বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মহাকাশে ধান চাষে সাফল্য পেল চীন

মহাকাশে তথা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘদিন থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে নানা ধরনের সবজি চাষ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে লেটুস পাতা, মুলা, কাঁচা মরিচসহ একাধিক সবজি চাষে মিলেছে সফলতাও। 

এদিকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কাজের অনুমতি নেই চীনের। এক্ষেত্রে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকেননি দেশটির মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বরং নিজেরাই মহাকাশে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করছে।

আর নিজস্ব সেই মহাকাশ স্টেশনে এবার ধান চাষ করে তাক লাগালেন দেশটির মহাকাশচারীরা। ইন্টারেস্টিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের খবরে বলা হয়েছে, তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে সফলভাবে ধানের চারা উৎপাদন করেছেন চীনা মহাকাশচারীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে মহাকাশে টিকে থাকার জন্য মহাকাশচারীদের খাবারের সরবরাহ করতে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করল এই গবেষণা। এর আগে ধান চাষের পরীক্ষাগুলো মহাকাশে পরিচালিত হলেও এই প্রথমবার তিয়াংগং মহাকাশ স্টেশনে উদ্ভিদের সমগ্র জীবনচক্র তৈরি করার প্রচেষ্টা করা হলো এবং তাতে সাফল্যও মিললো। গবেষণাটি ধানের বীজ দিয়ে শুরু করা হয় এবং ধান গাছ জন্মানোসহ সেই গাছ পরিপক্কভাবে বেড়ে তুলে তা থেকে নতুন বীজ উৎপাদন করে শেষ হয়।

গত ২৪ জুলাই পৃথিবীর কক্ষপথে চীন ওয়েন্টিয়ান মহাকাশ গবেষণার চালু করেছিল, এটি চিনা মহাকাশ স্টেশনের তিয়ানহে কোর মডিউলের সঙ্গে ডক করে। ওয়েন্টিয়ান গবেষণারে আটটি পরীক্ষামূলক পেলোড বোর্ড রয়েছে, যার মধ্যে একটি কেবলই ধান পরীক্ষার জন্য রাখা হয়েছে।

সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন মলিকুলার প্ল্যান্ট সায়েন্সেস-এর গবেষক ঝেং হুইকইয়ং-এর মতে, ধানের চারাগুলো খুব ভালোভাবে বেড়ে উঠেছে। ২৯ জুলাই ধানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে ধানের জাতের চারার লম্বা অঙ্কুর প্রায় ৩০ সেমি (১২ ইঞ্চি) উচ্চতায় বেড়েছে। পাশাপাশি শিয়াও ওয়েই নামে পরিচিত বামন ধানের জাতের চারাগুলো প্রায় ৫ সেমি (২ ইঞ্চি) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।

ঝেং হুইকইয়ং বলেন, ‘আমরা দেখতে চাই, মাইক্রোগ্র্যাভিটি কীভাবে আণবিক স্তরের উদ্ভিদের ফুলের সময়কে প্রভাবিত করে এবং সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে মাইক্রোগ্রাভিটি পরিবেশ ব্যবহার করা সম্ভব কী না।’ প্রসঙ্গত, উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায় হলো ফুল।

মহাকাশে গবেষণার প্রথম দিন থেকেই মহাকাশচারীদের জন্য ভাত একটি প্রধান খাবার। ১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো ১১ মিশনের মাধ্যমে মার্কিন যে মহাকাশচারীরা প্রথম চাঁদের মাটিতে পৌঁছেছিলেন, ভ্রমণকালীন সময়ে তাদের খাবারের তালিকায় ফ্রোজেন মুরগি ও ভাত ছিল।