খেলাধুলা

চেজের অপরাজিত ৯৮-এ ঘুরে দাঁড়িয়েছে উইন্ডিজ

ক্রীড়া ডেস্ক : দিনের নির্ধারিত ৯০ ওভারের পরও খেলা হলো পাঁচ ওভার। রোস্টন চেজ আম্পায়ারদের কাছে বাড়তি আরো এক ওভার চাইতেই পারতেন! হায়দরাবাদ টেস্টে সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ২ রান দূরে আছেন চেজ। তবে এই ২ রানের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে দ্বিতীয় দিনের সকাল পর্যন্ত! প্রথম দিন শেষে তিনি অপরাজিত আছেন ৯৮ রানে। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় এই টেস্টের প্রথম দিনের ৯৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ২৯৫ রান। অথচ একটা সময় ১১৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে মূলত চেজের ব্যাটে চড়েই। দলে ফেরা অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের অবদানও কম নয়। সপ্তম উইকেটে চেজের সঙ্গে ১০৪ রানের জুটি গড়েন হোল্ডার। এই নিয়ে সপ্তম উইকেটে তিনটি সেঞ্চুরি জুটি উপহার দিলেন এই দুজন। হোল্ডার আউট হয়েছেন ৫২ রান করে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম আট ব্যাটসম্যানই দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। তবে চল্লিশ পেরোতে পেরেছেন শুধু চেজ ও হোল্ডারই। প্রথম টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুক্রবার সকালে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন হোল্ডার। ভারত শুরুতেই খায় বড় ধাক্কা। মাত্র ১০ বল করতেই কুঁচকির চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন অভিষিক্ত পেসার শার্দুল ঠাকুর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার ক্রেইফ ব্রাফেট ও কাইরান পাওয়েল শুরুটা করেছিলেন দেখেশুনে। প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারাতে দেননি দুজন। দ্বাদশ ওভারে পাওয়েলকে (২২) রবীন্দ্র জাদেজার ক্যাচ বানিয়ে ৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। আরেক ওপেনার ব্রাফেট প্রথম ওভারেই নিয়েছিলেন ৮ রান। পরের ৬ রান করতে খেলেন ৬০ বল। এরপরই চায়নাম্যান বোলার কুলদীপ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান (৬৮ বলে ১৪)। এরপর শাই হোপ ও শিমরোন হেটমায়ারও উইকেটে থিতু হয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি। লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে পেসার উমেশ যাদবের বলে এলবিডব্লিউ হোপ (৬৮ বলে ৩৬)। বিরতির পর কুলদীপের শিকার হেটমায়ার (৩৪ বলে ১২)। ব্যর্থ হয়েছেন পাঁচে নামা সুনীল অ্যামব্রিস। কুলদীপের বলে জাদেজাকে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেন ২৬ বলে ১৮। তখন ১১৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপরই চেজের লড়াই শুরু। প্রথমে শেন ডোরিচের সঙ্গে গড়েন ৬৯ রানের জুটি। চা বিরতির আগে উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ডোরিচকে (৬৩ বলে ৩০) এলবিডব্লিউ করে এ জুটি ভাঙেন উমেশ। এরপর হোল্ডারের সঙ্গে চেজের শতরানের সেই জুটি। দুজনই তুলে নেন ফিফটি। চেজ পঞ্চাশ পূর্ণ করেন ৮০ বলে, হোল্ডার ৮৫ বলে। নির্ধারিত ৯০ ওভারের শেষ বলে হোল্ডারকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন উমেশ। ডানহাতি পেসারের বাউন্সারে উইকেটরক্ষক ঋষভ পন্তের গ্লাভসে ধরা পড়ার আগে ৯২ বলে ৬ চারে ৫২ রান করেন হোল্ডার। তখনো দিনের নির্ধারিত সময়ের প্রায় মিনিট বিশেক বাকি।  দেবেন্দ্র বিশুকে (২*) সঙ্গে নিয়ে সময়টা পার করে দেন চেজ। আরেক ওভার বেশি পেলে হয়ত সেঞ্চুরির আনন্দ নিয়েই রাতে ঘুমাতে যেতে পারতেন ২৬ বছর বয়সি ব্যাটসম্যান। চেজ ১৭৪ বলের ইনিংসে চার মেরেছেন ৭টি, ছক্কা একটি। অর্থাৎ ৯৮ রানের মাত্র ৩৪ এসেছে বাউন্ডারি থেকে। বাকি ৬৪ রান নিয়েছেন দৌড়ে। শেষ দুই ভারত সফরে এই প্রথম ভারতীয় বোলারদের দ্বিতীয় নতুন বল নিতে বাধ্য করল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১৩ সালে সবশেষ ভারত সফরের দুই টেস্টে এবং এই সফরে প্রথম টেস্টে- কোনোটিতেই যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি! রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ অক্টোবর ২০১৮/পরাগ