ক্রীড়া প্রতিবেদক, মিরপুর থেকে : ফিফটি পেলেন তিনজন। যাদের অন্তত দুইজনের সামনে ছিল সেঞ্চুরি করার ভালো সুযোগ। কিন্তু তিন অঙ্ক ছুঁতে পারলেন না কেউই। শেষটায় উঠল না কোনো ঝড়। বাংলাদেশের সংগ্রহটাও তাই বড় হলো না। মিরপুরে আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫৫ রান তুলেছে বাংলাদেশ। সিরিজে সমতা ফেরাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে করতে হবে ২৫৬ রান। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ- এই পাঁচজন দেশের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন, এমন ম্যাচের সংখ্যা আজ একশ ছুঁয়েছে। বিশেষ মাইলফলকের ম্যাচে পঞ্চপাণ্ডবের তিনজন পেয়েছেন ফিফটি। তবে তামিম (৫০), মুশফিক (৬২) ও সাকিবের (৬৫) ইনিংসগুলো আরো বড় হতে পারত। শের-ই-বাংলায় টস করতে নেমেই মাশরাফি ছুঁয়েছেন আরেক কীর্তি। দেশকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডেতে (৬৯) নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডে হাবিবুল বাশারকে ছুঁয়েছেন মাশরাফি। মাইলফলকের ম্যাচে টসটা অবশ্য জিততে পারেননি মাশরাফি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা হয় জোড়া ধাক্কায়। দ্বিতীয় ওভারেই চোট নিয়ে মাঠ ছেড়ে যান লিটন দাস। পেসার ওশানে টমাসের ইয়র্কারে ডান পায়ের গোড়ালিতে চোট পান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। মাঠ ছাড়েন স্ট্রেচারে করে। সেই ধাক্কা টাটকা থাকতেই টমাসের পরের ওভারে ফেরেন তিনে নামা ইমরুল কায়েস। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জিম্বাবুয়ে সিরিজে রানের বন্যা বইয়ে দেওয়া ইমরুল এই সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে দুই অঙ্কই ছুঁতে পারলেন না। বাংলাদেশ শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠে তৃতীয় উইকেট জুটিতে, তামিম ও মুশফিকের ব্যাটে। চোট কাটিয়ে প্রথম ম্যাচে ভালো করতে না পারলেও এদিন তামিম ছিলেন দারুণ। ইনিংসের প্রথম ছক্কা আসে তার ব্যাট থেকেই। একাদশ ওভারে কিমো পলকে লং অনের ওপর দিয়ে আছড়ে ফেলেন তামিম। পরের বলে একই জায়গা দিয়ে মারেন চার। শতরানের জুটি গড়ার পথে ফিফটি করেন দুই ব্যাটসম্যানই। প্রথমে ফিফটি করেন অবশ্য মুশফিক। ৬২ বলে ৪ চারে ক্যারিয়ারের ৩২তম ফিফটি পূর্ণ করেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। তামিম ফিফটি করেন মুশফিকের চেয়ে দুই বল কম খেলে, ৪ চার ও এক ছক্কায়। এরপর নিজের ব্যক্তিগত খাতায় অবশ্য আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি তামিম। লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন ডিপ মিড উইকেটে। ৬৩ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৫০ রানের ইনিংসটি সাজান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তামিমের বিদায়ে ভাঙে ১১১ রানের জুটি। ৭ রানের ব্যবধানে ফেরেন মুশফিকও। টমাসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি। ৮০ বলে ৫ চারে ৬২ রান আসে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে। চতুর্থ উইকেটে ৬১ রানের জুটিতে দলের স্কোর দুইশর কাছে নিয়ে যান সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে ভাঙে এ জুটি। ৫১ বলে ৩ চারে মাহমুদউল্লাহ ৩০ রান করে ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ১৯৩। আগের ম্যাচে ছোট্ট ঝোড়ো ইনিংস খেলা সৌম্য সরকার এদিন কিছুই করতে পারেননি। টমাসকে আপার কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দেন থার্ডম্যানে (৮ বলে ৬)। চোট সামলে আবার উইকেটে এসেছিলেন লিটন। কিন্তু তিনিও তেমন কিছুই করতে পারেননি (১৪ বলে ৮)। এর আগে আউট হয়ে যেতে পারতেন সাকিবও। টমাসের বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। তবে টমাস ‘নো’ বল করায় বেঁচে যান সাকিব। ফ্রি-হিট পেয়ে টমাসকে পুল করে ডিপ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে আছড়ে ফেলে ৪৬ থেকে সাকিব পূর্ণ করেন ফিফটি। ফিফটি করলেও শেষ করে আসতে পারেননি সাকিব। ৪৭তম ওভারে তিনি ফেরেন কেমার রোচের বলে বোল্ড হয়ে। সাকিব ৬২ বলে ৬ চার ও এক ছক্কায় ৬৫ করে ফেরার পর বাংলাদেশের স্কোরও বড় হয়নি। মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ দুই ওভারে স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পারেন মাত্র ৫ রান! সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৫/৭ (তামিম ৫০, লিটন ৮, ইমরুল ০, মুশফিক ৬২, সাকিব ৬৫, মাহমুদউল্লাহ ৩০, সৌম্য ৬, মাশরাফি ৬*, মিরাজ ১০*; টমাস ৩/৫৪, বিশু ১/২৭, রোচ ১/৩৯, রোভম্যাভ ১/৪১, পল ১/৬৮)।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ডিসেম্বর ২০১৮/পরাগ