মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে শুরু হওয়া আইটেক্স (ইন্টারন্যাশনাল ইনভেনশন, ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি এক্সিবিশন) এর ৩৪তম আয়োজনে এবারও অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের আইসিটি বিভাগের অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) ও বাংলাদেশ দল।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুই দিনব্যাপী চলমান এই প্রতিযোগিতার ভেন্যু পরিদর্শন ও বাংলাদেশ দলের ৬টি বুথের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার।
তিনি এসময় বাংলাদেশ বুথের প্রতিটি স্টল ঘুরে দেখেন। হাই কমিশনার বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতির খোঁজখবর নেন এবং দলের সফলতা কামনা করেন। এসময় বাংলাদেশ হাই কমিশনের পক্ষ থেকে কাউন্সেলর (রাজনৈতিক) এবং দূতালয় প্রধান ফারহানা আহমেদ চৌধুরী, কাউন্সেলর (কনস্যুলার) জি এম রাসেল রানা, প্রথম সচিব (বাণিজ্য) প্রনব কুমার ঘোষ, এটুআই-এর কমার্শিয়াল স্ট্র্যাটেজি বিভাগের প্রধান রেজওয়ানুল হক জামী, এটুআই-এর ডিভাইস ইনোভেশন বিশেষজ্ঞ তৌফিকুর রহমান, একশপ-এর প্রযুক্তি বিভাগের লিড সোহেল রানাসহ স্থানীয় অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া বাংলাদেশের প্রতিটি প্রজেক্টকে অপার সম্ভাবনাময় ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ আখ্যা দিয়ে হাই কমিশনার মোহাম্মদ গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য আমাদের সরকারের যে অভিযাত্রা ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে, তাতে নতুন নানাবিধ প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ভূমিকা অনেক। আইটেক্সের মতো অত্যন্ত প্রসিদ্ধ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রদর্শনী এবং প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের বেসরকারি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহণ সত্যিই প্রশংসার দাবীদার। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের এটুআই-এর এবারের আইটেক্সে কারিগরি পরামর্শক হিসেবে সম্পৃক্ততা বিজ্ঞানমনষ্ক আগামীর বাংলাদেশ গঠনে বর্তমান সরকারের স্মার্ট ও দূরদর্শী মনোভাবেরই উদাহরণ।’
প্রতিবছর দেশ-বিদেশ থেকে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পর্যায়ের উদ্ভাবক, বিনিয়োগকারী, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান, ম্যানুফ্যাকচারকারী, উদ্যোক্তা আর সরবরাহকারীসহ নানান পেশার মানুষের মিলনমেলা বসে এই আইটেক্সকে ঘিরে। উল্লেখ্য, আইটেক্স-এর গত বছরের আয়োজনে বিশ্বের অন্তত ১৫টি দেশ থেকে ৫০০-এরও বেশি ইনোভেশন প্রজেক্ট আর ৭৫টি দেশ থেকে আগত ৫০০০ এরও বেশি দর্শনার্থী অংশ নিয়েছিল। এবারের আয়োজনেও সমগ্র ভেন্যু জুড়েই একই স্বতঃস্ফূর্ততায় দেশি-বিদেশি নানান প্রতিষ্ঠান আর দর্শকদের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই।
এটুআই বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন বাস্তবায়নে মূল চালিকাশক্তি এবং বর্তমানে ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে কর্মরত। এটুআই অতীতেও ২০১৮ এবং ২০১৯ সালের আইটেক্সে তার নিজস্ব ইনোভেশন নিয়ে অংশ নিয়েছিল এবং তিনটি গোল্ড ও ছয়টি ব্রোঞ্জ পুরস্কারসহ একটি প্রকল্পের জন্য বিশেষ আন্তর্জাতিক সম্মাননা লাভ করেছিল। পরবর্তীতে, এটুআই বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের উদ্ভাবনী প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোক্তাদের মধ্যে আইটেক্সকে পরিচিত ও জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে। সেই ধারাবাহিকতায়, আইটেক্স ২০২৩ এ অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের কারিগরি পরামর্শকের ভূমিকায় আছে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগের এটুআই।
এবার বাংলাদেশ থেকে বেসরকারি ছয়টি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি নির্ভর প্রতিষ্ঠান আইটেক্স ২০২৩-তে প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে: আমার পে, বাংলা ট্র্যাক, বাংলা ট্রেডার্স, ইগার্ডিয়ান, ক্যুলট্যুর এবং জাইন্যাক্স। আজ ও আগামীকাল চলমান এই প্রতিযোগিতায় জুরি প্যানেলের মাধ্যমে সব প্রজেক্টের মধ্যে থেকে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে শ্রেষ্ঠ প্রজেক্টগুলোকে স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্রোঞ্জ পুরস্কারে ভূষিত করা হবে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সম্মানজনক বিজ্ঞান-প্রযুক্তি প্রতিযোগিতার এই আসর আইটেক্স ২০২৩ থেকে খুব ভালো কিছু অর্জন নিয়ে বাংলাদেশ দল দেশে ফিরতে পারবে বলেই এটুআই আশাবাদী।