খেলাধুলা

দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার সালাম মুর্শেদীর

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের বর্তমান কমিটি তিন বছরেরও বেশী সময় পার করে ফেলেছে। আগামী বছর নির্বাচনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে সরব ক্রীড়া সংগঠকরা। বিশ্লেষণ শুরু করেছেন বর্তমান কমিটির বিভিন্ন কাজ নিয়ে। আগামী নির্বাচনে তাদের ভাবনা নিয়েও। এরই মধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে ফেডারেশনের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে।

ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন বর্তমান কমিটিরই সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি। ফাইন্যান্স কমিটির বিরুদ্ধে তোলা এই কমিটির চেয়ারম্যান বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী এমপি। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে সালাম মুর্শেদী বলেছেন, এটা প্রসিডিউর মিসটেক। যিনি অভিযোগ করেছেন, তিনি অসাংগঠনিক কথাবার্তা বলছেন।

বাফুফের গত তিন বছরের কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করছেন তিনি। আর বাফুফের পরবর্তী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী চাইলেই তিনি সভাপতি হতে চান বলে জানিয়েছেন। গতকাল রবিবার রাইজিং বিডির সাথে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

বাফুফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সালাম মুর্শেদী বলেন, দুর্নীতি এক জিনিস আর প্রসিডিউর এক জিনিস। দুর্নীতি হলো গিয়ে আপনি সম্পত্তি তসরুফ করেছেন। তিনি যে অভিযোগ করেছেন ওই কমিটির (ফিন্যান্স) একজন মেম্বার হিসেবে উনি এটা করতে পারেন না। আমার মনে হয়, ওনার বোঝায় কোন ভুল আছে। ফিন্যান্স কমিটি যখন অনুমোদন না দেয়, সেটা কিন্তু নির্বাহী কমিটিতে যায় না, উনি নিজেই একজন সদস্য হয়ে এই কথাটি যখন বলেছেন, আমার মনে হয় ওনার শব্দ চয়নে কোন ভুল করেছেন। নাহলে এই দুর্নীতির অভিযোগে তিনিও কিন্তু অভিযুক্ত হবেন। প্রমান হওয়ার আগে আপনি কাউকে অভিযুক্ত করতে পারেন না।

বিষয়টির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কোন খাতওয়ারি আয় নেই। আপনাকে পৃষ্ঠপোষকের উপর নির্ভর করতে হয়। উদাহরন স্বরূপ মোহামেডান ও আবাহনী লিমিটেড দু’দলই সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা এক কোটি টাকা করে পাবে, তাদের টাকা কিন্তু আমরা ওই বছর দিতে পারিনি। এই টাকাটা আমি চার বছর পরে দিয়েছি, যখন আমার টাকার সংকুলান হয়েছে। এই খরচটাকে তিনি অনিয়ম বলছেন। এটা তো অনিয়ম না।

   

আমি শুধু এইটুকুই বলবো, আমি যেখানে ফাইন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে আছি সে হিসেবে বলছি, উনি যে অভিযোগ করেছেন সেটা সঠিক না। যেহেতু উনি ওই কমিটির একজন সদস্য, একজন সদস্য ওই কমিটিতে থেকে এ ধরনের মন্তব্য করা বা বক্তব্য দেয়া সমীচিন নয়। উনি অসাংগাঠনিক কথাবার্তা বলেছেন।

কেন তাহলে অভিযোগ করছেন এরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। বলেন, নির্বাচন এসেছে, অনেকে হয়তো নির্বাচন করবেন, সে কারণে সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে মানুষের কাছে যেতে চায়। তাই আমি বলতে চাই, এটুকু আপনাদের কাছে কনফর্ম করতে চাই, ওই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যতটুকু করেছি, ‘মাইট বি এ প্রসিডিউর মিসটেক, বিকজ অফ মাই লিমিটেশন’। আমার খাতওয়ারি আয় নেই। যে কারণে আমাকে কিন্তু এই জিনিসটা করতে হয়েছে। আমরা যদি খরচগুলো সঠিক সময়ে এএফসিতে না পাঠাই তাহলে তাদের যে মাসিক নিয়ম মাফিক খরচের ব্্যাপার আছে সেটা কিন্তু বন্ধ হয়ে যাবে।

বাফুফের গত তিন বছরের সাফল্য নিয়েও সন্তুষ্ট বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি। আমরা তিন বছর পার করেছি, এই তিন বছরে আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিলো। আমি মনে করি সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়েছে। তারই ফলশ্রুতি এবং তারই সুফল হিসেবে আমরা আমাদের জাতীয় দল, বয়স ভিত্তিক দল, মেয়েদের দল এবং সব ইভেন্টে আমরা ভালো করেছি। আমি যে কমিটির দায়িত্বে আছি, পেশাদার লীগ, চ্যাম্পিয়নশীপ লীগ, ফেডারেশন কাপ, স্বাধীনতা কাপ আর সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৮ লীগ, সবগুলোই সফলভাবে শেষ হয়েছে।

পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে নিজের ভাবনাও জানিয়েছেন তিনি। ক্লাব পাড়া বা ফুটবল অঙ্গনে গুঞ্জন বাফুফে সভাপতি নির্বাচন করতে পারেন সালাম মুর্শেদী। এটা নিয়ে তিনি বলেন, আমি এখন অনেক কিছুর সাথেই জড়িত। খুলনার ভাষায় বলি, ‘আমি দলদারি করি, দলের নেতা হইলেও আমাদের সকলের নেতা হইলো প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। উনি যদি মনে করেন, কোন জায়গার কল্যানের জন্য বা কোন জায়গার ভালোর জন্য আমাকে দিবেন, আমি সেই দায়িত্ব নিতে বাধ্য থাকবো। তবে আমার এই ধরনের কোন আশা, আকাঙ্খা আপাতত নেই। ঢাকা/রুবেল/শামীম