খেলাধুলা

ভালোবাসায় ভাঙল মিলনমেলা

ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে গেল ইডেন গার্ডেন। কলকাতার বিখ্যাত এই মাঠেই শুক্রবার শুরু হয়েছে উপমহাদেশের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট। গোলাপি বলে খেলছে ভারত ও বাংলাদেশ।

টেস্টের প্রথম দিনটা যদিও ভালো যায়নি বাংলাদেশের। সফরকারীরা গুটিয়ে গেছে অল্প রানেই। ভারত রয়েছে শক্ত অবস্থানে। তবে মাঠের ক্রিকেটের বাইরে এই ম্যাচকে ঘিরে ছিল বিশেষ এক দিন।

টেস্ট শুরুর কয়েকদিন আগ থেকেই ইডেনে সাজ সাজ রব। আক্ষরিক অর্থেই ‘গোলাপি’ হয়ে ওঠে ইডেনের আশপাশ। আমন্ত্রণ জানানো হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে শুক্রবার সকালে কলকাতা পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিও তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

   

বিশেষ সোনার কয়েনে হয় টস। এরপর দুই দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে মাঠে পরিচিত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন তার সঙ্গে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান এবং কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।

এরপর ব্যান্ড শো প্রদর্শন করে কলকাতা পুলিশ। তারপর হয় জাতীয় সঙ্গীত। তবে সেটা রেকর্ড বাজিয়ে নয়। অর্কেস্ট্রার বাজনাতে বেজে ওঠে দুই দলের জাতীয় সঙ্গীত।

এরপর ইডেন গার্ডেনের বিখ্যাত ঘণ্টা বাজিয়ে কলকাতা টেস্ট উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যাট-বলের মাঠের লড়াই শুরু হয়ে যায় এরপরই।

   

২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা ক্রিকেটারদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এদিন। তাদের দেওয়া হয় সংবর্ধনা, দেওয়া হয় ক্রেস্ট। উপমহাদেশের প্রথম গোলাপি বলের টেস্টে অংশ নেওয়া ক্রিকেটারদেরও দেওয়া হয় ক্রেস্ট।

ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন ভারতের সাবেক ক্রিকেট তারকারাও। লাঞ্চ বিরতির সময় কপিল দেব, মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, শচীন টেন্ডুলকার, ভিভিএস লক্ষ্মণ, রাহুল দ্রাবিড়দের নিয়ে একটি গাড়ি মাঠ প্রদক্ষিণ করে, যাকে বলা হয় ‘ল্যাপ অব অনার’।

বিরতির সময় মাঠের ভেতরে টেন্ডুলকার, অনিল কুম্বলে, লক্ষ্মণ এবং হরভজন সিং মিলে করেন বিশেষ টক শো। যেখানে তাদের খেলোয়াড়ী জীবনের মধুর স্মৃতি রোমন্থন করতে দেখা যায়।

   

উৎসব হয়েছে দিনের খেলা শেষেও। ক্রিকেটারসহ দর্শকদের বিমোহিত করতে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লা ও কলকাতার শিল্পী জিৎ গাঙ্গুলি। তাদের গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় প্রথম দিনের অনুষ্ঠান, ভাঙে মিলনমেলা।

এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে মূলত সৌরভ গাঙ্গুলির কারণে। সৌরভ বিসিসিআইয়ের সভাপতি হওয়ার পরই দিবারাত্রির টেস্ট আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান ভারতীয় ক্রিকেটাররা। প্রস্তাব পেয়ে রাজি হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও। এরপর হয়ে গেল ইতিহাস।

 

ঢাকা/পরাগ