খেলাধুলা

৩০৪ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : মিরপুর টেস্টে বাংলাদেশের ৫২২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩০৪ রানে অলআউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে। স্কোর: ৩০৪/৯ (১০৫.৩ ওভার)। ৩০৪ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে তাইজুলের পাঁচ আর মিরাজের তিন উইকেটের সঙ্গে একটি উইকেট আরিফুল হকের। চোটের কারণে জিম্বাবুয়ের তেন্দাই চাতারা ব্যাটিং করার অবস্থায় না থাকায় এখানেই থামতে হলো সফরকারীদের। আর তাতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় দিন শেষে ৩০৪ রানে অলআউট হয়েছে জিম্বাবুয়ে। প্রথম ইনিংসে ৫২২ রানের বড় ইনিংসের সুবাদে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামার আগে ২১৮ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ। তাইজুলের ৫ উইকেট টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেটে পেলেন তাইজুল ইসলাম। এনামুল হক জুনিয়র ও সাকিব আল হাসানের পর বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে টানা তিন ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন তাইজুল। ইনিংসের ১০৬তম ওভারে জিম্বাবুয়ের রেগিস চাকাভাকে মুমিনুল হকের হাতে ক্যাচে পরিনত করলে ৫ উইকেট পূরণ হয় তার। এর আগে সিলেটে টানা দুই ইনিংসে পাঁচ বা ততোদিকে উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন বাংলাদেশি এ বাঁহাতি স্পিনার। মিরাজের জোড়া আঘাত বল হাতে আজ দিনের শুরুতেই ব্রায়ান চারিকে ফিরিয়েছিলেন মিরাজ। ইনিংসের ৯৯তম ওভারেই পেলেন জোড়া সাফল্য। প্রথম বলে তাইজুলের দুর্দান্ত ক্যাচে টেলরের পর তৃতীয় বলে ব্রেন্ডন মাভুতাতে ফেরান তিনি। তার ফুল লেংথের বলে স্লিপে আরিফুল হকের হাতে ক্যাচ তুলে দিলে শূন্য রানে ফিরতে হয় মাভুতাকে। তাইজুলের দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরলেন টেলর সেঞ্চুরির পর বিপদজনক হয়ে উঠা টেলরকে ফেরালেন তাইজুল ইসলাম। দিনের খেলা ৬ ওভার বাকি থাকতেই মিরাজের ফুল-লেংথ বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। মিরাজের করা ওভারের প্রথম বলেই স্কয়ার আর মিড উইকেটের মাঝে দুর্দান্ত এক ডাইভিং ক্যাচে টেলরকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তাইজুল। আউট হওয়ার আগে ১৯৪ বলে ১১০ রান করেন টেলর। টেলরের সেঞ্চুরি মুরের সঙ্গে অসাধারণ এক জুটিতে জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধের পর সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেলর। তাইজুলের করা ইনিংসের ৯৫তম ওভারের প্রথম বলেই দুই রান নিয়ে সেঞ্চুরি পূরণ করেন টেলর। ১৮৭ বলে ৮টি চারের সাহায্যে শতরান করেন তিনি। টেস্টে জিম্বাবুয়ে তারকার এটা পঞ্চম সেঞ্চুরি। প্রতিরোধ ভাঙলেন আরিফুল দুই দুইবার জীবন পেয়েও সেঞ্চুরি করতে পারলেন না পিটার মুর। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে জীবন পাওয়ার পর তাইজুলের প্রচেষ্টায়ও অক্ষত ছিলেন তিনি। আগের ওভারে তাইজুলের বল মুশফিক ঠিকমতো হাতে জমাতে না পারায় ফেরানো যায়নি তাকে। কিন্তু পরের ওভারেই আরিফুলের বলে এলবিডব্লিউ হলে ব্যক্তিগত ৮৩ রানে ফিরতে হয় তাকে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিপরীতে রিভিউ নিয়েও এবার শেষ রক্ষা হয়নি তার। মুরের আউটে ষষ্ঠ উইকেটে ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে ১৩৯ রানের সবচেয়ে বড় জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ের। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টেস্ট সেঞ্চুরির সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ হয়েছেন মুর। জীবন পেলেন মুর

মুস্তাফিজুর রহমানের বলে কাভারে ক্যাচ তুলেছিলেন পিটার মুর। লাফিয়ে উঠে এক হাতে চেষ্টা করেছিলেন বদলি ফিল্ডার নাজমুল ইসলাম অপু। কিন্তু বল হাতে জমাতে পারেননি। ৭৫ রানে জীবন পান মুর। টেলর-মুর জুটির একশ

ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুরের ষষ্ঠ উইকেট জুটি একশ ছুঁয়েছে। ১৭২ বলে ছুঁয়েছে জুটির সেঞ্চুরি। যেখানে মুরের অবদান ৬৩, টেলরের ৩৯। মুরের ফিফটি

আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফিফটি করেছেন পিটার মুর। মেহেদী হাসান মিরাজকে চার হাঁকিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেছেন ৮১ বলে, ৮ চার ও এক ছক্কায়। আট টেস্টে এটি তার পঞ্চম ফিফটি। জিম্বাবুয়ের দুইশ

চা বিরতির পর প্রথম ওভারেই দলীয় দুইশ ছুঁয়েছে জিম্বাবুয়ের স্কোর। ৭৩ ওভার ৫ বলে দুইশ করেছে তারা। তখন ব্রেন্ডন টেলর ৬৫ ও পিটার মুর ৪৫ রানে ব্যাট করছেন। টেলর-মুর জুটিতে জিম্বাবুয়ের প্রতিরোধ

দ্বিতীয় সেশনের শুরুর দিকে দ্রতই শন উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজার উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তাইজুল ইসলাম। তবে ষষ্ঠ উইকেটে পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিতে প্রতিরোধ গড়েছেন ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুর। টেলর তুলে নিয়েছেন ফিফটি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফিফটির কাছে আছেন মুর। দ্বিতীয় সেশনে ২৯ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান তুলেছে জিম্বাবুয়ে। চা বিরতিতে যাওয়ার সময় সফরকারীদের স্কোর ৭৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৫ রান। টেলর ৫৯ ও মুর ৪৪ রানে অপরাজিত আছেন। ৬৪ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন এই দুজন। বাংলাদেশের থেকে এখনো ৩২৭ রানে পিছিয়ে আছে জিম্বাবুয়ে। ফলোঅন এড়াতেই করতে হবে আরো ১২৮ রান।

 

টেলর-মুর জুটির পঞ্চাশ

ষষ্ঠ উইকেটে ফিফটি রানের জুটি গড়েছেন ব্রেন্ডন টেলর ও পিটার মুর। ৮৯ বলে ছুঁয়েছে জুটির পঞ্চাশ। যেখানে মুরের অবদান ৩৬, টেলরের ১৬। ৭০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫ উইকেটে ১৮৭ রান। টেলর ৫৬ ও মুর ৩৯ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। টেলরের ফিফটি

ফিফটি পেয়েছেন ব্রেন্ডন টেলর। ১০৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁতে ৪টি চার হাঁকান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এটি তার নবম টেস্ট ফিফটি। তাইজুলের চতুর্থ শিকার রাজা

সিকান্দার রাজাকে বেশিক্ষণ উইকেটে স্থায়ী হতে দেননি তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের সোজা বলে বোল্ড হয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও তাইজুলের বলে একইভাবে আউট হয়েছিলেন তিনি। রাজা ১২ বলে ডাক মেরে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৫ উইকেটে ১৩১ রান। ২ রানের মধ্যে পড়েছে শেষ ২ উইকেট। ৪০ রানে ব্যাটিং করছেন ব্রেন্ডন টেলর। তার নতুন সঙ্গী পিটার মুর।

 

উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে তাইজুলের তৃতীয়

শন উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে ৩৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভেঙেছেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের সোজা বলে বোল্ড হয়েছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ইনিংসে এটি তাইজুলের তৃতীয় উইকেট। উইলিয়ামস ২৮ বলে একটি চারে ১১ রান করে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪ উইকেটে ১২৯। তখন ৩৮ রানে ব্যাটিং করা ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সিকান্দার রাজা। প্রথম সেশনে ২ উইকেট

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ২৬ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৭৫ রান যোগ করেছে জিম্বাবুয়ে, এর মধ্যে তারা হারিয়েছে ২ উইকেট। প্রথম ঘণ্টার শেষ দিকে ডোনাল্ড তিরিপানোকে ফেরান তাইজুল ইসলাম। লাঞ্চের আগে মেহেদী হাসান মিরাজের শিকার ব্রায়ান চারি। লাঞ্চ বিরতির সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৪৪ ওভারে ৩ উইকেটে ঠিক ১০০ রান। বাংলাদেশকে আবার ব্যাটিংয়ে নামাতে এখনো ২২২ রান করতে হবে তাদের। ব্রেন্ডন টেলর ১৯ ও শন উইলিয়ামস ১ রানে অপরাজিত আছেন।

