খেলাধুলা

এবার অলিম্পিকে চোখ শাকিলের

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়ার গোল্ডকোস্টে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসে দুটি রুপার পদক জিতেছে বাংলাদেশ। দুটিই এসেছে শুটিং থেকে। এর মধ্যে ছেলেদের ৫০ মিটার পিস্তল ইভেন্টে বাংলাদেশের হয়ে পদক জিতেছেন খুলনার ছেলে শাকিল আহমেদ। এবার শাকিলের চোখ অলিম্পিকে। সে লক্ষ্যই তিনি প্রস্তুত হচ্ছেন। জাপানের টোকিওতে ২০২০ সালে বসবে অলিম্পিকের পরবর্তী আসর। অলিম্পিকে অংশ নেওয়া মূল লক্ষ্য হলেও এর আগে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিতে হবে শাকিলকে। বিশেষ করে এশিয়ান গেমসে পদক অর্জনও লক্ষ্য আছে তার। বর্তমানে ক্যাম্প নিয়েই ব্যস্ত সেনাবাহিনীতে কর্মরত এই শুটার। সম্প্রতি ছুটিতে খুলনায় বেড়াতে এসেছিলেন শাকিল আহমেদ। তখন রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জানান এসব লক্ষ্যের কথা। কমনওয়েলথ গেমসে সোনার পদকের খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন শাকিল। তবে সোনা জিততে না পারলেও আক্ষেপ নেই তার। ২২০.৫ পয়েন্ট স্কোর করে তিনি দ্বিতীয় হন। আর ২২৭.২ স্কোর করে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার ড্যানিয়েল রেফাকোলি জেতেন সোনা। আগামী ৪ মে থেকে দ্বিতীয় দফায় শুরু হচ্ছে ক্যাম্প। ক্যাম্পের সুযোগ সুবিধা নিয়ে সন্তুষ্ট শাকিল, ‘আমাদের পিস্তল ইভেন্টে বর্তমানে একজন ডেনমার্কের কোচ রয়েছেন। কিছুদিন আগেও প্রস্তুতিতে এত সুযোগ সুবিধা পেতাম না আমরা। তবে সম্প্রতি শুটিং ফেডারেশন থেকে পিস্তলে ও রাইফেলে আলাদা দুইজন বিদেশি প্রশিক্ষক আনা হয়েছে। তাদের অধীনে পুরোপুরি প্রস্তুতি নিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। প্রতিযোগিতায় এই প্রস্তুতির সফলতা পাব আমরা।’ অলিম্পিকের আগে বড় ইভেন্ট বলতে আগামী বছর ইন্দোনেশিয়ায় বসছে এশিয়ান গেমস। এই গেমসে পদক অর্জন করাই বড় লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য পূরণ করতে পারলেই শাকিলের অলিম্পিকে অংশ গ্রহণের স্বপ্নও পূরণ হবে। নিজের লক্ষ্যের কথা জানাতে গিয়ে দেশসেরা এই শুটা বলেন, ‘আমাদের এখন সবচেয়ে বড় লক্ষ্য এশিয়ান গেমসে পদক অর্জন। যদিও আমার প্রস্তুতির মূল লক্ষ্য ২০২০ সালে টোকিও অলিম্পিক। তবে সে লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ভালো করতে হবে এশিয়ান গেমসেও। ‘অলিম্পিকে কোনো ইভেন্টেই আমাদের সরাসরি অংশ গ্রহণের সুযোগ থাকে না। অন্যান্য প্রতিযোগিতায় ভালো করে জায়গা করে নিতে হয়। এ জন্যই এশিয়ান গেমসে ভালো করতে হবে। শুধু এশিয়ান গেমসই না, এর আগে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ গ্রহণ করব আমরা। সেখানেও পদক অর্জন করতে হবে। সে লক্ষ্যেই প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা’- যোগ করেন শাকিল। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের খরসঙ্গ গ্রামে জন্ম শাকিল আহমেদের। ২০১৩ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। পরের বছর থেকেই শাকিল অংশ গ্রহণ করেন জাতীয় শুটিং প্রতিযোগিতায়। একটানা চ্যাম্পিয়ন হয়ে আসছেন তিনি। প্রায় এক বছর পর ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন শাকিল। পরিবারের সঙ্গে খুব কমই দেখা হয়। তা নিয়ে অবশ্য একেবারেই আক্ষেপ নেই শাকিলের ‘এখন তো পুরো দেশটাই আমার পরিবার। আমি দেশের জন্যই খেলছি। যখন বিদেশের মাটিতে খেলতে যাই, তখন আমার মনে হয় পুরো দেশটাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এটা ভাবলে আর পরিবারের কথা আলাদাভাবে মনে পড়ে না।’ রাইজিংবিডি/খুলনা/২৯ এপ্রিল ২০১৮/রুবেল/পরাগ