খেলাধুলা

ওয়ানডে সিরিজেও পাকিস্তানকে হারাল বাংলাদেশ

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : সফরকারী পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ দলের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজও জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট দল। সোমবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৭ রানের জয় পায় কিশোর টাইগাররা। এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দল নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ দল নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪২ রান তুলতে সমর্থ হয়। এর আগে শনিবার একই ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৮৯ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ কিশোররা। টসে জিতে এদিন আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও বাংলাদেশ কিশোরদের শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ১১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় তারা। তবে দ্রুত বিপদ বাড়তে দেননি মফিজুল ইসলাম রবিন ও সাকিব শাহরিয়ার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে এ দু’জন যোগ করেন ৪৯ রান। ভালো খেলতে থাকা সাকিব শাহরিয়ার ২৪ রান করে প্রতিপক্ষের অধিনায়ক ওমর ইনামের স্ট্যাম্পের ফাঁদে ধরা দেন।  

এরপর দ্রুত আরেকটি উইকেট হারিয়ে আবারও বিপদের শঙ্কা জাগে স্বাগতিক শিবিরে। তবে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রবিন ও আইচ মোল্লা মিলে দলের বিপর্যয় সামাল দিয়ে দলকে ভালো সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন। এই জুটিতে যোগ হয় ৯৬ রান। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা তোলা রবিন অবশ্য আলিয়ানের বলে আউট হলে এ জুটি ভাঙে। ততক্ষণে নিজের নামের পাশে ৬৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস লিখে ফেলেছেন বিকেএসপি থেকে উঠে আসা রবিন। ১০২ বলে ৩টি বাউন্ডারি ও ২টি ওভার বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে। রবিন আউট হলেও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। এরপরে আরও দু’টি মাঝারি জুটিতে নির্ধারিত ওভার শেষে ২৫৯ রানের সম্মানজনক স্কোর পায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দল। এর মধ্যে অর্ধশতক তুলে নেন আইচ মোল্লা। ৫৬ বলে ২টি বাউন্ডারি ও ৩টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫২ রান করেন তিনি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে দারুণ অর্ধশত রান তুলে ম্যাচসেরা হওয়া রাব্বি এ ম্যাচেও ছুটছিলেন অর্ধশতরে পথেই। তবে তার আগেই শেষ হয়ে যায় ইনিংস। মাত্র ৩৪ বল খেলে ৩টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। ৩২ রান যোগ হয় অধিনায়ক রিহাদ খানের ব্যাট থেকে। পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে এদিন আসীর মুঘল ও আলিয়ান মাহমুদ ২টি করে উইকেট নেন।  

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ধীরে শুরু করে সফরকারীরা। ৫৪ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা একেবারে খারাপ হয়নি তাদের। এরপর দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ উইকেট জুটিতে সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখে সফরকারী দলের ব্যাটসম্যানরা। মূলত এই তিনটি জুটিতেই ম্যাচে ছিল তারা। তিনটি জুটিতেই তারা রান তুলেছে কিছুটা স্লথ গতিতে। ফলে শেষের দিকে এসে রানের সাথে পাল্লা দিয়ে আর পেরে ওঠেনি। উল্টো নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রান তুলতে সমর্থ হয় তারা। পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সামির সাকিবের শুরুতে দারুণ ব্যাটিংয়ে তোলা অর্ধশত রান ব্যার্থ হয়। ৮৭ বলে ৩টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৫ রান করেন তিনি। এছাড়া মোহাম্মদ ওয়াক্কাস ৩৮, অধিনায়ক ওমর ইনাম ৩৪, কাশিফ আলী ২৮ রান করেন। বলার মতো রান করতে পারেননি দলের আর কেউ। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও বোলিংয়ে দারুণ সফল মাহফুজুর রহমান রাব্বী। ৫০ রান খরচায় প্রতিপক্ষের ৩ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়ানে পাঠিয়েছেন তিনি। এছাড়া আশিকুর রহমান ২টি এবং মুশফিক হাসান, আজিজুল হাকিম ও আইচ মোল্লা একটি করে উইকেট নিয়েছেন। গত ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যাটে বলে জয়ের নায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বী। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতলেন তিনি। আগামী ১৫ মে একই ভেন্যুতে দুই দলের মধ্যে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মে ২০১৯/আমিনুল