খেলাধুলা

আনন্দ-আড্ডার মিলনমেলা ওয়ালটন মিডিয়া কাপ টুর্নামেন্ট

শারমিনা আজিজ : পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সার্বক্ষণিক ব্যস্ত, বিনোদন বঞ্চিত সাংবাদিকদের দ্বিতীয়বারের মতো খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইলস, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও টেলিকমিউনিকেশন পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।

 

বাংলাদেশে স্পোর্টস জার্নালিস্ট কমিউনিটির (বিএসজেসি) ব্যবস্থাপনায় এবং ওয়ালটন গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ওয়ালটন-বিএসজেসি দ্বিতীয় মিডিয়া কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০১৬।

 

এটা সাংবাদিকদের জন্য বিনোদনের একটি বিরাট সুযোগ ছিল। সেই সুযোটি অবশ্য কাজে লাগিয়েছেন সাংবাদিকরা। একই সঙ্গে আয়োজক কমিটি, সহযোগি প্রতিষ্ঠান এবং অতিথিরা এর আনন্দ নিতে একটুও ছাড় দেননি।

গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে টুর্নামেন্টের ৬ষ্ঠ দিনে সকাল সাড়ে নয়টায় শুরু হয় দৈনিক ইনকিলাবের সঙ্গে জিটিভি এবং ঢাকা ট্রিবিউনের সঙ্গে চ্যানেল আইয়ের সেমিফাইনাল ম্যাচ । এর পরেই শুর হয় ফাইনাল। ফাইনাল ম্যাচটি উপভোগ করতে প্রতিদিনের মতো আজও মাঠে ছুটে আসেন খেলোয়াড়দের পাশাপাশি তাদের সহকর্মীরা। তবে একটু ব্যতিক্রম ছিল। ছুটির দিন হওয়ায় পরিবারের অন্য সদস্যরাও মাঠে হাজির হয় নির্দিষ্ট সময়ের আগে। খেলোয়াড়দের সহধর্মীনি ও বাচ্চাদের যেন আনন্দের শেষ নেই।  বিরতির সময় প্রাণ খুলে গল্প আর আড্ডায় সময় কাটান তারা। ছোট সোনামণিদের ছোটাছুটি, লাফালাফি আর বাঁশি বাজিয়ে সময় কাটায়।

 

খুব সকালে বাসায় নাস্তা ছেড়ে সাড়ে ৪ বছরের মেয়ে এবং স্বামীকে নিয়ে খেলা দেখতে আসেন চ্যানেল আইয়ের পাপিয়া। তিনি খেলা দেখেন আর সহকর্মীদের সঙ্গে নানা বিষয়ে গল্পে মেতে উঠেন। সহকর্মীরা চার-ছয় মারলে তালি মারে পাপিয়া। এসময় তার মেয়েও তালি এবং লাফতে শুরু করে।

 

এদিনটি ছিল পুরোটাই যেন উৎসব মুখর। দর্শকও ছিল গত দিনগুলোর চেয়ে একটু বেশি। চার-ছয় হলেই ছোট বাচ্চাদের বাঁশি বাজে। সব মিলিয়ে আয়েজনটাই ছিল ভিন্ন।

বেলা যত বাড়ে ততোই মাঠে ভিড় জমাতে শুরু করে সাংবাদিক এবং সংশ্লিষ্ট অতিথিরা। এগারোটার দিকে সেমিফাইনাল শেষ হয়। ফাইনালে ওঠে ইনকিলাব ও ঢাকা ট্রিবিউন।  এরপর কিছুক্ষণের বিরতি। এসয়ে বিনোদন নিতে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহ-সভাপতি মাহবুব আনাম। খেলার সঙ্গে ছিলেন পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক (পলিসি, এইচআরএম এন্ড এডমিন) এসএম জাহিদ হাসান, অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম, ওয়ালটন গ্রুপের ডেপুটি ডিরেক্টর মো. ফিরোজ আলম, সহকারী পরিচালক মিলটন আহমেদ, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্ট কমিউনিটির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শামীমসহ অন্যান্যরা। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মতো কেউ বা ব্যাট করেন আবার কেউ বা বল করেন। এভাবে কাটে কিছু সময়।  এর কিছুক্ষণের মধ্যে মাঠে আসেন বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস ও জয়যাত্রা ফাইন্ডেশনের চেয়ারম্যান হেলেনা জাহাঙ্গীর। তখন আনন্দ আরো বেড়ে যায়। কুশল বিনিময় আর সেলফি ফটোসেশন শুরু করেন অতিথিরা। নানা বিষয়ে খোশ গল্পে মেতে উঠেন তারা।

 

মাহাবুব আনাম তার অনুভূতির প্রসঙ্গে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘এমন একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদেও অভিনন্দন। এখানে তারাই খেলেছেন যারা মিডিয়া সেন্টার থেকে খেলা উপভোগ করে থাকেন। আজ তাদের খেলা দেখতে এসে আমি খুবই আনন্দিত।’

 

হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সাংবাদিকরা যে শুধু নিউজ লিখতে পারে তা নয়। সে হাতে ভাল খেলা উপহার দিতে পারে। ছুটি দিন হওয়ায় আজ বাসায় বিশ্রামে দিন কাটাতাম। কিন্তু এখানে না এলে বুঝতাম না আজ কি পেলাম। সত্যি আজকের আনন্দের ধরনটাই ভিন্ন।’

ওয়ালটন গ্রুপের সহকারী পরিচালক মিলটন আহমেদ বলেন, ‘ছাত্রজীবনে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলাসহ নানাভাবে সময় কেটেছে। কর্মজীবনে লেখাধুলার সময় একেবারে হারিয়ে ফেলেছি। তবে আজ ব্যতিক্রম মজা পেলাম।’

 

সাড়ে ১১ টার  দিকে ফাইনাল খেলা শুরু হয়। টানাটান উত্তেজনায় চলে খেলা। পুরো সময়ই গলাফাটানো চিৎকারে শেষ হয় খেলা।

 

ইনকিলাবের অধিনায়ক মায়নুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘ছাত্রজীবন পার করে আবার খেলাধুলা করতে পারব জানা ছিল না। ফাইনালে হেরেছি তবুও আজ সত্যি অনেক ভাল লাগছে। অফিসের সব সহকর্মীরা এখানে এসেছে মজা করছে। অনেক উৎসাহ পেয়েছি।’    

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ অক্টোবর ২০১৬/আমিনুল