খেলাধুলা

মেসি-জাদুতে আবারও শীর্ষে বার্সা

ক্রীড়া ডেস্ক : প্রথম গোলটির পর ডান হাতটা কানের পাশে নিয়ে টেলিফোন কল করার ভঙ্গি করলেন। সম্ভবত উয়েফাকে ‘কল’ করলেন লিওনেল মেসি! সংস্থাটি যে এক গবেষণায় বলেছে, বার্সেলোনার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা শূন্য! এটা ঠিক যে এখন পর্যন্ত চ্যাম্পিয়নস লিগে নকআউট পর্বের প্রথম লেগে ৪ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে পরের রাউন্ডে যেতে পারেনি কোনো দল। বার্সেলোনাকে তাই পিএসজির বিপক্ষে ‘পাহাড়’ টপকাতে হবে।  কিন্তু বার্সেলোনার আছে যে মেসি নামের এক ফুটবল জাদুকর। আর মেসি দলে থাকা মানে সবকিছুই সম্ভব। শনিবার রাতেই যেমন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের জাদুকরি ফুটবলের এক ঝলক দেখল ফুটবল বিশ্ব। সেল্টা ডি ভিগোর বিপক্ষে মেসি নিজে করলেন দুর্দান্ত দুই গোল, সতীর্থদের দিয়ে গোল করালেনও দুটি। তাতে সেল্টা উড়ে গেল ৫-০ গোলে। চার দিনের মধ্যে বার্সেলোনা গোল করল ১১টি। আগামী বুধবার পিএসজির বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে নামার আগে যেন ইতিহাস গড়ার একটা ইঙ্গিতই দিয়ে রাখল লুইস এনরিকের দল।

দিনের শুরুতে এইবারকে হারিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেল্টাকে উড়িয়ে দিয়ে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও শীর্ষে ফিরল বার্সেলোনা। ২৬ ম্যাচে বার্সার পয়েন্ট ৬০। এক ম্যাচ কম খেলা রিয়ালের ৫৯ পয়েন্ট। ন্যু ক্যাম্পে ১৮ মিনিটে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে সুয়ারেজ আর মেসির শট যেভাবে পোস্টে লেগে ফিরল, তাতে অশুভ কিছুর ইঙ্গিত মনে হচ্ছিল। মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে সেল্টার এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে সুয়ারেজ চলে যান ডি বক্সের সামনে। কিন্তু সেখান থেকে তার ডান পেয়ের শটটা পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে শট নিয়েছিলেন মেসি। সেটিও সেই একই পোস্টে লেগে ফেরে। খানিক বাদেই অবশ্য ‘অশুভ’র ইঙ্গিতটা উড়ে যায় মেসির চমৎকার এক গোলে। প্রায় মাঝ মাঠে বল পেয়েছিলেন, সেখান থেকে বল নিয়ে ছুটে এক খেলোয়াড়কে পেছনে ফেললেন। ডি-বক্সের বাইরে আরো একজনকে কাটিয়ে নিলেন নিচু জোরালো এক শট। কোনো সুযোগই পেলেন না সেল্টার গোলরক্ষক। বল জড়াল জালে, বার্সা এগিয়ে গেল ১-০ গোলে। এরপরই মেসির সেই ‘টেলিফোন কল’ গোল উদযাপন।

৪০ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে বার্সেলোনা। ইভান রাকিটিচের বাড়ানো বল পেয়ে যান মেসি। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড আবার গোলমুখে বল বাড়ান নেইমারকে। দারুণ এক  চিপ শটে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে পৌঁছে দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। প্রথমার্ধে আর কোনো গোল না হলেও দ্বিতীয়ার্ধে সাত মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে স্বাগতিকরা। ৫৭ মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করেন রাকিটিচ। বক্সের ভেতর মেসি বল বাড়িয়েছিলেন রাফিনহার উদ্দেশ্যে। তার পা হয়ে বল যায় রাকিটিচের কাছে। সহজেই সেটি জালে জড়িয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার এই মিডফিল্ডার। চার মিনিট পর মেসির বাড়ানো বল থেকে দলের ৪ নম্বর গোলটি করেন স্যামুয়েল উমতিতি। এর দুই মিনিট পর মেসির আরেকটি চমৎকার গোল। ডান দিক থেকে বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে প্রথমে এক খেলোয়াড়কে কাটালেন। এরপর আরেক খেলোয়াড়ের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জড়িয়ে দিলেন জালে। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না অতিথি গোলরক্ষকের! রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ মার্চ ২০১৭/পরাগ/এএন