খেলাধুলা

ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপে বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক : মার্সেল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগের গেল আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রিমিয়ার লিগে নাম লেখায় বসুন্ধরা কিংস। তাতে করে তারা সুযোগ পায় মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপে। প্রথমবার অংশ নিয়েই তারা ফাইনালে উঠেছিল ফেড কাপের। কিন্তু ঢাকার ফুটবলের পাওয়ার হাউজ আবাহনীর কাছে হেরে নিঃশ্বাস দূরত্বে থাকা শিরোপাটা অধরাই থেকে যায়। তবে মৌসুমের দ্বিতীয় টুর্নামেন্টেই তারা শিরোপা ছুঁয়ে ফেলেছে। ওয়ালটন ফেডারেশন কাপে না পারলেও ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপের শিরোপা জিতে নিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। আজ বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপের ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানে শেখ রাসেলকে হারিয়ে প্রথমবার অংশ নিয়ে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়েছে নবাগত ক্লাবটি। বসুন্ধরা কিংসকে শিরোপা জেতানোর ম্যাচে গোল করেছেন দলটির ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোস ভিনিসিয়াস ডি কস্তা সোয়ারেস ডি সিলভা ও মতিন মিয়া। শেখ রাসেলের হয়ে একটি গোল করেছেন নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড রাফায়েল ওডোইন। বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে গোলের দেখা পেতে বেশি সময় নেয়নি বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচের ১৭ মিনিটের সময় বসুন্ধরা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোস ভিনিসিয়াস ডি কস্তা সোয়ারেস ডি সিলভা ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে গোল করেন। তবে ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে সমতা ফেরায় শেখ রাসেল। এ সময় দলটির নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ওডোইন ডি বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে নিশানা ভেদ করেন। তাতে ১-১ গোলের সমতা নিয়েই শেষ হয় প্রথমার্ধের খেলা। বিরতির পর ব্যবধান বাড়াতে উভয় দল মরিয়া হয়ে খেলে। বেশ কিছু সুযোগও আসে উভয় দলের সামনে। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগিয়ে কেউই জাল কাঁপাতে পারেনি। তাতে ১-১ গোলের সমতা নিয়েই শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ম্যাচের ৯৫ মিনিটে বসুন্ধরা কিংসের বদলি খেলোয়াড় মতিন মিয়া ডি বক্সের মধ্যে থেকে ঠা-া মাথার শটে বল জালে জড়ান। বাকি সময়ে এই গোলটি আর শোধ দিতে পারেনি শেখ রাসেল। তাতে মতিন মিয়ার গোলটিই প্রথম শিরোপার স্বাদ দেয় নবাগত বসুন্ধরা কিংসকে। চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা ট্রফি, মেডেল ও ৫ লাখ টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে। রানার্স-আপ শেখ রাসেল ট্রফি, মেডেল ও ৩ লাখ টাকা প্রাইজমানি পেয়েছে। ফাইনালে ম্যাচসেরা হন বসুন্ধরা কিংসের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্কোস ভিনিসিয়াস ডি কস্তা সোয়ারেস ডি সিলভা। সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের পল এমিল। টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। তিনি পুরস্কার হিসেবে ওয়ালটন স্মার্টফোন পেয়েছেন। ফেয়ার প্লে ট্রফি জিতেছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। ফাইনাল শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিতরণ করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাহউদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপের সিনিয়র অপারেটিভ ডিরেক্টর ( গেমস অ্যান্ড স্পোর্টস) এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন), ফিফা কাউন্সিল মেম্বার ও বাফুফের মহিলা উইং এর চেয়ারম্যান মিস মাহফুজা আক্তার কিরণসহ অন্যান্যরা। ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপের এবারের আসরেরগ্রুপ পর্বের খেলা অনুষ্ঠিত হয় ১ থেকে ৯ ডিসেম্বর। গ্রুপ পর্ব থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব, চট্টগ্রাম আবাহনী, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি, ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।১১, ১২, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় চারটি কোয়ার্টার ফাইনাল। সেখান থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ব্রাদার্স ইউনিয়ন, ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও বসুন্ধরা কিংস। ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় দুটি সেমিফাইনাল।সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংস ঢাকা আবাহনীকে সাডেন ডেথে ৭-৬ ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে এসেছিল। আর ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ২-০ গোলে হারিয়ে পাঁচ বছর পর ফাইনালে এসেছিল শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। ওয়ালটন স্বাধীনতা কাপের ‘এ’ গ্রুপে ছিল সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব, আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও টিম বিজেএমসি। ‘বি’ গ্রুপে ছিল চারটি দল- মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, চট্টগ্রাম আবাহনী, রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি ও নবাগত নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব। ‘সি’ গ্রুপে ছিল ঢাকা আবাহনী লিমিটেড, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। ‘ডি’ গ্রুপে ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও বসুন্ধরা কিংস। এই টুর্নামেন্টের কো-স্পন্সর ছিলপ্রগতি ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। সহযোগিতায় ছিল ওয়ালটন গ্রুপের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড মার্সেল। আর অনলাইন পার্টনার হিসেবে ছিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি.কম। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ ডিসেম্বর ২০১৮/আমিনুল