খেলাধুলা

১১৯ বলে শূন্য রানে অপরাজিত থাকার বিরল ইনিংস

মারুফ হোসেন সরকার : ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। ম্যাচের যেকোনো সময় একটি মাত্র ওভারই বদলে দিতে পারে ম্যাচের গতিপথ। আর অনিশ্চয়তার এ খেলায় ঘটে চলে নানা রকম অদ্ভুত সব ঘটনা। আমাদের ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যাট করতে নেমেই তেড়েফুঁড়ে খেলতে গিয়ে আউট হয়ে প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা দেন তার বিপরীতে নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া লিগে ওটাগো কাউন্টির অধিনায়ক ফ্রেসার উইলসন ১১৯ বল মোকাবেলা করে কোনো রান না করেই উইকেট আগলে রেখে লড়াই চালিয়েছেন দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য। হওক জোন কাপ এর এলিমিনেশন ম্যাচে সাউথল্যান্ডের বিপক্ষে একপ্রান্ত আগলে রাখলেও ২০৩ রানের বড় পরাজয় বরন করে নিতে হয় উইলসনের ওটাগোকে। উইলসনের এই ইনিংস মনে করিয়ে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নামা জিগফ এলটের ৭৭ বলে শূন্য রানের ইনিংসকে। ১৯৯৯ সালে অকল্যান্ড টেস্টে এটা ঘটেছিল। টসে জিতে ব্যাট করতে নামা সাউথল্যান্ড শুরু থেকে ওটাগো কাউন্টির বোলারদের বোলিং তোপে পড়ে। ব্লেকলি এবং মিলসের বোলিং দাপুটে ২১৪ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। এই অল্পরানকে পাহারসম রানে পরিণত করে সাউথল্যান্ডের বোলাররা। আন্দ্রের ৬৭ এবং অধিনায়ক উইলসনের ২০ রানের উপর ভর করে ১৪০ রান করতে সমর্থ হয় ওটাগো। এতে করে ৭৪ রানের লিড পায় সাউথল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে বল হাতে জ্বলে উঠেন উইলসন। ৯ ওভার বল করে ৫২ রানে চারটি উইকেট তুলে নিতে সমর্থ হন তিনি। তবে প্রথম ইনিংসে সাউথল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করা সিংয়ের সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পায় সাউথল্যান্ড। ৪৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে সাউথল্যান্ড ইনিংস ঘোষণা করলে উইলসনের ওটাগোর সামনে ৩৪৫ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় জয়ের জন্য। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যর্থ হয় ওটাগোর ব্যাটম্যানরা। দলের অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন উইলসন মাঠে নামেন তখন ৯৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ওটাগো ব্যাটিং বিপর্যয়ে। এরপর উইলসন সতীর্থ টম মিলসের সাথে ২৩ ওভার মাঠে কাটিয়ে দেন মাটি কামড়ে থেকে। মিলসের সাথে তার জুটিতে আসে ৩০ রান যার ২৮ রানই আসে মিলসের ব্যাট থেকে এবং বাকী ২ রান আসে অতিরিক্ত থেকে। মিলসের উইকেটের পর বাকি দুই ব্যাটসম্যানও খুব তাড়াতাড়ি ফিরে গেলে ১৪১ রানেই অলআউট হয় ওটাগো এবং সাউথল্যান্ড পায় ২০৩ রানের বিশাল জয়। অধিনায়ক উইলসন এক প্রান্ত আগলে এতগুলো বল মোকাবেলা করেও কোনো রান না করে ম্যাচটা বাঁচাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাকিদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত হারের তিক্ত স্বাদ পেতেই হয়েছে। খেলা শেষে তিনি বলেন, ‘আসলে এটা খুবই সহজ বিষয় ছিল কেননা ম্যাচটা ড্র করতে চেয়েছিলাম। তাছাড়া পুরো সপ্তাহজুড়ে আমার চোখের সমস্যা ছিল। তাই চোখে কন্ট্রাক্ট লেন্স লাগিয়ে ছিলাম এবং সেটা পড়ে গিয়ে নোংরা হওয়ার ফলে চোখে ইনফেকশন হয় এবং আমি পুরো খেলা এক চোখ দিয়ে দেখেই খেলেছি।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জানুয়ারি ২০১৭/মারুফ হোসেন সরকার/আমিনুল