খেলাধুলা

স্বপ্নের ফাইনালে দায়িত্ব নিতে হবে তরুণদেরও

ক্রীড়া ডেস্ক : গত দুই সপ্তাহে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ ম্যাচ খেলেছে পাঁচটি। টানা খেলার ধকল, চোটের মড়ক আর অস্থির গরমে টাইগার শিবিরের অবস্থা এখন বেশ নড়বড়ে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর এবার শিরোপা নির্ধারণী লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। এশিয়া কাপের মর্যাদার ফাইনালের আগে আবারো প্রশ্ন উঠছে দলের তরুণদের পারফরম্যান্স নিয়ে। মিরাজ, মু্স্তাফিজ ও মিথুন বাদে বলার মতো কারো পারফরম্যান্স নেই। দলের জয়ে মূল ভূমিকায় আসতে পারছেন না তরুণরা। তবে ফাইনালে জিততে হলে সিনিয়রদের সঙ্গে দায়িত্ব নিতে হবে দলের তরুণ খেলোয়াড়দের।

 

এশিয়া কাপের সবচেয়ে সফল ও শক্তিশালী দল ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। ধারে, ভারে, শক্তি, পরিসংখ্যান ও পারফরম্যান্সে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। রোহিত, ধাওয়ান, ধোনি কিংবা ভুবনেশ্বরদের বিপক্ষে জিততে হলে দলীয় পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। ইনজুরির কারণে বাংলদেশ দল থেকে ইতিমধ্যেই ছিটকে পড়েছেন অভিজ্ঞ দুই তারকা ক্রিকেটার তামিম ও সাকিব। তাই চোটাক্রান্ত টাইগার শিবিরের ভলো পারফরম্যান্সের জন্য কাল দুবাইয়ে ভূমিকা রাখতে হবে দলের তরুণ তুর্কিদের। এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে জয়ে ব্যাটিংয়ে মুশফিক ও মিথুনের সঙ্গে বোলিংয়ে ভূমিকা ছিল মাশরাফি, মুস্তাফিজ ও মিরাজের। এই ম্যাচে আলো ছড়াতে পারেননি তরুণ ক্রিকেটার মোসাদ্দেক ও ২৩ বছর বয়সি লিটন।

 

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৩৬ রানের লজ্জার পরাজয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ নিয়মরক্ষার জন্য হওয়ার কারণে দলে এসেছিল অনেক পরিবর্তন। দলে ছিলেন না মুশফিকুর রহিম। চোটের কারণে তামিম ইকবালের এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল তরুণ তুর্কি মুস্তাফিজুর রহমানকে। অভিষেক হয় দুই তরুণের, ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও পেসার আবু হায়দার রনির। এ ছাড়া দলে তরুণ হিসেবে খেলেন মোহাম্মদ মিথুন, মোসাদ্দেক হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। সমসাময়িক লিটন দাসও তরুণ ওপেনার বলা চলে। সেই হিসেবে জ্বলে উঠতে পারেননি কেউই। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অর্ধশতক পাওয়া মিথুন ফেরেন মাত্র দুই রানে। অভিষেক স্মরণীয় করে তুলতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। বোলিং ভালো করেছেন পেসার আবু হায়দার রনি, পেয়েছেন দুটি উইকেট। তবে শেষপর্যন্ত এতে কোনো লাভ হয়নি বাংলাদেশের। মোসাদ্দেক হোসেন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ২৬ রানে। বোলিংয়েও ব্যর্থ তরুণরা। রনি ছাড়া আর কেউই উইকেট পাননি নবীন খেলোয়াড়দের মধ্যে।

 

এরপর সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হারের দিনও আলো ছড়াতে পারেননি তরুণরা। ব্যাট করতে নেমে নাজমুল ইসলাম শান্ত ৭, মিথুন ৯, মোসাদ্দেক ১২ করে সাজঘরে ফেরেছেন। অন্যদের ব্যর্থতার দিনে ৪২ রান আসে কেবল মিরাজের কাছ থেকে। সুপার ফোরের দ্বিতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩ রানের রুদ্ধশাস জয়েও ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের পথ দেখিয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল কায়েস। ব্যাটিংয়ে নাজমুল হোসেন হোসাইন শান্ত ৬, মিথুন ১ রান করেন। এছাড়া ওইদিন অভিষেক হওয়া তরুণ স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু ৮ ওভারে ২৯ রান দিলেও পাননি কোনো উইকেটের দেখা।

 

সবশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে অঘোষিত সেমিতেও লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিবের অনপুস্থিতে দলে ডাক পাওয়া মুমিনুল। লিটনের ৬ রানের পর ৫ রানে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। শুক্রবার তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপে স্বপ্নের ফাইনাল খেলবে বাংলাদেশ। তামিম-সাকিব ছাড়া বাংলাদেশকে পুরো টুর্নামেন্টে টেনেছেন মাশরাফি-মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহরা। চোটের কারণে সেই মাশরাফি, মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিককে ছাড়াই গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ পাঁচটি বল খেলেছে বাংলাদেশ দল। কঠিন প্রতিপক্ষ ভারত। ওখানে শুধু চার-পাঁচজনের ওপর নির্ভর হলে চলবে না। পুরো দলগত পারফরম্যান্স হতে চাই। এজন্য এগিয়ে আসতে হবে তরুণদের। শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে শিরোপার স্বপ্ন দেখতে হলে আহত এই বাঘদের সঙ্গে আজ ভালো কিছু করে দেখাতে হবে দলের আগামীর ক্রিকেটারদের। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮/শামীম