খেলাধুলা

দলীয় প্রচেষ্টায় এই জয় : তামিম

ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে মন্থরতম সেঞ্চুরিটা করেছেন। কিন্তু তামিম ইকবালের সেই সেঞ্চুরিই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তবে এই জয়ের কৃতিত্ব সতীর্থ সবার বলে জানিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার। তামিমের ১৬০ বলে অপরাজিত ১৩০, সাকিবের ৯৭, মুশফিকের ক্যামিও, আর মাশরাফির ৪ উইকেট মিলিয়ে প্রথম ওয়ানডেতে গতকাল রাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৮ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের করা ২৭৯ রানের জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেমেছে ২৩১ রানে। গায়ানার উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য মোটেই সহজ ছিল না। উইকেট ছিল মন্থর, বল ব্যাটে আসছিল দেরিতে। শুরুর দিকে তাই বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে তামিম, সাকিবকে। তারমধ্যে আবার ১ রানেই এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারিয়েছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টিতে মিনিট বিশেক খেলা বন্ধও ছিল।

 

এরপরই তামিম-সাকিবের গল্পের শুরু। দুজন সময় নিয়েছেন, উইকেট থিতু হয়েছেন। এরপর আস্তে আস্তে রান তোলার গতি বাড়িয়েছেন। ৮৭ বলে ফিফটি করা তামিম শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি করতে খেলেন ১৪৬ বল, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের সবচেয়ে মন্থরতম। সাকিব আউট হয়েছেন সেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থেকে। আর মুশফিকের ১১ বলে ৩০ রানের ক্যামিতে শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৪৩ রান। উইকেট কঠিন ছিল বলেই ইনিংসটা তামিমের কাছে বিশেষ কিছু। ম্যাচ শেষে তামিম বলেছেন, ‘দলের জয়ে যে কোনো ইনিংসই বিশেষ কিছু। বিশেষ করে আজকে আমরা যখন ব্যাটিংয়ে নামি, উইকেট মোটেই সহজ ছিল না। নিজেদের শক্ত অবস্থানে নিয়ে যেতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়, প্রথম ২৫ ওভার পর্যন্ত সত্যিই খুব কঠিন ছিল। বল স্পিন করছিল, ফাস্ট বোলাররা কিছু না কিছু সুবিধা পাচ্ছিল।’ তামিম জানালেন, ঠিক কী পরিকল্পনা করে এগিয়েছেন তারা, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল, যতক্ষণ খেলতে পারি, যত লম্বা নিয়ে যেতে পারি, স্কোরবোর্ড কিংবা অন্য কিছু নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। আমাদের একটা টার্গেট ছিল এবং আমরা সেটা অর্জন করেছি। আমরা যে টার্গেটটা করেছিলাম, মুশফিকের ক্যামিওতে সেটা পার হয়ে যায়। আমরা ২০ রান বেশি পেয়েছি। আমার কাছে মনে হয়, এটা পুরোপুরি দলীয় প্রচেষ্টা ছিল। মুশফিকের ইনিংস স্পেশাল ছিল, সাকিব অবিশ্বাস্য খেলেছে। আমি আমারটা চেষ্টা করেছি।’

 

এই উইকেটে ২৮০ রান তাড়া করা সহজ ছিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য। এভিন লুইসকে ফিরিয়ে শুরুতে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন মাশরাফি। শুরুতে দুই প্রান্তে মাশরাফি ও মিরাজের নিয়ন্ত্রিত বোলিং গেইলদের আক্রমণাত্মক হওয়ার সুযোগ দেয়নি। শুধু বোলিং নয়, অধিনায়কত্বেও মাশরাফি ছিলেন সহজাত। টানা ৬ ওভার বল করে অধিনায়ক বল তুলে দিয়েছেন রুবেলের হাতে। রুবেল প্রথম বলেই এনে দিয়েছেন সাফল্য। মোসাদ্দেক ৭ ওভার দিয়েছেন মাত্র ২২ রান। মুস্তাফিজ পরপর দুই বলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট। মাশরাফিকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তামিম। তবে তার কণ্ঠে সেই একই সুর, জয়টা ছিল দলীয় প্রচেষ্টার ফসল, ‘বোলিংয়ে মাশরাফি অসাধারণ ছিলেন। উনি অভিজ্ঞ, এই উইকেটে যেটাই দরকার ছিল, উনি ওটাই করেছেন। সঠিক সময়ে বোলিং পরিবর্তন, যখন যা দরকার ছিল, সম্ভাব্য সেটাই করেছেন। এটা পুরোপুরি দলীয় প্রচেষ্টা ছিল।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জুলাই ২০১৮/পরাগ