খেলাধুলা

হোয়াইটওয়াশ এড়াল পাকিস্তান

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : আগেই দুই ম্যাচ জিতে টাইগার কিশোরদের স্বপ্ন ছিল সফরকারী পাকিস্তান কিশোরদের হোয়াইটওয়াশ করার। তবে পাকিস্তানের হাসিবুল্লাহ’র দারুণ ব্যাটিংয়ে সেটা আর হল না। বাংলাদেশ সফরে এসে অবশেষে শান্ত¦নার একটি জয় পেল পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে বুধবার তারা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট দলকে ২৯ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে। আগেই সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশের কিশোররা তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ জিতলো ২-১ ব্যবধানে। এদিন আগে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ ক্রিকেট দল হাসিবুল্লাহর অনবদ্য শতকে ভর করে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৭.৫ ওভারে থেমে যায় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ইনিংস।  

খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে টসে জিতে এদিন বাংলাদেশ অধিনায়ক প্রতিপক্ষকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। আগের রাতের বৃষ্টির সুফলটা সকালে নিতে চেয়েছিল স্বাগতিকরা। তবে সেই সুফলটা পায়নি বোলাররা। বরং শুরুতেই দারুণ জুটি গড়ে পাকিস্তানের অনূর্ধ্ব-১৬ দলের দুই ওপেনার। মূলত ১৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটিতেই বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে ফেলে সফরকারীরা। সামির সাকিবকে ৬৪ রানে ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম সাফল্য পান ইপন। ৮৪ বলে ৭টি বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে। সামির সাকিব আউট হয়ে গেলেও আরেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হাসিবুল্লাহ দারুণ ব্যাটিংয়ে রানের চাকা সচল রাখেন। একপ্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে সাফল্য পেতে থাকে টাইগার বোলাররা। বিশেষ করে বামহাতি লেগ স্পিনার শামছুল ইসলাম ইপন আর মাহফুজুর রহমান রাব্বী সফলতা পেতে থাকেন। আর অন্য প্রান্তে দৃঢ়তা দেখিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন পাকিস্তানের হাসিবুল্লাহ। দলীয় ২৫১ রানে তাকে আউট করে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফেরান মাহফুজুর রহমান রাব্বী। আউট হওয়ার আগে খেলেন ১২৯ রানের অনবদ্য ইনিংস। ১৪১ বলে ১১টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এরপর অবশ্য বেশিক্ষণ টেকেনি সফরকারীদের ইনিংস। শেষ পর্যন্ত শেষ পর্যন্ত ৪৭.৫ ওভারে ২৭৯ রান করে অলআউট হয় তারা। স্বাগতিক বোলরাদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন শামছুল ইসলাম ইপন। বা-হাতি এই লেগ স্পিনার ৪৫ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। আর ৩টি উইকেট নেন মাহফুজুর রহমান রাব্বী।  

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা একেবারে যাচ্ছেতাই হয়েছে বাংলাদেশ কিশোরদের। দলের খাতায় কোন রান যোগ না হতেই ফিরে যান রবিন। ৩৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে সেই চাপটা আরও বাড়ে স্বাগতিকদের। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে কিছুটা সে বিপর্যয় সামাল দেয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দল। সাকিব শাহরিয়ার ও রিহাদ খান মিলে ৮৫ রানের জুটিতে সম্ভাবনা জাগে কিছুটা। রিহাদ খানের আউটে এ জুটি ভাঙে। আউট হওয়ার আগে ৪৩ রান যোগ হয় তার ব্যাট থেকে। এরপর দু’তিনটি মাঝারি ইনিংসে মাঝে স্বাগতিকদের সম্ভাবনা দেখা দিলেও বাকি প্রায় পুরোটা সময় সফরকারীরা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়ে দাপট ধরে রাখে। আর তাতে ৪৭.৫ ওভারে ২৫০ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের কিশোরদের ইনিংস। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬০ রান আসে সাকিব শাহরিয়ারের ব্যাট থেকে। ৮২ বলে ৬টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি ছিল তার ইনিংসে। এছাড়া মাহফুজুর রহমান রাব্বী ৩৪ বলে ৪৬, অধিনায়ক রিহাদ খান ৪৩ রান করেন। পাকিস্তান কিশোরদের হয়ে অসীর মুঘল ও ফরহাদ খান ৩টি করে উইকেট নেন। অনবদ্য সেঞ্চুরির সুবাদে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হাসিবুল্লাহ জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। আর সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে ম্যাচসেরা হওয়ার রাব্বী এই ম্যাচেও সফলতা দেখিয়ে জিতে নিয়েছে সিরিজ সেরার পুরস্কার। এই ম্যাচে বল হাতে ৩টি উইকেট ও ব্যাট হাতে ৪৬ রান করেন। এর আগে দুই ম্যাচের লংগার ভার্সন সিরিজও বাংলাদেশের কিশোররা ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল।

   

রাইজিংবিডি/খুলনা/১৫ মে ২০১৯/রুবেল/আমিনুল