খেলাধুলা

মিরাজ তৃপ্ত তবে শেষ করতে না পারার আক্ষেপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : এবারের বিপিএলে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিপিএলের ক্যানভাসে তুলির আঁচড় দিলেন মিরাজ। বোলার মিরাজ হয়ে উঠলেন ব্যাটসম্যান। বিপিএলে এখন পর্যন্ত ছয় ব্যাটসম্যান হাঁকিয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। সেই তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি মিরাজ। বুধবার খুলনার বিপক্ষে ৪৫ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেছেন ৬ চার ও ১ ছক্কায়। টি-টোয়েন্টির মানানসই ব্যাটিং বলা যাবে না কোনোভাবেই। কিন্তু মিরাজের ইনিংসটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝিয়েছেন শ্রীলঙ্কান কিংবদন্তি ও খুলনার কোচ মাহেলা জয়াবর্ধনে। ‘এ ধরণের কঠিন উইকেটে কিভাবে ব্যাটিং করতে হয় তা দেখিয়েছে মেহেদী। ওর ব্যাটিং দেখে শেখার আছে অন্যদের।’ খুলনায় মাহমুদউল্লাহ, জহুরুল ইসলাম, পল স্টারলিং ও আরিফুলের মতো ক্রিকেটার খেলছেন। তাদের ব্যাটে রান নেই। সেখানে তরুণ তুর্কী মিরাজ নিজেকে একধাপ ওপরে এনে ব্যাটিং দ্যুতি ছড়িয়েছেন। সচরাচর ৬-৭ এ ব্যাটিং করা মিরাজ দলকে জেতাতে উঠে আসেন তিনে। মিরপুরে রাজশাহী কিংস ১১৮ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজের উইকেট হারায়। লক্ষ্য তাড়ায় ওভারপ্রতি ৬ করে নেওয়ার দরকার ছিল। টিম ম্যানেজম্যান্টের পরিকল্পনা ছিল প্রথম তিন ওভারে কোনো উইকেট হারালে মিরাজ যাবে তিনে ব্যাটিং। দলের পরিকল্পনা জানার পর নিজ কাঁধে দায়িত্ব নেন।

 

প্রথমত মিরাজ রাজশাহীর অধিনায়ক। দ্বিতীয়ত প্রথম ম্যাচ হারায় দ্বিতীয় ম্যাচে রাজশাহীর জয়ের দরকার ছিল। তাই অধিনায়ক মিরাজ বুক চিঁতিয়ে লড়াইয়ের সাহস দেখালেন। তিনে নেমে মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে মিরাজ গড়েন ৮৯ রানের জুটি। রাজশাহী জয়ের ভিত পেয়ে যায় সেখানেই। ‘তিনে নামার পরিকল্পনা ছিল ম্যানেজমেন্ট থেকে। ম্যানেজমেন্ট থেকে বলেছিল, প্রথম তিন ওভারের মধ্যে উইকেট হারালে তাহলে আমি যাব, তা না হলে সরকার (সৌম্য) ভাই যাবে। ভালো কমিনেকেশন ছিল। পরিকল্পনা সফল হয়েছে। খুব ভালো লাগছে।’ ‘আমাদের ব্যাটিং লাইনআপ বড় করার জন্য আমার উপরে আসা। আমার সাত বা আট নাম্বারে নামা হত। আমাদের বেশি রানও দরকার ছিল না। ছয়ের আশেপাশে রান রেট ছিল। ওইসময় মারার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সিঙ্গেল নিয়ে খেলা।’ হুটহাট রাজশাহীর পরিকল্পনা পাল্টায়। তাতেও পিছু পা হননি মিরাজ। অবশ্য এর আগেও এরকম আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাটিং ঝলক মিরাজ দেখিয়েছেন। সবশেষ এশিয়া কাপে উদ্বোধনী জুটি বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর বিগ ফাইনালে লিটনের সঙ্গী হয়ে নেমেছিলেন মিরাজ। সেই আত্মবিশ্বাস এবারও কাজে লেগেছে মিরাজের। ‘এশিয়া কাপের ফাইনাল থেকে অনেক আত্মবিশ্বাস পেয়েছি। আমি চিন্তা করেছি আমি পারব। আমি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলেছি। ওখান থেকেই আত্মবিশ্বাস এসেছে। পাশাপাশি দলের সবাই বিশ্বাস করেছে। এটা আরও ভালো লেগেছে।’

 

১২০ বলে ১১৮ রান তাড়া করে জয়ের জন্য ১৯তম ওভার পর্যন্ত খেলেছে রাজশাহী। মাত্র ৭ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে জিতেছে পদ্মাপাড়ের দলটি। সহজ লক্ষ্য কঠিন করে জেতার ‘দায়ও’ নিজ কাঁধে নিয়েছেন মিরাজ। ‘আমার একটু ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি একটু স্লো খেলে ফেলেছি শেষ সময়ে। আমি চেষ্টা করলে শেষ ওভারে যেত না। আমি সেট ব্যাটসম্যান ছিলাম। আমার দায়িত্ব নিয়ে শেষ করা উচিত ছিল। সমস্যা হয়েছে, তবুও জয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল আমাদের জন্য। আমরা প্রথম ম্যাচটা হেরেছিলাম। খুব ভালো লাগছে। আমরা কামব্যাক করেছি। আমাদের একটা জয় দরকার ছিল দলকে চাঙ্গা করার।’ রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ জানুয়ারি ২০১৯/ইয়াসিন