বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ল্যাপটপের যত্ন-আত্তি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ব্যক্তিগত কাজে কম্পিউটার ব্যবহারের জন্য সকলেই এখন পছন্দ করেন, ল্যাপটপ। এই পছন্দের বিশেষ কারণ হচ্ছে, ল্যাপটপের বহনযোগ্যতা এবং ব্যাটারি ব্যাকআপ সুবিধা।

 

আপনি অনেক ঘুরে ফিরে, খোঁজখবর নিয়ে, ব্র্যান্ড পছন্দ করে একটি ল্যাপটপ কিনলেন। কিন্তু সচেতনতা ও যত্নের অভাবে আপনার পছন্দের ল্যাপটপটিতে দ্রুত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে ল্যাপটপের দীর্ঘস্থায়িত্ব কমে যেতে পারে। জেনে নিন ল্যাপটপ নিঞ্ঝার্টভাবে ব্যবহারের কিছু উপায়।

 

স্ক্রিন প্রটেক্টর এবং কিবোর্ড প্রটেক্টর 

ল্যাপটপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথমে স্ক্রিন প্রটেক্টর এবং কিবোর্ড প্রটেক্টর- এই দুটি জিনিস অবশ্যই কিনে নিন। স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করা হলে আপনার ল্যাপটপের স্ক্রিনে কোনো দাগ লাগবে না, যদি কোনো দাগ বা ছোটখাটো আঘাত লাগে সেটি লাগবে প্রটেক্টরের ওপর। আপনার মূল স্ক্রিন থাকবে দাগমুক্ত।কিবোর্ড প্রটেক্টর হচ্ছে, কিবোর্ডের জন্য স্বচ্ছ রবারের একটি পাতলা আবরণ। এটি ব্যবহারে আপনার ল্যাপটপের কিবোর্ড থাকবে নিরাপদ ও ধুলোমুক্ত। প্রায়ই আমাদের ল্যাপটপের কিবোর্ড ধুলোয় আক্রান্ত হয় এবং পরিস্কার করতে সমস্যা হয়। কিবোর্ড প্রটেক্টর ব্যবহারের আরেকটি সুবিধা হচ্ছে কিবোর্ডে বেখেয়ালে পানি, চা, কফি কিছু পড়ে গেলে তা ল্যাপটপে প্রবেশ করতে পারবে না।

   

ল্যাপটপ কুলারল্যাপটপে অনেক ছোট পরিসরে কম্পিউটারের প্রয়োজনীয় মাদারবোবোর্ড, প্রসেসর, র‌্যাম, হার্ডডিস্ক এবং অন্যান্য সবকিছুই থাকে। সে কারণে কাজ করতে করতে ল্যাপটপ কিছুটা গরম হবে এটাই স্বাভাবিক। এটির সমাধান হচ্ছে, ল্যাপটপ কুলার। ল্যাপটপ কুলারের ওপর ল্যাপটপ রেখে ব্যবহার করলে ল্যাপটপ গরমও কম হবে এবং ল্যাপটপের ব্যাটারি লাইফও বাড়বে।

 

ভেন্টিলেটর পরিস্কারল্যাপটপের ব্যাকসাইডে এবং পাশে বাতাস চলাচলের জন্য যে ভেন্টিলেটরগুলো থাকে, সেগুলো সবসময় পরিস্কার রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার ল্যাপটপের ভেতরের কুলিং ফ্যান ধুলোমুক্ত থাকবে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারবে।

 

বিছানা বা বালিশের ওপরে ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন নাবিছানা বা বালিশের ওপর রেখে কখনো ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। এটি করলে ল্যাপটপের চেম্বারে খুব দ্রুত গরম বাতাস তৈরি হয় এবং তা ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হতে পারে না। প্রতিনিয়ত এমনটি ঘটতে থাকলে যেকোনো দিন আপনার ল্যাপটপ কোমায় চলে যেতে পারে। তবে ভালো মানের ল্যাপটপ কুলার ব্যবহার করলে আপনি বিছানায় বসেও ল্যাপটপ ব্যবহার করতে পারবেন।

 

বিদ্যুৎ সংযোগে সতর্কতা অবলম্বনল্যাপটপে বিদ্যুতের সংযোগ দেবার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। বৈদ্যুতিক বোর্ডের সুইচ অন থাকা অবস্থায় ল্যাপটপের প্লাগ ঢোকাবেন না এবং হঠাৎ করে অ্যাডাপ্টারের তারটি খুলেও ফেলবেন না। এতে করে ল্যাপটপের পাওয়ার কানেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে।

 

সম্পূর্ণ চার্জ শেষ করুনসব সময় বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন না। সপ্তাহে অন্তত দু’বার আপনার ল্যাপটপের ব্যাটারির চার্জ শেষ করুন। হঠাৎ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে অথবা বাইরে ব্যবহার করলে ল্যাপটপের চার্জ হয়তো ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শেষ হয়। কিন্তু চার্জ নিঃশেষ না হলে ব্যাটারির সবগুলো ‘সেল’ ব্যবহার হয় না। সবগুলো ‘সেল’ ব্যবহার না হলে ব্যাটারি তার সম্পূর্ণ কার্যক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে না।

 

সফটওয়্যার ইনস্টলআপনার ল্যাপটপে হয়তো এমন অনেক সফটওয়্যার ইনস্টল করা আছে যেগুলো আপনি কখনো ব্যবহারই করেননি। এমন সফটওয়্যারগুলো আনইনস্টল করে দিন এবং অপ্রয়োজনীয় কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করবেন না। এতে করে আপনার ল্যাপটপের অপারেটিং সিস্টেমের ওপর চাপ কম পড়বে এবং গতি কিছুটা বাড়বে। প্রয়োজনে কোনো ক্লিনার চালিয়ে রান করে নিন।

 

অ্যান্টিভাইরাসআপনি যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলে অবশ্যই লাইসেন্সড অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। তাহলে আপনার ল্যাপটপ ভাইরাসের হাত থেকে মুক্ত থাকবে। ইন্টারনেটে যেসব ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া যায় সেগুলো ভাইরাস রুখতে আংশিক কাজ করে, পুরোপুরি নয়।

 

স্ক্রিনের রেজ্যুলেশনআপনি যখন ল্যাপটপ ব্যাটারিতে চালাবেন তখন স্ক্রিনের রেজ্যুলেশন যথাসম্ভব কমিয়ে রাখুন। এতেও আপনার ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ ব্যাটারিতে চলার সময় কম রেজ্যুলেশনে ল্যাপটপ ব্যবহার করলে ব্যাপআপ টাইম বেশি পাবেন।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মার্চ ২০১৫/ফিরোজ