তু সেসময় ধারণকৃত ছবি ঝাপসা থাকায় টিউবে নমুনা বোঝা যায়নি। সম্প্রতি রোভারের ক্যামেরায় পুনরায় ভালো ছবি ধারণের পর স্পষ্টভাবে টিউবে নমুনা দেখা গেছে। সাত ফুট লম্বা রোবোটিক আর্ম ব্যবহার করে ওই পাথরের মধ্যে থেকে রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করেছে পারসিভারেন্স। 

সংগৃহীত নমুনা মিশন শেষে পৃথিবী নিয়ে আসা হবে। এসব নমুনা বিশ্লেষণ করে মঙ্গল গ্রহের মাইক্রোবিয়াল লাইফ, আবহাওয়া, জলবায়ু এবং ভূগঠন সম্পর্কে জানা যাবে বলে অভিমত নাসার বিজ্ঞানীদের। 

মঙ্গল গ্রহে শিলা খনন করে নমুনা সংগ্রহে পারসিভারেন্স রোভারের এটি দ্বিতীয় প্রচেষ্টা ছিল। এর আগে গত ৬ আগস্ট প্রথমবার লাল গ্রহের শিলার নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ভঙ্গুর ও চূর্ণবিচূর্ণ শিলার কারণে রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। প্রথম চেষ্টায় সিটাডেল নামের একটি টিলা থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েছিল পারসিভারেন্স। কিন্তু সে চেষ্টায় সফল হয়নি রোভার।

মঙ্গল গ্রহে মূলত প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধানের জন্য পারসিভারেন্স রোভার নামক মঙ্গল যানটি পাঠানো হয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে গ্রহটির ‘জেজোরো ক্রেটার’ নামক এলাকায় নিরাপদে অবতরণ করে নাসার মঙ্গলযান পারসিভারেন্স রোভার। গত বছরের জুলাইয়ে পৃথিবী থেকে উড়াল দেয়ার সাত মাস পর ৪৭ কোটি মাইল পথ পাড়ি দিয়ে মঙ্গল গ্রহে পা রাখার জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয় পারিসিভারেন্স। 

মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব কখনো ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখার সবচেয়ে উপযুক্ত এলাকা জেজোরো ক্রেটার। মঙ্গলের এই এলাকায় ফেব্রুয়ারিতে অবতরণের পর থেকেই গবেষণা চালাচ্ছে পারসিভারেন্স। এই রোভারের ভেতরে করে গ্রহটিতে একটি ‘ইনজেনুইটি’ নামক হেলিকপ্টারও পাঠায় নাসা। ইতিমধ্যে মঙ্গল গ্রহে ১২ বার উড়েছে এই হেলিকপ্টার। তবে হেলিকপ্টার বলা হলেও, একটি আসলে একটি ক্ষুদ্র ড্রোন।