খেলাধুলা

মুস্তাফিজদের খাটিয়ে নিল দ. আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : মুস্তাফিজুর রহমান, শুভাশিস রায়, মেহেদী হাসান মিরাজ, শফিউল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান- আটজনের প্রথম ছয়জনই বিশেষজ্ঞ বোলার। সবাই মিলে বোলিং করলেন ৯১ ওভার। তারপরও ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশকে অলআউট করতে পারল না বাংলাদেশ। উল্টো ৮ উইকেটে ৩১৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ৭ রানের লিড নিল আমন্ত্রিত একাদশ! টেস্টের আগে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। লিড এখানে বড় বিষয় নয় মোটেই। কিন্তু এমন একটা দল, যে দলে নেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোনো ক্রিকেটার। বেশিরভাগই দক্ষিণ আফ্রিকার একাডেমির খেলোয়াড়। সেই দলটাই শুক্রবার প্রস্তুতি ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের প্রায় পুরোটাই খাটিয়ে নিল মুস্তাফিজ-তাসকিনদের। বেনোনির উইলোমুর পার্কে প্রথম দিনের শেষ দিকে ৫.৩ ওভার ব্যাট করে ১ উইকেটে ২১ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ। একটি উইকেট সাব্বির রহমানের কল্যাণে। আইজ্যাক ডিকগালেকে করেছিলেন রানআউট। দ্বিতীয় দিন ৮৫.৩ ওভার ব্যাট করল স্বাগতিক দল। বাংলাদেশের বোলাররা উইকেট ফেলতে পারলেন মাত্র ৭টি! স্বীকৃত ছয় বোলারই যদিও উইকেট পেয়েছেন। তবে সর্বোচ্চ ২ উইকেট পেয়েছেন একজন, শফিউল। অথচ দিনের শুরুতেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন শুভাশিস। ডানহাতি পেসার আগের দিনের আরেক ওপেনার ইয়াসিন ভিয়াকে ফিরিয়ে দেন এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ। ডু প্লোকে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়েছেন শফিউল। হেনরিখ ক্লাসেনকে মুমিনুলের ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেছেন মুস্তাফিজ। তাসকিনের শিকার ফিফটি করা জুবায়ের হামজা (৬০)। তখন ১১০ রানেই ৫ উইকেট নেই স্বাগতিক দলের। কিন্তু এরপর স্বাগতিকদের ওপর চাপটা ধরে রাখতে পারেনি বাংলাদেশের বোলাররা। শফিউল-মিরাজদের হতাশায় ডুবিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশ পরের ৩ উইকেট জুটিতেই তুলেছে ২০৩ রান!  ছয়, সাত, আট ও নয় নম্বরে নামা চার ব্যাটসম্যানের দুজনই করেছেন ফিফটি। বাকি দুজনের ব্যাটেও এসেছে চল্লিশোর্ধ ইনিংস। ৪৪ রান করা ম্যাথু ব্রিটেজকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। এরপরই সবচেয়ে বড় জুটিটা পেয়েছে স্বাগতিকরা। সপ্তম উইকেটে ৭৯ রান যোগ করেন ম্যাথু ক্রিস্টেনসেন ও শন ভন বার্গ। দুজনই পেয়েছেন ফিফটি। ক্রিস্টেনসেনকে (৫৩) ফিরিয়ে জুটি ভেঙেছেন শফিউল। তবে অষ্টম উইকেটে মিগুয়েল প্রিটোরিয়াসকে (৪২) সঙ্গে নিয়ে আরো ৬০ রান যোগ করেন বার্গ। আটে নামা বার্গ ১১০ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় ৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন। সর্বোচ্চ ১৬ ওভার বল করেছেন দুই স্পিনার তাইজুল ও মিরাজ। তাইজুল ৪৭ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন একটি। মিরাজও একটি উইকেট নিয়েছেন ৫৬ রান দিয়ে। শুভাশিস ১৫ ওভারে ২৭ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছেন, মেডেন ওভার ৭টি। ১৩ ওভার বল করে ৭টি মেডেন নিয়েছেন মুস্তাফিজও, ২৮ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছেন একটি। তাসকিন ১৪ ওভারে ৭০ রান দিয়ে একটি, শফিউল ১২ ওভারে ৬১ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। সৌম্য ও সাব্বির মিলে বল করেছেন ৫ ওভার।  দিনে ৩ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ বিনা উইকেটে তুলেছে ৬ রান। প্রথম ইনিংসে তামিম ইকবাল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ায় ব্যাটিং অর্ডারে এসেছে পরিবর্তন। প্রথম ইনিংসে আটে নেমে ২ বল খেলেই আউট হওয়া লিটন দাস এসেছেন ওপেনিংয়ে। ওপেনিংয়ে ফিরেছেন ইমরুল কায়েসও। ১২ বলে লিটন করেছেন ২, ইমরুল ৬ বলে ৪। সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় শুধু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্যই নয়; বোলারদের জন্যও অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ! রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/পরাগ