 

রিভিউ নিয়ে চারিকে ফেরাল বাংলাদেশ

ফিফটি করা ব্রায়ান চারিকে ফিরিয়ে ৫৬ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ভেঙেছেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল শরীর দিয়ে ঠেকিয়েছিলেন চারি। বল তার প্যাডে লেগে ওপরে ওঠার সময় গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় শর্ট লেগে। একহাতে বল তালুবন্দি করেন মুমিনুল হক। ক্যাচের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার কুমার ধর্মসেনা অবশ্য প্রথমে আউট দেননি। মাহমুদউল্লাহ নেন রিভিউ। আল্ট্রাএজে দেখা যায় বল চারির গ্লাভস ছুঁয়েছিল। পাল্টায় সিদ্ধান্ত। চারি ১২৮ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করে ফেরার সময় জিম্বাবুয়ের স্কোর ৩ উইকেটে ৯৬। ১৬ রান নিয়ে ব্যাট করা ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন শন উইলিয়ামস।

 

চারির ফিফটি

জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ফিফটি করেছেন ব্রায়ান চারি। ডানহাতি ওপেনার ব্যক্তিগত ৪০ থেকে তাইজুল ইসলামকে টানা দুই চার হাঁকিয়ে পৌঁছে যান ৪৮-এ। এক বল পর আরেকটি বাউন্ডারিতে স্পর্শ করেন মাইলফলক। চারি প্রথম ২০ রান করতে খেলেছিলেন ৮৮ বল। পরের ৩০ রান করেন মাত্র ২৩ বলে। পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন ১১১ বলে। সাত টেস্টে এটি তার দ্বিতীয় ফিফটি। ৩৭ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ২ উইকেটে ৮৫ রান। তখনো বাংলাদেশের থেকে ৩৩৭ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা। চারি ৫২ ও ব্রেন্ডন টেলর ৬ রানে অপরাজিত আছেন।

 

দিনের প্রথম আঘাত তাইজুলের

তৃতীয় দিনে জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম আঘাত হেনেছেন তাইজুল ইসলাম। দিনের একাদশ ওভারে তার বলে আউট হয়ে ফিরে গেছেন আগের দিন নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা ডোনাল্ড তিরিপানো। অফ স্টাম্পের বাইরে কিছুটা লাফিয়ে ওঠা বলে প্রথম স্লিপে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দেন তিরিপানো। আগের দিন স্লিপে হ্যামিল্টন মাসাকাদজার ক্যাচও নিয়েছিলেন মিরাজ। প্রথম দুই উইকেটই নিলেন তাইজুল। ৪৬ বলে একটি চারে ৮ রান করে ফেরেন তিরিপানো। জিম্বাবুয়ের স্কোর তখন ২ উইকেটে ৪০ রান। ব্রায়ান চারির সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন ব্রেন্ডন টেলর।

 

গুরুত্বপূর্ণ প্রথম সেশন

ফলোঅন এড়াতে এখনো ৩২৩ রান করতে হবে জিম্বাবুয়েকে। আর জয় পেতে বাংলাদেশের নিতে হবে আরো ১৯ উইকেট। এজন্য তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনকে মহাগুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেন, ‘আমার মনে হয় খুব সহজেই জয় আসবে। আমাদের বোলারদের অনেক কাজ বাকি আছে। কারণ আমাদের দুই ইনিংস মিলিয়ে ২০ উইকেট নিতে হবে। কাল (মঙ্গলবার) প্রথম সেশনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম সেশনটা কাজে লাগাতে পারলে অবশ্যই ভালো কিছু হবে।’ চালকের আসনে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় দিনে মুশফিকুর রহিমের রেকর্ড গড়া ডাবল সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড় গড়েছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটে ৫২২ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১ উইকেটে ২৫ রান। ব্রায়ান চারি ১০ ও নাইটওয়াচম্যান ডোনাল্ড তিরিপানো শূন্য রান নিয়ে মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমেছেন। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের খেলা শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে নয়টায়। দ্বিতীয় দিন শেষে

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫২২/৭ ডিক্লে. (মুশফিক ২১৯*, মুমিনুল ১৬১, মিরাজ ৬৮*, মাহমুদউল্লাহ ৩৬; জার্ভিস ৫/৭১) জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৫/১ (মাসাকাদজা ১৪, চারি ১০*, তিরিপানো ০*; তাইজুল ১/৫)।

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ নভেম্বর ২০১৮/পরাগ