খেলাধুলা

পাকিস্তানের প্রথম নাকি ভারতের একাদশতম ফাইনাল?

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ১৯৯৩ সালে শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। সেই থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সাফের এগারোটি আসর হয়। তার মধ্যে দশবারই ফাইনালে উঠেছে ভারত। শিরোপা জিতেছে সাতবার। অন্যদিকে পাকিস্তান একবারও ফাইনালে উঠতে পারেনি। এবার তাদের সামনে প্রথমবারের মতো ফাইনালে ওঠার হাতছানি। তবে পাড়ি দিবে হবে কঠিন পথ। সামনে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি ভারত। সাফের দ্বাদশ আসরে ভারত অবশ্য তাদের জাতীয় দল পাঠায়নি। পাঠিয়েছে অনূর্ধ্ব-২৩ দল। সেই দল নিয়েও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে তারা। অন্যদিকে ফিফার তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে পাকিস্তান। প্রথম ম্যাচে তারা নেপালকে হারায়। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে যায়। আর তৃতীয় ম্যাচে ভুটানকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ১৩ বছর পর সাফের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। এবার তাদের সামনে প্রথমবারের মতো ফাইনালের হাতছানি। পাকিস্তানের এই দলটি অবশ্য বেশ শক্তিশালী। দলে পাঁচ-ছয়জন খেলোয়াড় আছেন যারা ইউরোপের বিভিন্ন লিগে খেলেন। তার উপর তাদের উচ্চতা ও ফিটনেস বেশ ভালো। তারা যে ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে লড়াই করবে সেটা অনুমেয়।

 

তবে শুধু লড়াই নয়, ফাইনালে চোখ পাকিস্তানের ব্রাজিলিয়ান কোচ হোসে নোগুইয়েরার, ‘গ্রুপ পর্বে ছেলেরা ভালো খেলেছে। সেমিফাইনালে আমাদের সামনে শক্তিশালী ভারত। এই ম্যাচকে সামনে রেখে আমরা প্রস্তুত। ছেলেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে। দলে ইনজুরি সমস্যা নেই। ভারতকে হারিয়ে আমরা ফাইনালে যেতে চাই।’ পাকিস্তানের অধিনায়ক সাদ্দাম হোসেনও চান ফাইনালে যেতে, ‘আমরা ফিফার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছি। ১৩ বছর পর সাফের সেমিফাইনালে উঠেছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী। ভারতের বিপক্ষে ২০১৪ সালে বেঙ্গালুরুতে আমরা জয় পেয়েছি। ভারতের বিপক্ষে আগে খেলছে এমন চার-পাঁচজন খেলোয়াড় এই দলে আছে। যদিও আমরা লম্বা সময় পর আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলছি, হয়তো সেই রিদমে নেই। তারপরও আমরা ভারতকে হারাতে বদ্ধ পরিকর। ভারত নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে। তাদের ঘরোয়া লিগও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা ফাইনালে যেতে চাই।’ ভারতের ম্যানেজার ভেঙ্কটেস সঙ্গম অবশ্য নিজেদের ফেবারিট মানছেন না। তার মতে দল পারফরম্যান্স দিয়ে সেমিফাইনালে এসেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলেই ফাইনালে যাবে, ‘আমি এখনো আমাদের ফেবারিট মনে করি না। আমাদের ছেলেরা তাদের পারফরম্যান্সের কারণেই ফাইনালে এসেছে। পাকিস্তান শক্তিশালী দল। তাদের অনেকেই ইউরোপিয়ান লিগে খেলে। আমাদের ‍মূল দল আসেনি। অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে খেলছি। আশা করছি ছেলেরা আগামীকালও তাদের পারফরম্যান্স শো করবে। ভালো খেলবে।’

 

পাকিস্তান-ভারতের ফুটবল দ্বৈরথ অনেক পুরনো। ১৯৫৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দল ‍দুটি ২৩বার মুখোমুখি হয়েছে। তার মধ্যে পাকিস্তান জিতেছে ৩ বার। ভারত জিতেছে ১০ বার। ১০টি ম্যাচ হয়েছে ড্র। পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকা ভারত কী কাল তাদের পরিসংখ্যান আরো সমৃদ্ধ করবে? নাকি পাকিস্তান তাদের পরিসংখ্যানকে এগিয়ে নিবে? ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে হারিয়ে পাকিস্তান প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠতে পারবে? নাকি তাদের হারিয়ে একাদশতম বারের মতো সাফের ফাইনালে উঠবে ভারত? জানতে অপেক্ষা করতে হবে বুধবার রাত পর্যন্ত। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮/আমিনুল