খেলাধুলা

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে অবসর নিতে চেয়েছিলেন টেন্ডুলকার

ক্রীড়া ডেস্ক : ওয়েস্ট ইন্ডিজে বসেছিল ২০০৭ বিশ্বকাপের আসর। বারমুডা, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপে ছিল ভারত। সবাই ধরেই নিয়েছিল এই গ্রুপ থেকে শ্রীলঙ্কা ও ভারত সুপার এইটে যাবে। কিন্তু ভারত তাদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে যায় ৫ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর বারমুডার বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জিতে সুপার এইটে যাওয়ার আশা বাঁচিয়ে রাখে ভারত। কিন্তু গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে ২৩ মার্চ শ্রীলঙ্কার কাছে ৬৯ রানে হেরে যায়। পাশাপাশি ২০০৭ বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেয় ভারত। ‘বি’ গ্রুপ থেকে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সুপার এইটে নাম লেখায়। ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেওয়ার হতাশায় অবসর ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি স্যার ভিভ রিচার্ডস ও শচীনের ভাই অজিত টেন্ডুলকার তাকে বুঝিয়ে অবসর ঘোষণা দেওয়ার থেকে নিবৃত করেন। সেই হারের দশ বছর পর আজ ২৩ মার্চ সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি স্বীকার করেছেন শচীন টেন্ডুলকার। তিনি বলেন, ‘আমি তখন খুবই হতাশ। এমন সময় স্যার ভিভ রিচার্ডস আমাকে ফোনে চাইলেন। আমি অবশ্য তখন কাছে ছিলাম না। ফোন ধরার পর তিনি আমার সঙ্গে ৪৫ মিনিট কথা বলেছিলেন। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের উত্থান-পতন নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন যে ক্রিকেটকে এখনো অনেক কিছু দেওয়ার বাকি আছে তোমার। তুমি এখনই অবসর নিও না। তিনি আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন যে আমি খুবই হতাশ ছিলাম এবং অবসর নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম।’ শচীন আরো বলেন, ‘স্যার ভিভ রিচার্ডস আমাকে বললেন যে আসলে ব্যাপারটা সাময়িক। আজ আমরা ব্যর্থ হয়েছি, কাল হয়তো ভালো কিছু করতে পারি। সুতরাং আমি যাতে কোনোভাবেই অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত এখনই না নেই। তার সেদিনের সেই ফোন কলটি আমাকে সবকিছু নতুনভাবে ভেবে দেখতে উৎসাহিত করেছিল। আমি তার পরামর্শ ও উপদেশে অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। এরপর আমি অবসর নেওয়ার চিন্তাটি মাথা থেকে ঝেরে ফেলি এবং অনুশীলনে মনোযোগ দেই।’ তার ভাই অজিত টেন্ডুলকারের বিষয়ে শচীন বলেন, ‘স্যার ভিভ রিচার্ডস ছাড়াও আমার ভাই অজিত আমার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছিল। সে তখন বলেছিল যে এখনই যাতে আমি অবসর না নেই। কারণ, ২০১১ বিশ্বকাপের ট্রফিটি আমার হাতে শোভা পেতে পারে। তারা দুজন আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করেছিল এবং আমার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নকে গতিশীল করেছিল। এরপর থেকে আমি প্রতিদিন ভোড় সাড়ে পাঁচটায় অনুশীলন শুরু করতাম এবং বিকেল পর্যন্ত অনুশীলন চালিয়ে যেতাম।’ ২০০৭ সালে গ্রুপপর্ব থেকে ভারত বিদায় নিলেও ২০১১ সালে তারা ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল। যে শ্রীলঙ্কার কাছে ২০০৭ সালের ২৩ মার্চ হেরে বিশ্বকাপের গ্রুপপর্ব থেকে ভারত বিদায় নিয়েছিল, সেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েই ২০১১ সালে বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল শচীন-ধোনিরা। ভারতের বহুদিনের লালিত স্বপ্ন বিশ্বকাপের শিরোপা শচীনের হাতে উঠেছিল। ২০০৭ সালে হতাশার কারণে শচীন যদি অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতেন তাহলে হয়তো তার বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন অধরাই থেকে যেত। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মার্চ ২০১৭/আমিনুল