খেলাধুলা

হতাশার এক দিন

আবু হোসেন পরাগ : টস জিতে মুশফিকুর রহিমের ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তটা এখন ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। হওয়ারই কথা। বাংলাদেশ অধিনায়ক টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠালেন। প্রোটিয়ারা প্রথম দিনে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে করল ২৯৮ রান। অধিনায়কের সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ তো হবেই! বাংলাদেশ সর্বশেষ ২০০৮ সালে যখন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েছিল, প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা ১ উইকেটে তুলেছিল ২৯৯ রান। সেবারও টস জিতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন তখনকার বাংলাদেশ অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল। ৯ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়েও টস জিতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠালেন সফরকারী অধিনায়ক। স্বাগতিকরা প্রথম দিনে করল ১ উইকেটে ২৯৮। উইকেট আগের মতোই একটি। রান শুধু এক কম। তবুও কত মিল! পার্থক্য শুধু, আগেরবার প্রথম টেস্টের ভেন্যু ছিল ব্লুমফন্টেইন। এবার পচেফস্ট্রুম। সেই বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশের পার্থক্য অনেক। কিন্তু বৃহস্পতিবার টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশ সেই পার্থক্যের প্রমাণ দিতে পারল সামান্যই! সফরকারীরা পার করল হতাশার এক দিন। মুশফিকের সিদ্ধান্ত দেখে প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি যতটা না বিস্মিত হয়েছিলেন, তার চেয়ে খুশিই হয়েছিলেন বেশি। টস হারলেও যে তার চাওয়াই পূর্ণ হয়েছে। তার চাওয়াও ছিল আগে ব্যাটিং। বাংলাদেশ একাদশ সাজিয়েছে তিন পেসার নিয়ে। মুশফিকের টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া দেখে মনে হচ্ছিল, উইকেট তাহলে পেস-বান্ধব হবে। কিন্তু মুশফিক ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই বোলিংয়ে আনলেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে। তাহলে একাদশে তিন পেসার কেন? টস জিতেই কেন বা ফিল্ডিং? অধিনায়কের সিদ্ধান্তটা ভুল প্রমাণ হতে সময় লাগেনি। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে নিখুঁত ব্যাটিং করলেন দুই দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার ডিন এলগার ও এইডেন মার্করাম। তারই ফসল তাদের ১৯৬ রানের বিশাল উদ্বোধনী জুটি। টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি। অথচ তাদের জুটি ২৮ পার হতেই ধারাভাষ্যকার বলছিলেন, শেষ ১৪ ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি! বোঝাই যাচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে জমছিল না দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি। এদিন যিনি এলগারের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন, সেই মার্করামের কেবল প্রথম টেস্ট। অভিষেকেই দলের উদ্বোধনী জুটি নিয়ে অস্বস্তি দূর করলেন ২২ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান। স্বপ্নের অভিষেকে সেঞ্চুরিটাও পেয়ে যেতেন। কিন্তু মাত্র ৩ রানের জন্য তা হয়নি। তার সঙ্গী এলগার ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে দ্রুত এক রান নিতে চেয়েছিলেন। নন-স্ট্রাইকিং প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন মার্করাম। এলগার যখন তাকে ফিরিয়ে দিলেন, সম্ভব ছিল না আর ক্রিজে ফেরা। অভিষেকে ৯৭ রানে রানআউট মার্করাম। চা বিরতির আগের ওভারে মার্করামকে ফেরালেও লাভ হয়নি বাংলাদেশের। এলগার তুলে নিয়েছেন এ বছর তার চতুর্থ টেস্ট সেঞ্চুরি, সব মিলিয়ে নবম। তিনে নামা হাশিম আমলা তুলে নিয়েছেন ফিফটি। দিন শেষে দুজনের অবিচ্ছিন্ন দ্বিতীয় উইকেট জুটি ছাড়িয়েছে একশ (১০২*)। এলগার ১২৮ ও আমলা ৬৮ রানে অপরাজিত আছেন। বাংলাদেশ দ্বিতীয় দিনটাও হতাশায় কাটাতে না চাইলে দ্রুত ভাঙতে হবে এ জুটি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭/পরাগ