খেলাধুলা

ডি ভিলিয়ার্স-হেলসকে ‘মিস’ করবে রংপুর

ক্রীড়া প্রতিবেদক : অ্যালেক্স হেলস চোট নিয়ে বিপিএল থেকে ছিটকে গেছেন আগের দিনই। আজ রংপুর রাইডার্সের হয়ে নিজের শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন এবি ডি ভিলিয়ার্সও। দারুণ ফর্মে থাকা দুই ব্যাটসম্যানকে তাই প্লে-অফে পাচ্ছে না রংপুর রাইডার্স। বাকি টুর্নামেন্টে তাদের অভাব বোধ করবেন বলে জানিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। পাশাপাশি তাদের চলে যাওয়াটা স্থানীয় ক্রিকেটারদের জন্য ভালো সুযোগ হিসেবেও দেখছেন রংপুর অধিনায়ক। বিপিএলে আট ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি ফিফটিতে ৩০৪ রান করেছেন ইংলিশ ব্যাটসম্যান হেলস। প্রথম পর্বের মাঝপথে দলের সঙ্গে যোগ দিয়ে ছয় ম্যাচে একটি সেঞ্চুরিতে ২৪৭ রান করেছেন ডি ভিলিয়ার্স। প্রথম ছয় ম্যাচে রংপুর জিতেছিল মাত্র দুটি। ডি ভিলিয়ার্স আসার পর ছয় ম্যাচের সবগুলোই জিতেছে তারা। আরেক দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দারুণ খেলছেন। বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন। ক্রিস গেইল ফর্মে না থাকলেও তাই সমস্যা হয়নি রংপুরের। প্লে-অফে হেলস, ডি ভিলিয়ার্সকে ছাড়া কি তাহলে দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে? মাশরাফি অবশ্য তা মনে করেন না, ‘নাহ, এটা মজা এখন আমার কাছে মনে হয়। সব সময় আমাদের টপ অর্ডারে যে চারজন আছে, রুশোকে তো খুলনা রিটেইনই করেনি। রুশো, হেলসকে আমি মনে করি যে, কেউ হয়তো বা ধরেনি এখানে এসে ওরা পারফর্ম করবে। তবে আমাদের দুইজন খেলোয়াড় অবশ্যই কার্যকরী এই ফরম্যাটে, যেটা এবি ভিলিয়ার্স এবং গেইল। রুশো ও হেলস রান করাতে হয়তো বা অনেকে বলছে টপ শক্তিশালী। কিন্তু আসলে গেইল ও এবি ডি ভিলিয়ার্স আমার কাছে মনে হয় এই দুজন সবার থেকেই আলাদা, অন্তত এই ফরম্যাটে। হেলসও ফর্মে এসেছিল। এবং এবি ডি ভিলিয়ার্স, আমরা জানতাম যে ও ছয়টা ম্যাচ খেলে চলে যাবে, আমরাও মানসিকভাবে প্রস্তুত। আর বিষয়টা হচ্ছে এই রকম টুর্নামেন্টে অনেক কিছুই হয়, একজন ইনজুরডও হতে পারত।’ রংপুর এখন পর্যন্ত হেলসের বদলি খেলোয়াড় আনার চিন্তা করছে না বলেও জানালেন অধিনায়ক, ‘আমরা কোনো খেলোয়াড় আনার চিন্তা করিনি। আমরা ভাগ্যবান যে হেলস এই উইকেটে এসে রান করেছে। চিটাগংয়ের ট্রু, ভালো উইকেটে রান করেছে সে। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল, ফাইনাল যদি সেখানে হতো তাহলে আমি বলতাম যে আমরা তাকে মিস করব। যেহেতু ঢাকায় খেলা, এখানকার উইকেট, অনেক কিছুই ম্যাটার করে। পুরো খেলাটা পরিবর্তন করে দেয়। সে ক্ষেত্রে খুব বেশি পরিবর্তন হওয়ার কথা না। এই জিনিসটা আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়দের বুঝতে হবে যে হেলস যেই ব্যাটিং করেছে সেটা ওরাও করতে পারে। অবশ্যই মিস করব ওদের, ওরা গ্রেট খেলোয়াড়। বিশেষ করে ড্রেসিং রুমে। আর অবশ্যই মাঠে আমাদের যা আছে তা নিয়ে লড়াই করব।’ গেইল গতবারও প্রথম পর্বে ভালো করতে পারেননি। তবে প্লে-অফে করেছিলেন দুই সেঞ্চুরি। যেটি রংপুরকে চ্যাম্পিয়ন করাতে রেখেছিল বড় অবদান। আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে দলের ৯ উইকেটের জয়ের ম্যাচে অপরাজিত ৩৫ রানের আগে দশ ম্যাচে মাত্র একটি ফিফটি করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। আজ নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও ফর্মে ফেরার জন্য গেইলকে তাই বিশ্রাম দেয়নি রংপুর। গেইলের ফর্ম নিয়েও তারা চিন্তিত নন বলে জানালেন মাশরাফি, ‘গেইলকে আমাদের খেলানো দরকার ছিল যত বেশি, কারণ ওর টাচে আসার খুব দরকার। দেখেন ক্রিকেটে তো কিছুই বলা যায় না। আজকেই খেলবে এমন গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। তবে সে এমন একজন খেলোয়াড় যে কিনা একাই একটা ম্যাচ ঘুরিয়ে ফেলতে পারে। সেই প্রমাণ শুধু আগেরবার দিয়েছে তাই নয়, সারা বিশ্বে অনেকবার এই ফরম্যাটে দিয়েছে।’ ডি ভিলিয়ার্স-হেলসের না থাকাকে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিজেদের মেলে ধরার ভালো সুযোগ হিসেবে দেখছেন মাশরাফি,  ‘আমাদের স্থানীয় যারা আছে তাদের স্টেপ আপ করার সময় এখন। সব সময় বলে এসেছি বিপিএল জিততে হলে স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত টপ অর্ডারে আমাদের সেটা প্রয়োজন হয়নি। বড় ম্যাচ থেকে হয়তো প্রয়োজন হবে। তারা কীভাবে খেলবে, চাপ নিয়ে খেলবে নাকি অল আউট খেলবে সেটার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। তবে আমি মজার লড়াই হওয়ার প্রত্যাশা করছি। একটা ভালো লড়াই হবে কুমিল্লার সাথে। আমরা ভাগ্যবান যে আমরা দুইটা সুযোগ পাব। সুতরাং অলআউট না খেলার কোনো কারণ দেখি না।’ সোমবার প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল রংপুর ও কুমিল্লা। প্রথম পর্বের দুই ম্যাচে কুমিল্লাকে ৬৩ ও ৭২ রানে গুটিয়ে দিয়ে ৯ উইকেটে জিতেছে রংপুর। প্রথম কোয়ালিফায়ারে জিতলে সরাসরি ফাইনালে চলে যাবে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। হারলেও ফাইনালে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ থাকবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/পরাগ